শ্রীলঙ্কার বর্তমান সংকটের বড় কারণ ‘অব্যবস্থাপনা’: বৌদ্ধ ভিক্ষু

Share Now..

শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক সংকট চরম আকার ধারণ করার পর এই প্রথম দেশটিকে নিয়ে কথা বললেন এশিয়ান বুডিস্ট কনফারেন্স ফর পিস এর প্রেসিডেন্ট শ্রীলঙ্কা ন্যাশনাল সেন্টার, ডক্টর মাইটিপে উইমালাসারা মহা থেরা। বর্তমান অস্থিরতার জন্য দেশটির নেতৃত্বের অর্থনৈতিক নীতির “অব্যবস্থাপনা”কে দায়ী করেছেন এই ভিক্ষু।

মূলত বৈদেশিক মুদ্রার তীব্র ঘাটতির কারণে রাজাপাকসের সরকার জ্বালানিসহ অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আমদানিতে পুরোপুরি ব্যর্থ। ফলে, দেশটিতে এখন ১৩ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামও আকাশ ছোঁয়া।

সমালোচকরা বলছেন, শ্রীলঙ্কায় কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ এই সংকটের মূলে আছে একের পর এক সরকারের অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা। সরকারের কিছু অবিবেচক সিদ্ধান্ত দেশটিতে দ্বৈত ঘাটতি তৈরি করেছে এবং ধীরে ধীরে তা দীর্ঘস্থায়ী ঘাটতিতে পরিণত হয়েছে। এই দ্বৈত ঘাটতে হলো- চলতি হিসাবের ঘাটতি এবং বাজেট ঘাটতি।

২০১৯ সালে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) একটি ওয়ার্কিং পেপারে বলা হয় ‘শ্রীলঙ্কা ইজ এ ক্লাসিক টুইন ডেফিসিট ইকোনমি’। টুইন ডেফিসিট সংকেত দেয়- একটি দেশের জাতীয় ব্যয় তার জাতীয় আয়ের চেয়ে বেশি এবং দেশটির বাণিজ্যিক পণ্য ও পরিষেবার উৎপাদন অপর্যাপ্ত।

কিন্তু, বর্তমান সংকটের অন্যতম একটি কারণ ২০১৯ সালের নির্বাচনী প্রচারণার সময় রাজাপাকসের কর হ্রাসের প্রতিশ্রুতি। কারণ, করোনা মহামারি শুরুর কয়েক মাস আগে শ্রীলঙ্কা সরকার কর হ্রাসের সিদ্ধান্ত কার্যকর করে। যা শ্রীলঙ্কার অর্থনীতির বড় একটি অংশকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশটির রিজার্ভ ছিল মাত্র ২.৩১ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু, ২০২২ সালে প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ পরিশোধের মুখোমুখি হতে হয় শ্রীলঙ্কাকে। যার মধ্যে গত জুলাইয়ে পূর্ণ হওয়া ১ বিলিয়ন ডলারের আন্তর্জাতিক সার্বভৌম বন্ড (আইএসবি) আছে। শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক ঋণের বৃহত্তম অংশ আইএসবি। যার পরিমাণ ১২.৫৫ বিলিয়ন ডলার এবং ঋণদাতাদের মধ্যে আছে- এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, জাপান এবং চীন।

অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে রাজাপাকসে চীন ও ভারতের কাছে সাহায্য চেয়েছেন। বিশেষ করে জ্বালানির বিষয়ে সহায়তা চেয়েছেন। ফেব্রুয়ারিতে ভারতের সঙ্গে স্বাক্ষরিত ৫০০ মিলিয়ন ডলারের ক্রেডিট লাইনের অধীনে একটি ডিজেল চালান শনিবারে শ্রীলঙ্কা যাওয়ার কথা ছিল। শ্রীলঙ্কা-ভারত খাদ্য ও ওষুধসহ প্রয়োজনীয় জিনিস আমদানিতে ১ বিলিয়ন ডলারের একটি ক্রেডিট লাইন স্বাক্ষর করেছে এবং রাজাপাকসে সরকার নয়াদিল্লির কাছে আরও অন্তত ১ বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা চেয়েছে দেশটি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *