শীতের আগমেন খেজুর গাছ প্রস্তুত করেত ব্যাস্ত চুয়াডাঙ্গার গাছিরা

Share Now..

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি:
রাতের কুয়াচ্ছন্ন আকাশ আর শেষ রাতে শীতের আভাস জানান দিচ্ছ প্রকৃতিত শীতের আগমিন বার্তা। শীতের এই আগমিন বার্তায় চুয়াডাঙ্গার গাছিরা ব্যাস্ত খেজুরের রস আহরেন (সংগ্রহ) জন্য খেজুর গাছ তৈরী (প্রস্তুত) করেত।

শীতের মৌসুম শুরু হতে না হতেই আবহমান গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য খেজুরের রস আহরণে জেলার প্রতিটি গ্রামে গাছিরা গাছ প্রস্তত করতে শুরু করেছেন। যারা খেজুরের রস সংগ্রহের উদ্দেশ্যে বিশেষভাবে গাছ কাটায় পারদর্শী স্থানীয় ভাষায় তাদেরকে গাছি বলা হয়।

বৃহসপিতবার (১৩ অক্টোবর) সকালে চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপেজলার আন্দলবাড়িয়া-বেগমপুর সড়কের ধারে ও মাঠের খেজুর বাগানে এ গাছিরা হাতে দা নিয়ে ও কোমরের সাথে গাছে দড়ি বেঁধে নিপুণ হাতে গাছ চাঁচা-ছোলার কাজ শুরু করেছে। শীত মৌসুম এলেই জেলায় সর্বত্র শীত উদযাপনের নতুন আয়োজন শুরু হয়। খেজুরের রস আহরণ ও গুড় তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন এ এলাকার গাছিরা। তাদের মুখে ফুটে ওঠে রসালো হাসি। শীতের দিন মানেই গ্রামাঞ্চলে খেজুর রস ও নলেন গুড়ের মৌ-মৌ গন্ধ।

শীতের সকালে খেজুরের তাজা রস যে কতটা তৃপ্তিকর তা বলে বোঝানো যায় না। আর খেজুর রসের পিঠা এবং পায়েস তো খুবই মজাদার। এ কারণে শীত মৌসুমের শুরুতেই গ্রামাঞ্চলে খেজুর রসের ক্ষীর, পায়েস ও পিঠে খাওয়ার ধুম পড়ে যায়। প্রতিদিনই কোনো না কোনো বাড়িতে খেজুর রসের তৈরি খাদ্যের আয়োজন চলে। শীতের সকালে বাড়ির উঠানে বসে সূর্যের তাপ নিতে নিতে খেজুরের মিষ্টি রস যে পান করেছে, তার স্বাদ কোনো দিন সে ভুলতে পারবে না। শুধু খেজুরের রসই নয় এর থেকে তৈরি হয় সুস্বাদু পাটালি ও গুড়।

খেজুর গুড় বাঙালির সংস্কৃতির একটা অঙ্গ। নলেন গুড় ছাড়া আমাদের শীতকালীন উৎসব ভাবাই যায় না। উপজেলার বাঘাডাঙ্গা গ্রামের গাছি হারুন মোড়ল ও লোকনাথপুর ও পরাণপুর গ্রামের জব্বার ও সালাম জানান, আর মাত্র কয়েক দিন পরই গাছ থেকে রস সংগ্রহ করা হবে।

রস থেকে গুড় তৈরির পর্ব শুরু হয়ে চলবে প্রায় মাঘ ফালগুন মাস পর্যন্ত। হেমন্তের প্রথমে বাজারগুলোতে উঠতে শুরু করবে সুস্বাদু খেজুরের পাটালি ও গুড়। অবহেলায় বেড়ে ওঠা খেজুরের গাছের কদর এখন অনেক বেশি। এছাড়া খেজুর গাছের রস হতে উৎপাদিত গুড় দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে বলে জানান তারা।

কৃষি অফিসার সূত্রে জানাগেছে, জেলায় প্রচুর পরিমাণ খেজুর গাছ আছে। বিভিন্ন সংস্থা খেজুর গাছ লাগানোর ফলে এটা বলা যাচ্ছে দিন দিন খেজুর গাছ বৃদ্ধি পাচ্ছে। গাছিরা খেজুর রস সংগ্রহ করে নলেন গুড় ও পাটালি গুড় তৈরি করে নিকটস্থ বাজারে বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়। বর্তমানে খেজুর গুড়ের চাহিদা বেশী যার কারণে গাছিরা এদিকে যেমন লাভবান হচ্ছে ঠিক তেমনি আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল হচ্ছে।

One thought on “শীতের আগমেন খেজুর গাছ প্রস্তুত করেত ব্যাস্ত চুয়াডাঙ্গার গাছিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *