যশোরে করোনা প্রতিরোধে একসাথে কাজ করবেন শীর্ষ জনপ্রতিনিধিরা

Share Now..

যশোর জেলা প্রতিনিধিঃ

চলমান করোনা পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ, করোনা রোগীদের চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং লকডাউনের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের পাশে দাঁড়াতে এক সাথে কাজ করার বার্তা দিয়েছেন যশোরের শীর্ষ জনপ্রতিনিধিরা। করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটি’র সভা শেষে সাংবাদিকদের সামনে এ ধরণের কথা বলেন তারা।একই সাথে তিনি করোনা সংক্রমণে আক্রান্তদের সুচিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য যা যা দরকার তা দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা করতে যশোর স্বাস্থ্য বিভাগকে নির্দেশ প্রদান করেছেন।

শনিবার রাতে স্থানীয় সার্কিট হাউজে ‘করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটি’র সভা শেষে সাংবাদিকদের সামনে একই সুরে এই বার্তা দেন জনপ্রতিনিধিরা।

সন্ধ্যা সাতটায় যশোর জেলা প্রশাসক ও করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মো. তমিজুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে সভা শুরু হয়। রাত নয়টার দিকে সংবাদকর্মীদের আহ্বান করা হয় সেখানে।
সভায় যশোরে করোনা পরিস্থিতি এবং এই সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশাসনের কার্যক্রম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। উন্নত সেবা প্রদানে কী কী সংকট রয়েছে, তাও আলোচনায় উঠে আসে।

জনপ্রতিনিধিরা বলেন, তারা সবাই মিলে এই সংকট নিরসনে উদ্যোগী হবেন। যশোরের ধনাঢ্য ব্যক্তিদের শরণাপন্ন হয়ে চিকিৎসা সরঞ্জাম সংগ্রহ করবেন।
সভায় উপস্থিত যশোর-৫ আসনের সংসদ সদস্য এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য তার মন্ত্রণালয়ে টাকা চেয়ে একটি আবেদন করার জন্য যশোরের স্বাস্থ্য প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন। এলজিআরডি মিনিস্ট্রি থেকে থোক বরাদ্দ পেলে তা যশোরের চিকিৎসার উন্নয়নে খরচ করা হবে। তার আগে স্থানীয়ভাবে চেষ্টা করা হবে টাকা সংগ্রহের। প
সভা শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য এবং জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার এমপি।

শাহীন চাকলাদার বলেন, ‘এখন আমরা যশোরের সব জনপ্রতিনিধি একাট্টা। দেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছিল, করোনা তা থামিয়ে দিয়েছে। আমাদের যে করেই হোক এই পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। এর জন্য যা করার দরকার আমরা তা প্রশাসনের সহযোগিতায় করবো।’এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা ছাড়াও তৃণমূল পর্যায়ের দলীয় কর্মীরাও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। এই প্রক্রিয়া আরো জোরদার করা হবে।

প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, ‘আজকের সভা থেকে যশোরবাসীকে আমরা একটি মেসেজ দিতে চাই। তা হলো- যেকোন দুর্যোগ মোকাবেলায় যশোরের সংসদ সদস্যবৃন্দ মানুষের পাশে থেকে কাজ করেছেন, ভবিষ্যতেও করবে। যশোরের সব জনপ্রতিনিধি একযোগে কাজ করছেন; যা সাম্প্রতিককালে দেখা যায়নি। আমরা মনে করছি, শুধু করোনা পরিস্থিতি থেকে উত্তরণই নয়, জনপ্রতিনিধিরা একাট্টা থাকলে যশোরের উন্নয়নে বৈপ্লবিক অগ্রগতি হবে।’

এই ঐক্য বজায় থাকবে বলে স্বপন ভট্টাচার্য এবং শাহীন চাকলাদার- দুইজনই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

যশোর জেলায় ছয়টি সংসদীয় আসন। যশোর সদর আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ ইংল্যান্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার ব্যাপারে তার সাথেও নিয়মিত কথা হচ্ছে বলে জানান স্বপন ভট্টাচার্য্য। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্যের আগ্রহে এমপিরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন।

সভা শেষে স্বপন ভট্টাচার্য্য বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ পর পর তিন টার্ম রাষ্ট্রক্ষমতায় রয়েছে। এই সময়কালে যশোরে বিভিন্ন সময় বেশ কয়েকজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। কিন্তু কোন্দলের কারণে জনপ্রতিনিধিরা ঐক্যবদ্ধভাবে বসতে পারেননি। ফলে এই জেলার উন্নয়ন সুপরিকল্পিতভাবে হয়নি। এখন অবস্থার পরিবর্তন হবে বলে আশাবাদী এই প্রতিমন্ত্রী।

জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন যশোর-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন, যশোর-২ আসনের সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) ডাক্তার নাসির উদ্দিন, যশোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য রণজিৎকুমার রায়, যশোর-৬ আসনের সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদার, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল, পৌরসভার মেয়র হায়দার গণি খান পলাশ উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন, , ২৫০ শয্যা যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার আক্তারুজ্জামান, মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর শাহিদুর রহমান, ডিডিএলজি হুসাইন শওকত, স্বাচিপের সভাপতি ডাক্তার কামরুল ইসলাম বেনু, অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট কাজী সায়েমুজ্জামান, ডাক্তার এএইচএম আব্দুর রউফ প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *