শীতেও চুল থাকুক ঝলমলে

Share Now..

শীতকাল এলেই অনেকেরই সমস্যা শুরু হয়, বিশেষ করে ত্বক ও চুলের ক্ষেত্রে। শীতের শুষ্কতা, ঠাণ্ডা বাতাস এবং পুষ্টির অভাব চুলের স্বাস্থ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। ফলে অনেকেই এই সময় চুল রুক্ষ বা পড়ার সমস্যা অনুভব করেন। তবে কিছু সহজ যত্ন এবং সতর্কতার মাধ্যমে শীতকালেও চুলকে রাখা সম্ভব ঝলমলে এবং সুস্থ।

প্রথমেই শীতের কারণে চুলের যত্নের ক্ষেত্রে কিছু মৌলিক পরিবর্তন আনা দরকার। শীতকালে বেশিরভাগ সময়ই বাইরে ঠাণ্ডা বাতাসে থাকার ফলে চুল দ্রুত শুষ্ক হয়ে পড়ে এবং ভেঙে যেতে শুরু করে। এজন্য শীতকালীন শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার ব্যবহার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এমন শ্যাম্পু ব্যবহার করা উচিত, যা চুলকে আর্দ্র এবং কোমল রাখে। শীতকালে চুলে তেলের ব্যবহারও বৃদ্ধি করা উচিত। সপ্তাহে অন্তত একদিন তেল ম্যাসাজ করতে পারেন। তেল চুলের শিকড়ে পুষ্টি প্রদান করে, যা চুলের মজবুত করে এবং শুষ্কতা থেকে রক্ষা করে।

এছাড়া শীতকালে হালকা গরম পানি দিয়ে চুল ধোয়া উচিত, যাতে চুলের প্রাকৃতিক তেল অক্ষুণ্ণ থাকে। খুব গরম পানি ব্যবহার করলে চুলের প্রাকৃতিক তেল নষ্ট হয়ে গিয়ে চুল আরও শুষ্ক হয়ে যেতে পারে।  কন্ডিশনার ব্যবহারের পর চুলে প্রাকৃতিক তেলের জন্য ত্বকের যত্ন নেওয়া উচিত, যেমন আলোভেরা বা নারকেল তেল ব্যবহার করা যেতে পারে। এ ছাড়াও চুলের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে পুষ্টির খেয়াল রাখতে হবে। 

শীতকালে খাবারে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন E, Omega-3 এবং প্রোটিন যুক্ত খাবার যেমন বাদাম, মাছ, ডিম, এবং শাকসবজি রাখা উচিত। এই পুষ্টিগুলি চুলের বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত সহায়ক।

চুলের ভেতর ময়লা জমে গেলে বা চুলের গোড়া বন্ধ হয়ে গেলে চুলের বৃদ্ধি কমে যেতে পারে। তাই নিয়মিত চুলে পরিষ্কার রাখা জরুরি। এছাড়া চুলে অতিরিক্ত হিট ব্যবহার যেমন হেয়ার ড্রায়ার বা স্ট্রেইটনার কম ব্যবহার করা উচিত, কারণ এগুলি চুলকে আরও শুষ্ক করে ফেলতে পারে। 

চুলের যত্নে পরিধানযোগ্য হেডক্যাপ বা স্কার্ফ ব্যবহার করতে পারেন, যা শীতের ঠাণ্ডা বাতাস থেকে চুলকে রক্ষা করবে।

শীতকালে চুলের যত্নের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো নিয়মিত চুল কাটানো। চুলের ডগা ফাটলে তা চুলের বৃদ্ধিতে বাধা সৃষ্টি করতে পারে, তাই প্রতি ছয় থেকে আট সপ্তাহ পর পর চুল কাটানো উচিত। 

সবশেষে, শীতকালে চুলকে ঝলমলে রাখার জন্য সঠিক যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি ধৈর্য রাখা জরুরি। সময়মতো পুষ্টি, তেল, সঠিক শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার ব্যবহারের মাধ্যমে চুল থাকবে মজবুত, ঝলমলে এবং শীতেও আপনার আত্মবিশ্বাস বজায় থাকবে। 

যদি মনে হয় সমস্যাগুলো দীর্ঘদিন ধরে স্থায়ী হচ্ছে তবে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চর্ম ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।

লেখক: চিকিৎসক (এম.বি.বি.এস) শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *