যশোরে বিএনপির শীর্ষ চার নেতার বাসভবনে মধ্যরাতে সন্ত্রাসী হামলা
এস আর নিরবঃ
যশোরে বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ জেলা সিনিয়র নেতৃবৃন্দের বাসভবনে সিরিজ হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। শুক্রবার দিবাগত রাতে সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান খানের বাসভবনে ভাংচুর করে।
হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত বাসভবনের সিটি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, হামলাকারীদের মুখে কাপড় বাঁধা ছিল। যাদের মধ্যে উঠতি বয়সী সন্ত্রাসী কিংবা কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরাও ছিল। রাত দেড় টার পর থেকে শুরু হওয়া এই সন্ত্রাসী হামলা শেষ হয় ২টা ২০ মিনিটে। সন্ত্রাসীরা ১টি সিলভার কালারের মাইক্রোবাস, ৪ থেকে ৫টি প্রাইভেটকার এবং ১০টির অধিক মোটরসাইকেল ব্যবহার করে। যার মধ্যে ১টি সাদা এবং ১টি কালো কালারের প্রাইভেটকার ছিল।
বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত ফেসবুক লাইভে এসে অভিযোগ করেন, সন্ত্রাসীরা প্রথমে রাত দেড়টার পর ঘোপ পিলু খান সড়কস্থ আমার বাসভবনে হামলা করে। গেটের বাইরে থেকে সন্ত্রাসীরা বৃষ্টির পানির মত ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে বাসার জানালার গ্লাসসহ বাসভবনে ব্যাপক ভাংচুর করে। গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা চালায়। পরে ব্যর্থ হয়ে সন্ত্রাসীর অনবরত ইটপাটকেলের সাথে কাঁচের বোতল ছুঁড়তে থাকে।
তাদের ছোড়া ইট পাটকেল ও ভাঙা কাচের বোতলের টুকরায় বাসভবনের আঙিনা ভরে যায়। তাদের ছোড়া ইট পাটকেলের আঘাতে পাশের বাড়ির বেলকুনিতে লাগানো এসি ভেঙে যায়। বেশ কিছু সময় ধরে সন্ত্রাসীর তান্ডব চালিয়ে উপশহর বি-ব্লকস্থ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, উপশহর ডি ব্লকস্থ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান খানের বাসভবনে গিয়ে হামলা চালায়। তার বাসার সামনে রাখা মাইক্রোবাস ভাংচুর করে। গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশেরে চেষ্টা চালায়। সন্ত্রাসীদের ছোড়া ইট পাটকেলে বহুতল ভবনের সামনের অংশে লাগানো বেলকুনিসহ জানালার কাঁচ ভেঙে চুরমার হয়। সবশেষে সন্ত্রাসীরা ধর্মতলা মোড়স্থ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকনের বাস ভবনে গিয়ে হামলা চালায়। তার বাসভবনেও সন্ত্রাসীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে জানালার কাচ ভাংচুর করে। বৈদ্যুতিক মিটার বক্স ভেঙে ফেলে। বাসার গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা চালায়। সন্ত্রাসীদের এমন তা-বে বাসার মধ্যে থাকা শিশু থেকে শুরু করে মহিলারা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে।
হামলার প্রতিবাদে আজ সকালে নগর বিএনপির ৩ নম্বর ওয়ার্ড শাখার নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করেন। হামলার বিষয়ে বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, বিএনপি যখনই দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, আইনের শাসন, মানবাধিকার, ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠাসহ জনগণের সকল ন্যায্য দাবি এবং অধিকার আদায়ের জন্য রাজপথে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করে। তখনই সরকার দলীয় সন্ত্রাসীরা জনতার আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য এই ধরণের হামলা চালিয়েছে। ইতিপূর্বেও সন্ত্রাসীরা একইভাবে দলের নেতাকর্মীদের বাসভবনে হামলা চালায়। এভাবে রাতের আঁধারে সন্ত্রাসী হামলা করে লক্ষ্য থেকে বিচ্যুতি করা যাবে না। যতদিন জনগণের অধিকার আদায় না হবে, ততদিন পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলতে থাকবে।
এ বিষয়ে, যশোর পুলিশের মুখপাত্র ডিবি পুলিশের ওসি রুপন কুমার সরকার বলেন, তাদের কাছে কেউ এ ধরনের অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।