শান্তি আসবে না জেনেও দেওয়া হয়েছিল যে নোবেল শান্তি পুরস্কার
ভিয়েতনামে যুদ্ধের ময়দান থেকে মার্কিন বাহিনীকে ফিরিয়ে আনায় ভূমিকা রেখেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার। ভিয়েতনামের জেনারেল, কূটনীতিক, রাজনীতিবিদ লে ডাক থো-কে সঙ্গে নিয়ে ১৯৭৩ সালে প্যারিস শান্তি চুক্তি করেছিলেন তিনি। এই চুক্তির জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হন তারা। থো পুরস্কার নিতে অস্বীকৃতি জানালেও কিসিঞ্জার তা ঘরে নিয়েছিলেন। বিতর্ক ওঠায় পরে আবার পুরস্কার ফিরিয়েও দিতে চেয়েছিলেন তিনি। সেই পুরস্কার নিয়ে নতুন তথ্য প্রকাশিত হয়েছে এবার।নোবেল পুরস্কার মনোনয়ন সংক্রান্ত তথ্য ৫০ বছর গোপন রাখার নিয়ম রয়েছে। এই সময় পার হয়ে যাওয়ায় সম্প্রতি এক আবেদনে সাড়া দিয়েছে নোবেল কমিটি। হেনরি কিসিঞ্জারকে মনোনয়ন দেওয়া সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করেছে তারা।জানা গেছে, কিসিঞ্জারের প্রচেষ্টা ‘শান্তি আনতে পারবে না’ এ রকম আশঙ্কা সম্পর্কে পুরোপুরি অবগত থাকার পরও পুরস্কারের জন্য তাকে বাছাই করা করা হয়। শুধু তাই নয়, লে ডাক থো সম্পর্কে বিশদ কিছু জানতেন না তার নাম প্রস্তাবকারীরা।
প্যারিস চুক্তির জন্য শুধু কিসিঞ্জারকে পুরস্কার দেওয়াটা যথার্থ মনে হয় না, এই চিন্তা করেই তারা থো এর নামও জুড়ে দেন। প্যারিস চুক্তিতে হ্যানয়ের (তৎকালীন দক্ষিণ ভিয়েতনামের রাজধানী) প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন থো। ১৯৫৫ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত চলে ভিয়েতনাম যুদ্ধ।
সোভিয়েত রাশিয়া ও চীন সমর্থিত কমিউনিস্টপন্থি উত্তর ভিয়েতনাম ও যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত দক্ষিণ ভিয়েতনামের মধ্যে দুই দশক ধরে চলে এই রক্তক্ষয়ী সংঘাত। শুরু থেকেই স্নায়ু যুদ্ধের অংশীদার হলেও যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে ষাটের দশকে।
মার্কিন সেনাদের ব্যাপক প্রাণহানি ও অর্থনীতির ওপর চাপের কারণে সত্তরের দশকের শুরুতেই মার্কিন জনগণের মধ্যে এই যুদ্ধ বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ প্রবল হয়ে ওঠে। মনোবল ভেঙে যেতে থাকে মার্কিন সেনাদের। সব মিলিয়ে ভিয়েতনাম থেকে পিছিয়ে আসাই ছিল যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একমাত্র উপায়।
হেনরি কিসিঞ্জার সেই কাজটাই করিয়েছিলেন। তবে তার এই প্রচেষ্টার কারণে ভিয়েতনামে শান্তি আসেনি। অশান্তির যবনিকা ঘটে ১৯৭৫ সালে, যখন উত্তর ভিয়েতনামের বাহিনী দক্ষিণ ভিয়েতনামের রাজধানী সাইগন দখল করে নেয়।
Power up your gaming—unlock exclusive features today Lucky Cola