শৈলকুপায় মুড়িকাটা পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণহীন বিপাকে ক্রেতারা

Share Now..

\ শৈলকুপা প্রতিনিধি \
ঝিনাইদহের পেঁয়াজ প্রসিদ্ধ এলাকা শৈলকুপায় পেঁয়াজের বাজার অশান্ত হয়ে উঠেছে। মুড়িকাটা পেঁয়াজ বাজারে উঠতে শুরু করলেও বাজারে এর প্রভাব দেখা যাচ্ছে না হু হু করে বেড়েই চলেছে এই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটির দাম। পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণহীন হওয়ায় কৃষকরা খুশি হলেও বিপাকে পড়েছে ক্রেতারা। পেঁয়াজের বাজার মূল্য ১ সপ্তাহের ব্যবধানে অনেকটাই বেড়ে গেছে। গত সপ্তাহে যে পেঁয়াজের দাম ছিল ৮০-৯০ টাকা সেই পেঁয়াজ মঙ্গলবার বাজারে ১২০-১৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। কেউ কেউ বলছে ভারত থেকে পেঁয়াজ আসবে না এই গুজবে দাম বেড়ে গেছে। আবার কেউ বলছে ব্যবসায়ীরা এখনও পুরাতন পেঁয়াজ মজুত করে রেখে কিছু কিছু করে বাজারে বিক্রি করছে তাই দাম বেড়েছে। তবে বেশীরভাগ মানুষ মনে করে নতুন পেঁয়াজ বাজারে না ওঠায় সেইসাথে মূড়িকাটা পেঁয়াজের আমদানী বাজারে কম হওয়ায় দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিকে পেঁয়াজের দাম নিয়ে কোন ব্যবসায়ী যাতে কারসাজি করতে না পারে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে প্রশাসনের প্রতি আহŸান জানিয়েছেন ক্রেতারা। কৃষি বিভাগের হিসাব অনুযায়ী এ বছর উপজেলায় ৩১০ হেক্টর জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে। গতবছর ৩০০ হেক্টর জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজের চাষ হয়েছিল। সরেজমিন বাজার ঘুরে দেখা যায়,বাজারে মুড়িকাটা পেঁয়াজ আসতে শুরু করেছে।বাজারে মুড়িকাটি পেঁয়াজের সাথে পুরাতন পেঁয়াজের আমদানী কম।বাজারে দাম বেশী হওয়ায় কৃষকরা খুশি তবে ক্রেতাদের মন বেজায় অখুশি। কৃষকরা ইচ্ছামত দাম হাকিয়ে নিচ্ছে। প্রকারভেদে ৪০০০ থেকে ৪২০০ টাকায় বাজারে প্রতিমন পেঁয়াজ পাইকারী বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি হতে দেখা গেছে তাই ক্রেতারা অল্প অল্প করে পেঁয়াজ কিনছে। পৌর আড়তদাররা মুক্তার মুন্সী জানান, আমদানি কম হওয়ায় মুড়িকাটা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে তাই ক্রেতারা কম কম কিনছে তবে নতুন চারা পেঁয়াজ উঠলে দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে। পৌরবাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, মূড়িকাটা পেঁয়াজ শেষের দিকে হওয়ায় দাম বেড়েছে। মাঠ থেকে চারা পেঁয়াজ উঠতে শুরু করলে দাম কমে যাবে।দাম বেশী হওয়ায় পেঁয়াজ বাজারে ক্রেতাদের সাড়া কম। খুচরা ব্যবসায়ী মনিরুল ইসলাম বলেন, গত সপ্তাহে পেঁয়াজ পাইকারি বাজার থেকে ৭০/ ৮০ টাকা কেজি দরে কিনেছি, সেই বাজারেই মঙ্গলবার ১১০ টাকা কেজি কিনতে হচ্ছে। আমরা যে দামে কিনছি তার সঙ্গে সামান্য লাভে বিক্রি করছি এরপরেও ক্রেতাদের অনেক প্রশ্নের মুখোমুখি হচ্ছি।তবে দাম নিয়ন্ত্রণহীন অবস্থায় আছে।
আরেক ব্যবসায়ী জাহিদ হোসেন বলেন, পেঁয়াজের যে হারে দাম বাড়ছেÑ অতীতে এমন দাম দেখিনি। দাম ওঠানামা করায় ব্যবসা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। শনিবারে কম দামে পেঁয়াজ কেনা হয়েছে। আজ বেড়ে গেছে। তাই ক্রেতারা কম কম করে পেঁয়াজ কিনছে।
পৌরবাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা রবিউল ইসলাম বলেন, বাজারের মূল্যবৃদ্ধির কথা কার কাছে বলব। বাজার তো নিয়ন্ত্রণহীন। সকালে এক দাম বিকেলে আরেক দাম। বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের কাজ করা দরকার। দাম বেশী হওয়ায় পেয়াজ না কিনেই বাড়ি ফিরছি। উপজেলার হরিহরা গ্রামের কৃষক মোতাহার হোসেন বলেন, পেঁয়াজের এত বেশি দাম পাওয়ায় আমরা খুব খুশি। আমরা ভাবতেও পারেনি পেয়াজের এত দাম পাবো।তবে এদামে পেঁয়াজ কিনতে ক্রেতারা কষ্ট পাচ্ছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আবুল হাসনাত রবিবার জানান, চলতি বছর পেঁয়াজের উৎপাদন ভালো হয়েছে। বাজারে মুড়িকাটা পেঁয়াজের আমদানী কম হওয়ায় দাম বেশী তাই বিপাকে পড়েছে ক্রেতারা। আশা করি চারা পেঁয়াজ উঠতে শুরু করলে দাম নিয়ন্ত্রণের মধ্যে চলে আসবে। শৈলকুপা ইউএনও (ভারপ্রাপ্ত) বনি আমিন বলেন, বাজারে মুড়িকাটা পেঁয়াজের আমদানী কম হওয়ায় দাম বেড়েছে। চারা পেঁয়াজ বাজারে এসে গেলে দাম নিয়ন্ত্রণের মধ্যে চলে আসবে। এছাড়াও সরকার ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে অচিরেই পেঁয়াজ চলে আসবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *