রৌমারীতে বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব
কুড়িগ্রামের রৌমারীতে শীতজনিত কারণে হঠাৎ করেই বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব। গত একসপ্তাহে অর্ধশতাধিক ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তবে আক্রান্তদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু। দেখা দিয়েছে ওষুধ সংকটও।
বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে জানা যায়, শীতজনিত কারণে হঠাৎ করেই বেড়েছে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। গত ৫ থেকে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত একসপ্তাহে অর্ধশতাধিক ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। এর মধ্যে ৪০ শিশু ও ১০জন বয়স্ক মানুষ। ১০ মাস বয়সের বিল্লাহ, ১০ মাস বয়সের মুদাছির, ৪ মাস বয়সের রায়হান, ৪ মাস বয়সের মারিয়া, ২ বছর বয়সের নাহিয়ান, ১৪ মাস বয়সের জান্নাতি, ৯ মাস বয়সের তাবাচ্ছুম, ১১ মাস বয়সের নজরুল, ৩ বছরের রাতুল, ১৮ মাস বয়সের শোভা, ৭ মাস বয়সের সিনান, ১৩ মাস বয়সের নাজমুনসহ অনেককে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
রোগীর অভিভাবকদের অভিযোগ, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে দেওয়া হয় শুধুমাত্র কলেরা স্যালাইন। বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে অন্য সব ওষুধ। এতে বিপাকে পড়েছেন ডায়রিয়া রোগীর অভিভাবকরা।
রৌমারী বাজার এলাকার মারুফা আক্তার বলেন, বুধবার সকালে তার ৭ মাস বয়সের সন্তান সিনান ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়। পরে বিকালে তাকে ভর্তি করেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। তিনি বলেন, ভর্তির সময় শুধু কলেরার স্যালাইন দিয়েছেন চিকিৎসক। কিন্তু অন্য সব ওষুধ বাইরের দোকান থেকে কিনে আনতে হয়েছে। এ ছাড়াও প্রয়োজনে নার্সদের ডাকা হলে তারা বিভিন্ন তালবাহানা করেন।
মঙ্গলবার বিকালে ডায়রিয়া আক্রান্ত ১৮ মাস বয়সের শোভাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন মা সালমা আক্তার। তার বাড়ি বন্দবেড় ইউনিয়নের বাইটকামারী এলাকায়। তিনি বলেন, দুদিন ধরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অসুস্থ সন্তানকে নিয়ে রয়েছেন তিনি। দুদিন দুটি কলেরার স্যালাইন দিয়েছেন চিকিৎসকরা। অন্য সব ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হয়েছে তাকে।
বন্দবেড় ইউনিয়নের খঞ্জনমারা এলাকায় রাহেলা খাতুন বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে ডায়রিয়া আক্রান্ত ৩ বছরের সন্তান রাতুলকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন তিনি। এ সময় একটি কলেরার স্যালাইন দিয়েছেন চিকিৎসকরা। প্রয়োজনীয় সব ওষুধ বাইরে থেকে কিনে আনতে হয়েছে তাকে।
রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, শীতজনিত কারণে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্ক মানুষ। শুধুমাত্র কলেরা স্যালাইন ছাড়া সব ওষুধ বাইরে থেকে কিনে আনতে হচ্ছে রোগীদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কলেরা স্যালাইন দিয়েই রোগী সুস্থ্য হচ্ছে। এ কারণে অন্য ওষুধ দিচ্ছেন না চিকিৎসকরা। তবে অন্য ওষুধ সরবরাহ রয়েছে বলেও জানান তিনি।