‘লামিনই আশীর্বাদ করেছিলেন মেসিকে!’

Share Now..

বর্তমান ফুটবলে সবচেয়ে আলোচিত নাম লামিন ইয়ামাল। অল্প বয়সেই স্প্যানিশ এই উইঙ্গার ইউরোয় ছড়ি ঘুরাচ্ছেন। তার সামনে বড় বড় দলগুলো প্রায় অসহায় হয়ে পড়ে। এতেই স্পেনও জয়ের পর জয় তুলে নিয়ে ইউরোতে দুই মৌসুম পর ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে। আর মৌসুম চলাকালীনই ভাইরাল হয়েছে ১৭ বছর আগের একটি ছবি। যেখানে কাতার বিশ্বকাপ জয়ী ও সর্বোচ্চ আটবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী মেসির কোলে লামিন ইয়ামাল। 

যদিও যখনকার ছবি মেসি সে সময় লামিনের মতো উদীয়মান তরুণ খেলোয়াড় ছিল। ঐ ছবি ছড়িয়ে পড়ার পরই বলাবলি হচ্ছে ছোটবেলায় মেসির ‘ছোঁয়া’ পেয়েই স্বপ্নের ফুটবল খেলছে ইয়ামাল। যদিও লামিনের বাবা বলছেন ভিন্ন কথা। সম্প্রতি মজা করে তিনি বলেছেন, তরুণ মেসি লামিনের স্পর্শেই এত অর্জন করেছেন।

আগামীকাল রাতে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে মুখোমুখি হবে গেল আসরের রানার্স আপ দল ইংল্যান্ড ও স্পেন। এ ম্যাচে মাঠে নামার মধ্য দিয়ে সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে উয়েফা ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ বা ফিফা বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলার রেকর্ড গড়বেন লামিন। এছাড়া ফাইনালের আগে আজ লামিন ১৭ বছরে পা রাখবেন। তবে হয়তো বিশেষ এ দিন পালন করবেন শিরোপা জয়ের পরই। চলমান ইউরোতে দারুণ ছন্দে রয়েছেন ইয়ামাল। এখন পর্যন্ত এক গোল করার পাশাপাশি তিনটি গোলে সহায়তা করেছেন তিনি। তাতে প্রতিপক্ষকে আলাদা করেই ম্যাচের আগে ভাবতে হয় এই তরুণ উইঙ্গারকে নিয়ে। ফাইনালেও তিনি থাকবেন সবার চোখে চোখে।

এদিকে ছেলের কৃতিত্বে গর্বিত লামিনের বাবা মৌনির নাসরাউই। স্পেন ফাইনালে ওঠার পর স্প্যানিশ এক গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘আমার ছেলের জন্মের সময় থেকেই আমি জানতাম যে, সে তারকা হতে যাচ্ছে। কারণ একজন বাবা আগে থেকেই সন্তানের ভবিষ্যৎ অনুধাবন করতে পারে এবং যে কোনো বাবাই চান যেন তার সন্তান সেরা হোক।’

এ সময় ইয়ামালের ছোটবেলায় মেসির সঙ্গে ভাইরাল হওয়া ছবি নিয়েও কথা বলেন তিনি। ইয়ামালের জন্ম ২০০৭ সালে। আর ছবিটি ঐ বছরেরই। লিওনেল মেসি তখন ২০ বছরের তরুণ। আর লামিনের বয়স কেবল ছয় মাস। মেসির তখন লম্বা চুল ছিল। জানা গেছে ২০০৭ সালে বার্সেলোনার ন্যু ক্যাম্পে একটি চ্যারিটি ক্যালেন্ডারের জন্য ছবি তুলতে গিয়েছিলেন বার্তা সংস্থা এপির আলোকচিত্রী হোয়ান মনফোর্ত। লিওনেল মেসির সঙ্গে একটি ছবির পরিকল্পনা তার। সবাই জানতেন, মেসি ফুটবল জগতের রাজত্ব করবে। 

কিন্তু ঐ ছোট্ট শিশুটিও যে ভবিষ্যতের তারকা হবে তা তার কল্পনাতেও ছিল না হয়তো কারও। সম্প্রতি এই ছবিটি সামনে আনেন ইয়ামালের বাবাই। সপ্তাহ খানেক আগে মেসির সঙ্গে ইয়ামালের ছবিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপলোড দিয়ে ক্যাপশনে লেখেন ‘দ্য বিগিনিং অব টু লেজেন্ডস’ তারপরই ছড়িয়ে পরে এই ছবিগুলো। অনেক ফুটবল ভক্তের মতে ছোটবেলায় মেসির ছোঁয়া পেয়েই লামিন বর্তমানে ফুটবলের বিস্ময় বালক নিজের ছাপ রাখতে পারছেন।

তবে ইয়ামালার বাবা এটা মানছেন না উলটো মজা করে বলেন, ‘মেসির থেকে ইয়ামাল আশীর্বাদ পেয়েছে? নাকি উলটোটা? ইয়ামালের থেকে আশীর্বাদ পেয়েছে মেসি। আমার কাছে, আমার ছেলেই সবচেয়ে সেরা। শুধু ফুটবলে নয়, ভালোবাসা, ব্যক্তিগতভাবে এবং সবকিছুতে। তিনি একটি শিশু এবং ঈশ্বরের কাছ থেকে একটি আশীর্বাদ আছে, যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং মূল্যবান হওয়া আবশ্যক।’ 

এ সময় ছবিগুলো নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপলোডের কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘ছবিটি জীবনের যাত্রার কথা মনে করিয়ে দেয়।’ সেই সঙ্গে তিনি ধন্যবাদও জানিয়েছেন লা মাসিয়া আর স্পেনের ফুটবল ফেডারেশনকে। তিনি জানান, ‘লামিনে সবার থেকে আলাদা। ও অনেকের আগেই পরিণত হয়ে গিয়েছে।’ বলে রাখা ভালো যে মেসির যাত্রাও শুরু হয়েছিল লা মাসিয়া থেকেই। সেখান থেকেই মেসি আজ ফুটবলের কিংবদন্তি। লামিনও হাঁটছেন সেই পথেই, যদি নিজের ছন্দ ধরে রাখতে পারেন তাহলে ক্যারিয়ারের শেষ অবধি লামিনও বনে যেতে পারেন ফুটবলের কিংবদন্তিদের একজন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *