রংপুরে তরুণকে বাঁচাতে গিয়ে এসিডে ঝলসে গেলেন ২ নারী
রংপুরের পীরগঞ্জে মোবাইল ফোন নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে হামলাকারীদের ভয়ে আশ্রয় নেওয়া এক তরুণকে রক্ষা করতে গিয়ে এসিডে ঝলসে গেছেন ২ নারী। তাদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে পীরগঞ্জের চতরা কলেজ পাড়ার সুজন শেখের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। দগ্ধরা হলেন সুজন শেখের স্ত্রী কহিনুর বেগম (৩০) এবং ভাড়াটিয়া মৌসুমি আখতার (২৩)। দগ্ধ কহিনুর বেগম বলেন, আমার ভাতিজা নাজমুল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আমাদের বাড়িতে আসে। আরেক ভাতিজা রায়হানের সঙ্গে তার মোবাইল ফোন নিয়ে ঝামেলা ছিল। রায়হান আমার বাড়িতে নাজমুলের উপস্থিতি টের পেয়ে রবিউল, অক্ষয়, খোরশেদসহ কয়েকজনকে ডেকে আনে। এ সময় আমি তাদেরকে চলে যেতে বললে তারা নাজমুলকে ধরে মারপিট শুরু করে। তখন আমি ও মৌসুমি নাজমুলকে বাঁচানোর জন্য জাপটে ধরি। তখন তারা একটা বোতল ছুড়ে মারে। এটি গায়ে পড়া মাত্রই শরীর পুড়ে যেতে থাকে। আমার ডান পা, বাম হাত, গলা ও পিঠ পুড়ে গেছে। আমার স্বামী পীরগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তারা ভর্তি নেয়নি। পরে রংপুর মেডিকেলে ভর্তি করা হলে জানা যায় বোতলে এসিড ছিল।
অপর দগ্ধ মৌসুমি আখতার বলেন, নাজমুল আমার দেবর হয়। সে আমাদের বাসায় ঢুকেছে এটা কোনোভাবে টের পেয়েছিল রায়হান। পরে তারা নাজমুলকে মারতে এলে আমরা রক্ষা করতে যাই। তখন আমাদের ওপর এসিড ছুড়ে মারে। এতে আমার ডান হাত পুড়ে গেছে। দগ্ধ কহিনুর বেগমের স্বামী সুজন শেখ জানান, আমার স্ত্রীর সারা শরীর পুড়ে গেছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
এ ঘটনায় নাজমুল ইসলাম জানান, মোবাইল ফোন নিয়ে আমার ও রায়হানের মধ্যে একটা দ্বন্দ্ব ছিল। এর জেরে তারা আমার ওপর হামলা চালায়। আমার চাচি ও ভাবি আমাকে তাদের হাত থেকে বাঁচাতে এলে তাদের ওপর এসিড ছুড়ে মারে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
রংপুর জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিন জানান, হামলাকারীরা এসিড নাকি অন্য কোনো দাহ্য পদার্থে দগ্ধ হয়েছে তা নির্ণয়ের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় অপরাধীদের চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।