শিক্ষকদের সর্বাত্মক কর্মবিরতি, সেশনজটের শঙ্কায় ইবি শিক্ষার্থীরা
\ ইবি প্রতিনিধি, কুষ্টিয়া \
অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত সার্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয়’ স্কিম প্রত্যাহারের দাবিতে সোমবার (১ জুলাই) থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছেন ইসলামী বিশ^বিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষকরা। এতে শিক্ষার্থীদের মাঝে সেশনজটের শঙ্কা তৈরী হয়েছে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, শিক্ষকদের পেনশন স্কিমসংক্রান্ত দাবি আদায়ে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকা দীর্ঘায়িত হলে তাদের শিক্ষাজীবন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এতে পিছিয়ে পড়তে হবে চাকরির বাজার থেকে। তারা বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগের পাশাপাশি দ্রæত সময়ের মধ্যে সমাধানের দাবি জানান। জানা যায়, বিশ^বিদ্যালয়ের কিছু বিভাগে আগে থেকেই সেশনজট রয়েছে। কিছু বিভাগ সেশনজট থেকে উত্তরণের চেষ্টা করছে। শিক্ষকদের কর্মবিরতির ফলে সেশনজটে থাকা বিভাগগুলো আরও বেশি জটে পড়বে এবং অন্য বিভাগগুলোও নতুন করে সেশন জটে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। কর্মবিরতির ফলে অনুষ্ঠিতব্য সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষাগুলো অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। পরবর্তীতে কবে সেসব পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে তাও স্পষ্ট নয়। ফলে শিক্ষার্থীদের মাঝে পরীক্ষা নিয়ে হতাশা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে ¯œাতক চতুর্থ বর্ষে থাকা শিক্ষার্থীরা বেশী ক্ষতির মুখে পড়বে বলে দাবি শিক্ষার্থীদের। এছাড়া ঈদের ছুটি শেষ হওয়ার আগেই আন্দোলন শুরু হওয়ায় ক্লাস-পরীক্ষা নিয়ে শঙ্কায় অনেক শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে ফেরেননি বলে জানা গেছে। এদিকে একই দাবিতে লাগাতার কর্মবিরতি কর্মসূচি শুরু করেছে বিশ^বিদ্যালয়ের কর্মকর্তারাও। এতে শিক্ষার্থীদের সনদ উত্তোলনসহ জরুরি কাজ বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ‚গোল ও পরিবেশ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগে বিভাগে সেশন জট। এই কর্মরিবতির ফলে এটা আরও বাড়বে। বিশ্ববিদ্যালয়কে বলা হয় জ্ঞান সৃষ্টির স্থান এখানে আন্দোলন হবে সৃজনশীল পদ্ধতিতে, শিক্ষার্থীদের ক্ষতির মুখে ঠেলে দিয়ে কোন আন্দোলন হওয়া উচিত না। আহমাদ উল্লাহ নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘পাঁচ বছরের শিক্ষাজীবন শেষ করতে সাত থেকে আট বছর সময় লেগে যাচ্ছে। এই আন্দোলনের ফলে আমাদের আরও সেশনজটের শিকার হওয়া লাগতে পারে। আমরা চাই প্রশাসন এবং শিক্ষকরা দ্রæত একটি সমাধানে পৌছাক। যাতে আমাদের পড়াশোনার ক্ষতি না হয়। বিশ^বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এ কে আজাদ লাভলু বলেন, ‘বিভাগীয় শিক্ষকরা পরীক্ষা নেওয়া না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। তারা যেহেতু নিচ্ছেন না এখানে আমাদের কিছু করার নেই। এ বিষয়ে ইসলামী বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন বৈষম্যমূলক পেনশন স্কিম ঘোষণার পর থেকে আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চালিয়ে আজকের সর্বাত্মক আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছি। আমরা কখনই চাই না শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্থ হোক। কিন্তু আমাদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। এই স্কিমের ফলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম শিক্ষকতা পেশার প্রতি আগ্রহ হারাবে। তিনি আরও বলেন এটি শুধু আমাদের জন্য নয়, যারা বর্তমানে শিক্ষার্থী আছে ভবিষ্যতে চাকুরীজীবনে প্রবেশ করবে তাদের জন্যও। এটা সম্পূর্ণ সরকারের হাতে। তারা চাইলেই এই কর্মসূচি প্রলম্বিত করতে পারে আবার শর্ট টাইমে এই স্কিম প্রত্যাহার করে আমাদের কর্মসূচির অবসান করতে পারে।