‘সংক্রমণ আরও বাড়লে হাসপাতালে জায়গা হবে না’

Share Now..

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দেশে ঈদুল আজহার ছুটিতে গ্রামে যাওয়া আসার কারণে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ বেড়েছে পাঁচ থেকে ছয় গুণ। বর্তমানে শহরের হাসপাতালে ভর্তি করোনা রোগীর ৭৫ শতাংশই গ্রাম থেকে আসা।

দেশবাসীকে সরকারঘোষিত লকডাউন মেনে চলার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা চাই রোগীর সংখ্যা যেন না বাড়ে, রোগীর সংখ্যা কমাতে হলে সংক্রমণের সংখ্যা কমাতে হবে। সংক্রমণ কমাতে হলে সরকার যে লকডাউন ঘোষণা করেছে, লকডাউন মেনে চলার জন্য প্রধানমন্ত্রী যে আহ্বান জানিয়েছেন তা মেনে চলতে হবে।
গতকাল রবিবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন সেন্টারে করোনা ফিল্ড হাসপাতাল তৈরির কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো বলেন, সংক্রমণ ১০ জায়গা থেকে বাড়ছে, হাসপাতালে রোগীর চাপ বাড়ছে। এভাবে সংক্রমণ অব্যাহত থাকলে হাসপাতালে জায়গা হবে না। তিনি বলেন, আপনারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন, ঘরে থাকুন। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে যাবেন না। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, আজ ঢাকা শহরের বিভিন্ন রাস্তা ঘুরে দেখলাম—রাস্তাঘাটে প্রচুর লোক ঘোরাফেরা করছে, অনেকের মাস্ক পরা নাই, গাড়িতে ও মোটরসাইকেলে ঘুরছে। এতে সংক্রমণ প্রতিরোধে বেশি সময় লেগে যাবে।জাহিদ মালেক বলেন, করোনা সংক্রমণ অব্যাহত থাকলে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো দেশের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়বে, যা আমরা চাই না। এজন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প নেই। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিত্সায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিল্ড হাসপাতালের কার্যক্রম আগামী সাত দিনের মধ্যে চালু করতে পারব। ভিসি সাহেবের সঙ্গে কথা বলেছি, আশা করছি আগামী শনিবার (৩১ জুলাই) থেকে আমরা রোগী ভর্তি করতে পারব। বিএসএমএমইউর ফিল্ড হাসপাতালটিতে ২০০ আইসিইউ, এইচডিইউসহ ১ হাজার শয্যা থাকছে বলেও জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। দেশে প্রতি মাসে ১ কোটি মানুষকে করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন দেওয়ার পরিকল্পনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, আমাদের ৮ কোটি ভ্যাকসিন রাখার সক্ষমতা আছে। আগামী দিনে প্রতি মাসে ১ কোটি লোককে ভ্যাকসিন দেওয়ার পরিকল্পনায় কাজ করছি।স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে। একদিকে করোনা ও নন-করোনা রোগীর চিকিত্সা অন্যদিকে ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধিতে চিকিত্সার প্রয়োজন হচ্ছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ডেঙ্গু রোগীর চিকিত্সার জন্য পৃথক কয়েকটি হাসপাতাল প্রস্তুত করা হচ্ছে। এর মধ্যে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতাল, মিরপুরের লালকুঠি হাসপাতাল, সরকারি রেলওয়ে হাসপাতাল এবং টঙ্গীর আহসানউল্লাহ হাসপাতালসহ কয়েকটি হাসপাতালে শুধু ডেঙ্গুর চিকিত্সা হবে বলে তিনি জানান।এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, বিএসএমএমইউ উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ রফিকুল আলম, উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. জাহিদ হোসেন, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. এ কে এম মোশাররফ হোসেন, সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমেদ, ডেন্টাল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী আসগর মোড়ল প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *