সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি, সড়ক যোগাযোগ ব্যাহত
সিলেটে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অবনতি ঘটেছে। সুরমার পানি আরও বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কানাইঘাটে সুরমা, অমলসীদে কুশিয়ারা, সুনামগঞ্জে সুরমা পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপরে রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ মে) সকাল থেকে সিলেট নগরী ও বিভিন্ন উপজেলায় থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। দুর্ভোগ বেড়েছে বন্যা কবলিত এলাকার বাসিন্দাদের। বিশুদ্ধ পানির অভাব শুরু হয়েছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ জানায়, তারা ৫ লাখ পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করেছে। আরও ৫ লাখ ট্যাবলেট প্রয়োজন।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ সাঈদ চৌধুরী বলেন, প্রকৃতি খুবই বিরূপ আচরণ করছে। একদিকে অবিরাম বর্ষণ। আরেকদিকে পাহাড়ি ঢল, এই দুইয়ে মিলে সিলেট অঞ্চলের অবস্থা খুব খারাপ। সহসাই পরিস্থিতির উন্নতি হবে না বলে মনে হচ্ছে।
এদিকে সীমান্তবর্তী জকিগঞ্জ, কানাইঘাট, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কোম্পানিগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলায় আরও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
সিলেট-বিয়ানীবাজার সড়কের রানদা বাজার এলাকায় সড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। বিয়ানী বাজারের চারখাই সড়কের অবস্থা ভয়াবহ। এই সব সড়কে যানবাহন চলছে বিপদজনকভাবে। যেকোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
সিলেট শহরের আলমপুরে বিভাগীয় অফিস, ডিআইজি অফিসের আঙিনায় দুই ফুট পানি। বন্যা কবলিত উপজেলাসমূহে দুর্ভোগ চরমে। বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। বন্যা কবলিত এলাকায় রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট, বাসাবাড়ি, দোকানপাট পানিতে তলিয়ে গেছে। জনসাধারণের দুর্ভোগের মধ্যে নতুন করে যোগ হয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট।
এছাড়া নিচু এলাকা হিসেবে পরিচিত শাহজালাল উপশহর, ঘাসিটুলা, মাছিমপুর, ছড়ারপার, তালতলা, কুয়ারপার, মেন্দিবাগ, কামালগড়, চালিবন্দর, যতরপুর, সোবহানিঘাট, কালীঘাট, শেখঘাট, তালতলা, জামতলা, মাছুদীঘিরপার, রামের দীঘিরপার, মোগলটুলা, খুলিয়াটুলা, পাঠানটুলা, সাগরদীঘিরপার, সুবিদবাজার, শিবগঞ্জ, মেজরটিলা, মদিনা মার্কেট, দক্ষিণ সুরমার বঙ্গবীর রোড, ভার্থখলা, মোমিনখলা, পিরোজপুর, আলমপুর ও ঝালোপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় বাসাবাড়িতে পানি উঠেছে। এসব এলাকায় বাসাবাড়িতে কোমরপানি। বাসাবাড়িতে পানি ওঠায় মানুষ বড় কষ্টে আছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শহীদুল ইসলাম বলেন,‘সিলেটে নদ-নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। বিভিন্ন জায়গায় নদ-নদীর পানি পাড় উপচে শহর-গ্রামকে প্লাবিত করে দিয়েছে। সিলেট জেলার প্রতিটি জায়গায় পানি বেড়েছে। কাল শুক্রবার থেকে অবস্থার উন্নতি হবে।