শৈলকুপায় পানি স্বল্পতা ও কিষান সংকটে বিপাকে পাটচাষীরা
শৈলকুপা প্রতিনিধি ঃ । পানি স্বল্পতা ও কিষান সংকট হওয়ায় বিপাকে পড়েছে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলা পাট চাষীরা ।
সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে জানা যায়, এবার বর্ষার ভরা মৌসুমে বৃষ্টি না হওয়াতে কৃষক পানির অভাবে পাটের জাগ দিতে পারছেনা। বর্ষাকালে খাল-বিল,নদী-নালা বৃষ্টির পানিতে কানায়-কানায় ভরে যায়। কিন্তু এবার বর্ষা নামলেও তা যথেষ্ট না হওয়াতে এমন অবস্থার মধ্যে পড়তে হয়েছে কৃষক ও পাটচাষীদের।
বর্তমানে কিষানের মজুরি সকাল থেকে দিন ১ টা পর্যন্ত ৪ শ থেকে ৬শ টাকা দিলেও কিষান সংকট বিরাজ করছে। আবার পাট কাটার পর চাষীরা গরুর গাড়ি বা মহিষের গাড়িতে করে পানি সমৃদ্ধ এলাকায় নিয়ে যাচ্ছে জাগ দিয়ে পাট পঁচানোর জন্য। অনেক কৃষক বাধ্য হয়ে শ্যালো মেশিন ও মোটরের পানি দিয়ে পাট জাঁগ দিতে গিয়ে বাড়তি খরচ করছেন।
পুরুষ মানুষ পাটকাটা এবং জাগ দেবার জন্য অন্যত্র বহন করা আর গ্রামের মহিলা কিষানীরা খড়ি থেকে আঁশ আলাদা করার কাজে সহযোগী হিসেবে কাজ করছে। জীবন আর জীবিকার স্বাভাবিক তাগিদে কিষান নির্ভর মানুষগুলো বিঘাপ্রতি (২০) কাঠা জমির পাট কাটতে এবং পাটের বোঝা মাথায় করে রাস্তায় উঠানোর মজুরি নিচ্ছে ৪ থেকে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত যে কারনে সেঁচ নির্ভর বুনন থেকে ফসল ঘরে উঠানো পর্যন্ত আঞ্চলিক ক্রমানুসারে ২৫/৩০ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে বলে কৃষকেরা ।
অন্যদিকে ফলন ভালো হলে বিঘাপ্রতি ১০ মণ ও ফলন খারাপ হলে প্রকারভেদে ৫ মণ করে পাট উৎপাদন হয়েছে বলে জানান কৃষকেরা। যা বর্তমান বাজারে ২৩শ থেকে ২৪শত টাকা মণ দরে বিক্রি করে নিরাশ হচ্ছে কৃষক। আবার পাঠকাঠির রয়েছে বাজারে ব্যাপক চাহিদা। পাটকাটি থেকেও ভাল টাকা পেয়ে থাকে কৃষক।
উপজেলার দামুকদিয়া গ্রামের কৃষক মাসুদ মোল্লা বলেন, এবার ৩ বিঘা জমিতে পাঠ চাষ করেছি । ফলন আশানুরুপ হলেও পাট বুনন থেকে শুরু করে ঘরে তুলতে যা খরচ হচ্ছে তাতে কষ্টই বৃথা । তারপর আবার বাজারে পাটের দাম কম । এইবার পাটের ভাল দাম না পেলে পরের বছর থেকে আর পাট চাষ করবো না ।
শৈলকুপা উপজেলা কৃষি অফিসার আকরাম হোসেন বলেন, হিসাবমতে এবার প্রায় ৮৩৮০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। এবার পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮৫০০ হেক্টর জমি।