শতবর্ষের পুরনো শৈলকুপার লাঙ্গলবাঁধ বাজার নানা সমস্যায় জর্জড়িত, বিপাকে ব্যবসায়ীরা
শৈলকুপা প্রতিনিধি ঃ
ঝিনাইদহ ও মাগুরার গড়াই নদীর তীরে শতবর্ষের পুরনো ঐতিহ্যবাহী ও জনপ্রিয় লাঙ্গলবাঁধ বাজার। শৈলকুপা উপজেলা শহর থেকে এর দুরত্ব ১৫ কি. মি,। আশ- পাশের কয়েকটি জেলার আঞ্চলিক বাজারের মধ্যে এটি অন্যতম বৃহৎ বাজার। বাজারের বেশীর ভাগ অংশ শৈলকুপা উপজেলা ও কিছু অংশ শ্রীপুর উপজেলার মধ্যে পড়েছে।
ঝিনাইদহের শৈলকুপা, মাগুরার শ্রীপুর ও রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার গড়াই নদীর সংযোগস্থলে এই বাজারটি অবস্থিত।বাজারটি অবকাঠামোগত সমস্যাসহ বেশ কিছু সমস্যায় জর্জড়িত এর মধ্যে প্রধান সমস্যা বাজারের প্রবেশ পথটি সংকীর্ণ।আবার ট’ বাজারটিতে সরকারী ব্যবস্থাপনায় পর্যাপ্ত হাট চান্দিনা না থাকায় বেশ বেগ পেতে হয় ব্যবসায়ীদের। বর্ষাকালে বৃষ্টিতে ভিজে ও কর্দমাক্ত জায়গায় ব্যবসায়ীদের বেচাকেনা করতে দেখা যায়।বাজারের ভেতরে ট্রাক বা ভারী যানবাহনে পণ্য পরিবহন খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। বাজারের মধ্যে একটি যানবাহন ঢ়ুকলে অন্য যানবাহন ঢ়োকা দায় হয়ে যায়।এছাড়াও পানি নিষ্কাশনের জন্য কোন পরিকল্পিত ড্রেন নেই। বাজারটি বর্ষাকালে ডুবে থাকে। ফলে রাস্তার কোথায় ড্রেন রয়েছে, তা বোঝার উপায় থাকে না বিধায় প্রায়ই পণ্যবাহী ট্রাক ডে্েরন পড়ে যায় আর ব্যাপক ক্ষতির সমুক্ষীন হয় ব্যবসায়ীরা।
এখানে ঝিনাইদহ সদর, কুষ্টিয়া সদর, কুমারখালী, খোকসা, রাজবাড়ীর পাংশা, মাগুরা, যশোর থেকে ব্যবসায়ীরা আসে পণ্য কেনাবেচা করতে এমনকি ঢাকা থেকে ব্যবসায়ীরা আসে পশু ক্রয় করতে। সাধারণত ঝিনাইদহ , মাগুরা ও রাজবাড়ি জেলার লোকজন এখানে প্রতিনিয়ত ব্যবসার সাথে জড়িত।
এখানে বিশাল গরু ,মহিষ, ছাগল এর বাজার রয়েছে। আবার পাট, ধান, গম, পেঁয়াজ প্রভৃতি কৃষিপণ্য বিক্রি হয়। এছাড়াও রড, ঢেউটিন, সিমেন্ট পাইকারি ও খুচরা বেচাকেনার জন্য অন্যতম এ বাজার। মৌসুমে এবাজারে ৮ থেকে ১০ হাজার মণ পাট, ৮থেকে ১০ হাজার মণ পেঁয়াজ বিক্রি হয়। মৌসুম ছাড়াও বছরের অন্য সময়ে প্রয়োজনীয় পণ্য পাওয়া যায়। বাজারটিতে কাপড়ের ব্যবসাও চলছে প্রায় ৫০ বছর ধরে বর্তমানে রবি ও বৃহস্পতিবার নিয়মিত বড় বাজার বসে । এই দ’ুদিন জমজমাট হয়ে উঠে পুরো বাজার।এখানে সপ্তাহে ১০ থেকে ১২ কোটি টাকার মতো লেনদেন হয় ।
লাঙ্গলবাধ বাজারের সার ব্যবসায়ী ইদ্রিস বলেন, আমাদের বাজারে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ১১০০ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ২৫ ভাগ দোকানই পাইকারি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এছাড়াও বিভিন্ন জায়গা থেকে খুচরা- পাইকারী ব্যবসায়ীরা আসে মালামাল ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য। তাই জরুরী ভিত্তিতে বাজারে অবকাঠামোসহ বিশেষ করে রাস্তা , ড্রেন সংস্কার প্রয়োজন।
লাঙ্গলবাধ বাজার মালিক সমিতির আহ্বায়ক মতিয়ার রহমান বলেন, সরকার এ বাজার থেকে প্রতিবছর অর্ধকোটি টাকার বেশী রাজস্ব পেয়ে থাকে। তবে অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পেলে সরকারের অনেক রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে।
এব্যাপারে শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী অফিসার কানিজ ফাতেমা লিজা বলেন, বাজারটিতে তিনটি উপজেলার অংশ থাকায় এককভাবে কোন কাজ করতে গেলে সমস্যায় পড়তে হয় তার পরেও অবকাঠামোগত সমস্যা কাটিয়ে সরকারী রাজস্ব কিভাবে বাড়ানো যায় সেদিকে দৃষ্টি থাকবে।