শ্রমবাজারে নারীর অংশগ্রহণ বাড়লেও অবহেলিত প্রান্তিক নারী
শ্রমবাজারে নারীর অংশগ্রহণ বাড়লেও, অবহেলিত প্রান্তিক নারীরা। কারণ দেশের একেক অঞ্চলের নারীদের জীবন সংগ্রামের ধরন একেক রকম। উপকূলীয় অঞ্চল, উত্তরাঞ্চল, এমনকি পাহাড়ি অঞ্চলের মানুষের জীবনাচরণ অঞ্চলভেদে ভিন্ন। অন্যদিকে প্রান্তিক নারীরা অভিবাসন শ্রমিক হয়ে অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রাখছেন। তবে এখনো তাদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে বলে জানান সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞজন। তারা বলছেন, অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে শহরের নারীরা এগিয়ে থাকলেও এখনো অবহেলিত গ্রামের প্রান্তিক নারীরা। গ্রামীণ নারীরা গৃহশ্রম, কৃষি-শিল্প খাতে কাজ করলেও তারা প্রত্যাশিত মর্যাদা ও স্বীকৃতি থেকে বঞ্চিত। প্রান্তিক নারীদের শ্রম, মর্যাদা এবং তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা না করা গেলে তাদের জীবনমান উন্নত হবে না।
প্রান্তিক নারীদের নিয়ে কাজ করা সংগঠনের প্রতিনিধিরা বলেন, কোভিড-১৯-এর কারণে নারীরা সবচেয়ে বেশি সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। এ সব সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে প্রান্তিক নারীদের অর্থ পাওয়ার সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া নারী সংবেদনশীল বিনিয়োগ বৃদ্ধি, বৈষম্যমূলক সমাজ ব্যবস্থার অবসান এবং সম্পদের ওপরে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা বুলবুলি বেগম বলেন, তিনি বারো মাসই খেতে কাজ করেন। আয়ের তিন ভাগ টাকা তিনি সংসারের কাজে লাগান। বাকি এক ভাগ দেন স্বামীকে। তার অভিযোগ, পুরুষের চেয়ে নারীরা কম টাকা পান। জামালপুরের হালিমা বেগম বলেন, স্বামী বাইরে কাজ করলেও তিনি বাড়িতে কাজ করেন কিন্তু তার মূল্য পান না।
সূত্র জানায় ,কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। পাঁচ দশকে মোট দেশজ উত্পাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি অর্জনের বড় ধরনের অবদান রেখেছেন তারা। পাকিস্তানকে যে সব ক্ষেত্রে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ, তার একটি হলো কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ২০১৯ সালের তথ্যমতে, দেশের কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণের হার ৩৮ শতাংশ, যা পাকিস্তানে ২৩ শতাংশ।
পরিসংখ্যানে যেখা যায়, ৯১ দশমিক ৮ শতাংশ নারী অনানুষ্ঠানিক খাতে কাজ করছেন। শস্য সংরক্ষণ থেকে শুরু করে বীজতলা নির্মাণ, শস্য বাজারজাতের কাজ করছেন নারীরা। তারা ৩৫ থেকে ৪০ ধরনের কাজ করছেন। কিন্তু তার আনুষ্ঠানিকতা দেখা যায় না। সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের কৃষিতে ৪০ শতাংশ নারী শ্রমিক কাজ করছেন। কিন্তু অর্থনীতিতে তাদের অবদান মাত্র ১৩ শতাংশ। নারীদের উদ্যোক্তা হতে ব্যাংকঋণ প্রদানের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু এসব ব্যাংকের কর্মীরা প্রত্যন্ত অঞ্চলে যান না। ফলে প্রান্তিক নারীদের যে আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন, তা তারা পাচ্ছেন না। এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা বলেন, প্রান্তিক নারীরা যে পরিশ্রম করেন, এগুলো তাদের প্রতিদিনকার জীবন সংগ্রাম। ভূমিহীন নারীরা জমিতে তাদের অধিকার পাচ্ছেন না। এসব নারীর জীবনের গল্পের মধ্য দিয়ে শুধু অর্থনৈতিক বৈষম্য নয়, আরো অনেক ধরনের বৈষম্যের চিত্র ফুটে ওঠে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় যে পরিমাণ খাদ্য উত্পাদন হচ্ছে, তার ৮০ শতাংশ নারী উত্পাদন করছেন। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নারীরা উত্পাদনে অনেক অবদান রাখছেন। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে কৃষিতে নারীদের যে অবদান সেটি খুব ছোট করে দেখানো হচ্ছে। শিল্পকারখানায়ও নারীদের অংশগ্রহণ বেড়েছে। তিনি বলেন, সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয়ে নারীর কোনো অধিকার নেই। বাংলাদেশের ৯৬ শতাংশ জমির মালিক পুরুষ। বাকি ৫ শতাংশ জমির মালিক নারীরা।
Wow, awesome weblog format! How long have you
been blogging for? you make running a blog glance easy. The total look of your web site is excellent,
let alone the content! You can see similar here sklep internetowy
Victory is just a respawn away Play hard Lucky Cola