শৈলকুপায় সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা, কৃষক খুশি

Share Now..

\ বিশেষ প্রতিনিধি, শৈলকুপা \
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় সরিষার আবাদ গত বছরের তুলনায় কিছুটা কম হলেও এবার বাম্পার ফলনের আশা কৃষকদের। কৃষি অফিস বলছে, এবছর পেঁয়াজ আবাদে কৃষকরা বেশী ঝুঁকে যাওয়ায় সরিষার আবাদ কিছুটা কম হয়েছে আর কৃষকরা বলছে, আবাদ কিছুটা কম হলেও ফলনে বাম্পার হবে। তবে প্রাকৃতিক কোন বিপর্য়য় না ঘটলে আশার অতিরিক্ত ফসল ঘরে তোলার আশা কৃষকদের। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ২০২৩-২৪ অর্থ বছর সরিষা চাষ হয়েছিল ৩৭৩৫ হেক্টর জমিতে। ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে দাঁড়িয়েছে ২৬৫৪ হেক্টও জমিতে। যা গত বছরের তুলনায় এ বছর ১০০০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ কম হয়েছে। এবছর প্রণোদনা কর্মসূচীর আওতায় সরিষার সার ও বীজ ৭০৪০ জন কৃষককে প্রদান করা হয়েছে। সরেজমিন বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা যায়, মাঠের পর মাঠ সরিষার ক্ষেত। উপজেলা জুড়ে উচ্চ ফলনশীল বারি সরিষা ১৪, ১৫, ১৭ ও বিনা ৯, ১০ টরি ৭, রায় ৫, দৌলত, কল্যানীয় ও সোনালী জাতের শস্য সহ বিভিন্ন প্রজাতির সরিষার আবাদ হয়েছে। শস্যের বড় শক্র কাটুই পোকা ও জাব পোকা তবে এবছর এসমস্থ পোকার আক্রমণ দেখা যাইনি। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় তরতাজা হয়ে উঠেছে সরিষার ক্ষেত। কিছু কিছু জমির ফসল ঘরে তোলার অপেক্ষায় রয়েছে। দেখে মনে হচ্ছে এবার উপজেলা জুড়েই সরিষার বাম্পার ফলন হবে। অধিকাংশ সরিষাক্ষেতে ফুল ফুটেছে। সুন্দর বীজও এসেছে। এতে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখছেন চাষিরা। লাভের আশায় তাদের মুখে এখন হাসি। মাঠের পর মাঠজুড়ে সরিষা ফুলের নয়নাভিরাম দৃশ্য। ফুলে মধু আহরণে ভিড় করছে মৌমাছি। তবে অনেক জমিতেই ফুল শেষ হয়ে বীজ দেখা গেছে। বীজগুলো বেশ তরতাজা, যা ভালো ফলনের সম্ভাবনার জানান দিচ্ছে। কৃষকের নিকট বছরের ২য় প্রধান ফসল হিসাবে আবাদ হচ্ছে সরিষা। সরিষা আবাদে কম খরচে বেশী ফলন হওয়ায় বিঘা প্রতি ৫-৬ মণ উৎপাদিত হয়। নতুন এক মণ সরিষা ১৬০০ থেকে ১৭০০ টাকায় বিক্রি হয়। উপজেলার মলমলী গ্রামের কৃষক স্বপন জানান, এ বছর তিনি ৪০ শতক জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন। এখন পর্যন্ত কোনো প্রকার রোগবালাই দেখা দেয়নি। প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে ফলন ভালো হবে। ধরহরাচন্দ্র ইউনিয়নের বকদিয়া গ্রামের কৃষক হাসান আলী বলেন, এবার ৫০ শতক জমিতে সরিষা আবাদ করেছি। তেলের দাম বেশী হওয়ায় সরিষা আবাদ করেছি। আশা করি এবার সরিষার বাম্পার ফলন হবে তাই আমরা খুশি। হাকিমপুর ইউনিয়নের সরিষা চাষি আকবর আলী বলেন, ৭০ শতক জমিতে সরিষা চাষ করেছি। গত বছরের তুলনায় ফলন বেশি হওয়ার আশঙ্কা করছি। সরিষা চাষ শুরুতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ক্ষতির সম্ভাবনা দেখছি না। এ বিষয়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা কনোজ বিশ্বাস বলেন, ‘সরিষার চাষে খরচ কম, লাভ বেশি। তাছাড়া সহজেই বিক্রি করা যায়। সরিষা ঘরে তোলার পর ওই জমিতেই আবার কম সারে বোরো ধানের চাষ করা যায়। এবার সরিষার বাম্পার ফলন হবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান খান বলেন, এবারে উপজেলায় বিগত বছরের তুলনায় কম পরিমাণ জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় সরিষা ভাল হয়েছে। কৃষকদের যথাযথ পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে কোনো প্রকার ক্ষতি না হলে উপজেলায় সরিষা আবাদে বাম্পার ফলনের সম্ভবনা রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *