সুদের টাকা না দিতে পেরে মহাসিনকে হত্যা \ আটক লিখনের স্বীকারোক্তি

Share Now..

\ যশোর জেলা প্রতিনিধি \
চড়া সুদের টাকা দিতে না পারায় গালিগালাজ করেছিলো হত্যার শিকার হওয়া মহাসিন। সেই রাগে অফিসের মধ্যেই ইলেক্ট্রিক তার দিয়ে প্রথমে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে প্রতিবেশী মেহেদী হাসান লিখন। এরপর মরদেহ ভরা হয় একটি বাক্সে। সেই বাক্সভর্তি লাশ নুরপুর থেকে প্রথমে ইজিবাইকে ও পরে ভ্যানে নিয়ে যাওয়া হয় ফতেপুরের মান্দিয়া গ্রামে। যাওয়ার পথে তেলপাম্প থেকে কেনা হয় ডিজেল। আর সেখানে নিয়ে ডিজেল ডেলে পুড়িয়ে দেয়া হয় মহাসিনের মরদেহ। ডিবির জালে আটকের পর এসব কথা জানিয়েছেন নুরপুরের মহাসিনের হত্যাকারী একই এলাকার মৃত আকবর হোসেনের ছেলে মেহেদী হাসান লিখন। গত শনিবার রাতে তাকে আটকের পর উদ্ধার করা হয়েছে হত্যায় ব্যবহৃত বাক্স, মহাসিনের মোবাইল ফোন ও জুতা। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন মহাসিনের ভাই কোরবান আলী।
ডিবির ওসি রুপন কুমার সরকার জানায়, আটক লিখন ওই এলাকায় ঈগল হাই ফোর্স এন্ড লজিস্টিক সার্ভিস লিমিটেড নামে একটি কোম্পানি পরিচালনা করেন। এ ব্যবসার কাজে সুদে সাত লাখ টাকা মহাসিনের কাছথেকে নিয়েছিলেন লিখন। প্রতি সপ্তাহে তাকে দিত হতো ৩০ হাজার টাকা লাভ। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার রাতে লিখনের সুদের সেই টাকা দেয়ার কথা ছিলো মহাসিনকে। বিকেলে ওই টাকা নিতে অফিসে যান মহাসিন। কিন্তু টাকা দিতে না পারায় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে মহাসিন। এক পর্যায় ক্ষুব্ধ হয়ে অফিসে থাকা কম্পিউটারের ক্যাবেল দিয়ে শ^াসরোধ করে প্রথমে হত্যা করে মহাসিনকে। পরে লাশ নিয়ে যায় ফতেপুরের আদর্শপাড়া মসজিদের পাশে। পরে সুযোগ বুঝে মহাসিনের শরীরে ডিজেল ঢেলে আগুন জালিয়ে চলে আসে।
ডিবি আরও জানায়, বিভিন্ন স্থানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ তারা সংগ্রহ করেন। এরপর মহাসিনের মোবাইল ফোনের লোকেশন শনাক্ত করে ফোন উদ্ধার করে লিখনের কাছ থেকে। লিখনকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে ধীরে ধীরে সব স্বীকার করেন।
গতকাল রোববার সকালে ডিবির এসআই শামীম হোসেন ও এসআই খান মাইদুল ইসলাম লিখনকে নিয়ে নুরপুরের তার সেই অফিসে যান। যেখানে মহাসিনকে হত্যা করা হয়েছিলো নিজ মুখে তার বর্ণনা দেন লিখন। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা ফুসে উঠে। লিখনের ফাঁসির দাবিতে শ্লোগান দিতে থাকে সবাই। অন্যদিকে, মহাসিনের পরিবার কান্নায় ভেঙে পড়ে। পরে লিখনকে নিয়ে যাওয়া হয় ফতেপুরের মান্দিয়া গ্রামে কিভাবে মহাসিনকে পুড়িয়ে দিয়েছিলো সে কাহিনীও নিজ মুখে স্বীকার করেন লিখন। এছাড়া যে বাক্সে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো সে বাক্সটিও পালবাড়ি এলাকা থেকে উদ্ধার করে ডিবির এ টিম। গতকাল রোববার তাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে লিখন আদালতে এ হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। আদালত জবানবন্দি গ্রহণ শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *