সিনওয়ারের মরদেহ কি ফেরত দেবে ইসরায়েল?
সম্প্রতি গাজার দক্ষিণাঞ্চলে একটি লড়াই চলাকালে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে হামাসপ্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ার নিহত হন। তার মরদেহের ময়নাতদন্তের তদারকি করেছেন ইসরায়েলের ন্যাশনাল ফরেনসিক ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. চেন কুগেল।
শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ময়নাতদন্ত শেষে সিনওয়ারের মরদেহ ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সিনওয়ারের মৃত্যুর ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টা পর মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। তবে তা কোথায় রাখা হয়েছে, সে বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।গণমাধ্যমটি জানায়, ইসরায়েল সাধারণত ফিলিস্তিনিদের মরদেহ সংরক্ষণ করে রাখে, যাতে পরবর্তী সময়ে হামাস বা অন্যান্য সশস্ত্র সংগঠনের সঙ্গে সেগুলো নিয়ে বন্দিবিনিময় করা যায়। একই কাজ (ইসরায়েলি সেনাদের মরদেহ সংরক্ষণ) করে হামাসও। এই বিষয়ে তথ্য দিতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীকে অনুরোধ করা হয়েছিল, কিন্তু তারা মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক কর্মসূচির পরিচালক বিশেষজ্ঞদের কাছে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তারা বলেন, সিনওয়ারের মরদেহ কোথাও কবর দেওয়া হবে এবং সেই স্থানটি একসময় মাজারে পরিণত হবে- এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি করতে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা সম্ভবত দেবেন না। ওয়াশিংটনে সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক কর্মসূচির পরিচালক জন বি অল্টারম্যান বলেন, আমার মনে হচ্ছে, একটি অজ্ঞাত স্থানে তাকে (সিনওয়ার) দাফন করা হবে। যখন বিন লাদেনকে হত্যা করা হয়, তাকেও মুসলিম নিয়ম মেনে দাফন করা হয়েছিল। এভাবে সিনওয়ারকে ইসরায়েলে কবর দেওয়া হতে পারে।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে সন্ত্রাসী হামলার মূল পরিকল্পনাকারী ও আল- কায়েদার প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে ২০১১ সালে হত্যা করা হয়। মার্কিন সেনারা বিন লাদেনকে হত্যা করার পর দ্রুত মুসলিম নিয়ম মেনে তার কবর দেন। লাদেনের কবর ঘিরে মাজার গড়ে ওঠা আটকাতে খুব সম্ভবত এটা করা হয়েছিল। অন্যদিকে, গত জুলাই মাসের শেষ দিকে ইরানে ইসরায়েলের হামলায় নিহত হন হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া। ইসরায়েল তার মরদেহ হাতে পায়নি। হানিয়াকে কাতারের রাজধানী দোহায় কবর দেওয়া হয়েছে। হানিয়ার মরদেহ যখন নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তখন শত শত মানুষ হানিয়ার কফিন যে রাস্তা দিয়ে গেছে, তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে শোক প্রকাশ করেন। তাদের হাতে ছিল ফিলিস্তিনের পতাকা।