শিং নেই তবু নাম তার সিংহ!
আসিফ কাজল,ঝিনাইদহঃ
তিনি কলেজের কোন বৈধ শিক্ষক নন। তার কোন বেতন ভাতা নেই। নেই নিয়োগের বৈধতা। তারপরও কলেজে এসে অধ্যক্ষের চেয়ার দখল করে বসেন। নিজে ‘ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ’ সেজে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উপর ছড়ি ঘুরান। এই স্বঘোষিত শিক্ষক ও ভুয়া অধ্যক্ষের নাম সুব্রত কুমার নন্দি। তিনি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ সরকারী মাহতাব উদ্দীন কলেজের নন এমপিও ভুক্ত ৬১ নাম্বারধারী শিক্ষক। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, সুব্রত কুমার নন্দি কালীগঞ্জ শহীদ নুর আলী কলেজে চাকরী করতেন। ওই কলেজ থেকে ২০১৯ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারী বেতন ভাতাও গ্রহন করেছেন। কালীগঞ্জ মাহতাব উদ্দীন কলেজ সরকারী করণের ঘোষনায় ফন্দি আঁটেন সুব্রত নন্দি। তিনি ব্যাকডেটে ভুয়া কাগজ পত্র তৈরী করে ২০১৫ সালে নিজেকে নিয়োগ দেখান। কলেজটি সরকারী করণ হয় ২০১৮ সালের ৮ আগষ্ট। শহীদ নুর আলী কলেজ থেকে ২০১৯ সাল থেকে বেতন ভাতা গ্রহনকারী সুব্রত নন্দি কি ভাবে ২০১৫ সালে নিয়োগ পান এটা তার গলার কাঁটা হয়ে দাড়ায়। মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের একটি সুত্রে জানা গেছে, আত্তীকরণ বিধিমালা ২০২১ এর ৯ ধারা মোতাবেক ও মাউশির যাচাই বাছাই প্রতিবেদন অনুযায়ী সুব্রত কুমার নন্দি সরকারী মাহতাব উদ্দীন কলেজের বৈধ কোন শিক্ষক নয়। অথচ তিনি অবৈধ দখলদার হিসেবে কলেজের অধ্যক্ষের চেয়ার দখল করে আছেন। এদিকে সুব্রত নন্দির বিরুদ্ধে চাদাঁবাজী, কলেজের অর্থ তছরুপ, পদসোপন বর্হিভুত সেচ্ছাচারিতাসহ ৬টি কারণ উল্লেখ করে কারণ দর্শানোর চিঠি দিয়েছেন কলেজের অধ্যক্ষ ড. মাহবুবুর রহমান। ওই কারণ দর্শানোর চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে সুব্রত নন্দি ইসলামের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক সেলিনা আক্তার ও সুবর্না রানীর কাছ থেকে চাঁদাবাজী করেন। কলেজের অর্থ তছরুপেরও সুনিদ্দিষ্ট অভিযোগ কারণ দর্শানোর নোটিশে উল্লেখ করা হয়। এছাড়া শিক্ষক হাজির খাতায় অধ্যক্ষের ঘরে ‘অনুপস্থিত’ লিখে সুব্রত পদসোপন বহির্ভুত সেচ্ছাচারিতা ও ওদ্ধত্যপুর্ন আচরণ করেন। চিঠিতে অধ্যক্ষের রুম দখল, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালনে বাধা প্রদানসহ ইত্যাদী কারণ উল্লেখ করা হয়। এ বিষয়ে সুব্রত কুমার নন্দি বলেন, কারণ দর্শানো নোটিশ তিনি হাতে পাননি। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখেছেন। তিনি বলেন, অধ্যক্ষ সাক্ষরিত কারণ দর্শানোর নোটিশ আর কলেজের প্যাড মিল না থাকায় এটা সঠিক বলে তিনি মনে করেন না। এ জন্য তিনি জবাব দিচ্ছেন না। তিনি বলেন, কারণ দর্শানোর নোটিশে আমার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ উল্লেখ করা হয়েছে তা সবই মিথ্যা। কারণ আমি চাঁদাবাজী করি না। আমার পরিবারের সুনাম আছে। কলেজের দায়িত্ব পালনকালে আর্থিক লেনদেনের কোন সুযোগ নেই। তিনি বলেন আমাকে হাতে লিখে কলেজের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দিয়েছিলেন অধ্যক্ষ নিজে। সেই আদেশ বাতিল না করেই আরেকজনকে দায়িত্ব দেন। তিনি বলেন আমি তো কখনো অধ্যক্ষের চেয়ারে বসিনি, পরিচয়ও দেয়নি। সেখানে তিনটি চেয়ার আছে। কাজের স্বার্থে পাশের একটি সাধারণ চেয়ারে বসি। তিনি বলেন আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও সম্মানহানী করতেই প্রতিপক্ষরা এ সব উদ্ভট কাহিনী প্রচার করছেন বলে আমি মনে করি।