সেঞ্চুরির জোয়ার উঠেছে বিসিএলে 

Share Now..

নারী বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের (বিসিএল) দ্বিতীয় আসর চলছে। গেল বছর প্রথম আসরে ছিল দুই দিনের ম্যাচ। এবার দিনের সংখ্যা বাড়িয়ে তিন দিন করা হয়েছে। অর্থাৎ সাদা পোশাকে দেশের ক্রিকেটাররা প্রথমবারের মতো তিন দিনের ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছেন। স্বাভাবিকভাবে নারীদের টেস্ট ক্রিকেটের পথ অগ্রসর হয়েছে। যদিও আইসিসি টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার তিন বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ নারী দল কোনো টেস্ট ম্যাচ খেলেনি। 

অবশ্য নারীদের ক্রিকেটে এই সংস্করণের খেলা খুব বেশি দেখা যায় না। বছরে হাতেগোনা কয়েকটি ম্যাচ মাঠে গড়ায়। সেখানে বাংলাদেশের ঘরোয়া এই টুর্নামেন্ট দিয়ে টেস্টের দরজা খোলার কাজটিই হচ্ছে। শুরু থেকেই প্রত্যাশা ছিল জ্বলে উঠবেন ক্রিকেটাররা। সাদা পোশাকে নিজেদের ঝালিয়ে নেওয়ার এর থেকে বড় সুযোগ আর হতে পারে না। নারীরা সেই প্রত্যাশার থেকেও বেশি প্রতিদান দিচ্ছেন। টুর্নামেন্টে একের পর এক সেঞ্চুরির দেখা মিলছে।  নিগার সুলতানা জ্যোতির হাত দিয়ে ব্যক্তিগত এই মাইলফলকের যাত্রা শুরু হয়েছিল। দেখতে দেখতে ছয়টি সেঞ্চুরি এসেছে দুই ম্যাচ শেষে। প্রথম ম্যাচে সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন জ্যোতি ও ফারজানা হক পিংকি। গতকাল শেষ হয়েছে দ্বিতীয় ম্যাচ। এই ম্যাচে চার দলের লড়াইয়ে চারটি সেঞ্চুরি এসেছে। যেখানে জ্যোতি দ্বিতীয়বারের মতো সেঞ্চুরি করেছেন। অর্থাৎ ছয় সেঞ্চুরির মধ্যে দুটিই তার। দ্বিতীয় ম্যাচে বাকি তিন সেঞ্চুরিয়ান হলেন-দিলারা আক্তার দোলা, মুর্শিদা খাতুন ও সোবহানা মোস্তারি। 

টুর্নামেন্ট চলবে আগামী বছরের জানুয়ারি মাস জুড়ে। সে সময়ে আরও সেঞ্চুরির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। শেষ হওয়া দুই ম্যাচে অনেকে ডাবল সেঞ্চুরির কাছাকাছিও পৌঁছেছিলেন। চার দলের এই টুর্নামেন্টে তিন দিনের ম্যাচ হলেও সেখানে ডাবল সেঞ্চুরি যে আসবে না, সেটি হলফ করে বলা যায় না। ক্রিকেটাররা নিজেদের ব্যাট রাঙিয়ে যাচ্ছেন। সেই রঙের আভায় উদ্ভাসিত দেশের ক্রিকেট। ছয়টি সেঞ্চুরি অকাট্য প্রমাণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।  কেবল ব্যাটাররা নন, বোলাররাও এই টুর্নামেন্টকে জীবন্ত রেখেছেন। নাহিদা আক্তার প্রথম ম্যাচের প্রথম ইনিংসে মধ্যাঞ্চলের হয়ে ৭ উইকেট নিয়ে চমক দেখিয়েছিলেন। সেই ম্যাচে জান্নাতুল ফেরদৌস সুমনা উত্তরাঞ্চলের হয়ে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন। পূর্বাঞ্চল-দক্ষিণাঞ্চল ম্যাচে রাবেয়া খান নিয়েছিলেন ৫ উইকেট। প্রথম ম্যাচে বোলারর এমন সফলতা পেলেও দ্বিতীয় ম্যাচে সে ধারাবাহিকতা থাকেনি। সেখানে রাজত্ব করেছেন ব্যাটাররা। 

পূর্বাঞ্চল- মধ্যাঞ্চল ম্যাচে পাঁচ শতাধিক রান করেছেন জ্যোতিরা। যেখানে ১৭০ রান করেছেন মুর্শিদা খাতুন ও ১৭১ রান করেছেন জ্যোতি। প্রথমবারের মতো ডাবল সেঞ্চুরির হাতছানি থাকলেও দুজনে সে পর্যন্ত যেতে পারেননি। তবে প্রথম ম্যাচে সেঞ্চুরিয়ান জ্যোতি দ্বিতীয় ম্যাচেও এই মাইলফলক ছুঁয়ে জীবন্ত করে তুলেছেন গোটা টুর্নামেন্টকেই। নারী ক্রিকেটাররা সাদা পোশাকে সাফল্য যে রাখতে পারবেন, এটিই যেন তার প্রমাণ। 

চার দলের এই টুর্নামেন্টে রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতিতে প্রত্যেকে ৬টি করে ম্যাচ খেলবে। ইতিমধ্যে দুটি করে ম্যাচ শেষ হয়েছে। আরও বাকি ৪ ম্যাচ। দুই ম্যাচ শেষে সবার ওপরে রয়েছে দক্ষিণাঞ্চল। প্রথম ম্যাচে দলটি পূর্বাঞ্চলকে হারিয়েছিল। তাতে অর্জন হয় ২ পয়েন্ট। দ্বিতীয় ম্যাচে উত্তরাঞ্চলের বিপক্ষে ড্র হওয়ায় আসে ১ পয়েন্ট। মোট ৩ পয়েন্ট নিয়ে টেবিল টপার রাবেয়া খানের দল দক্ষিণাঞ্চল। 

এখন পর্যন্ত হওয়া চার ম্যাচের নিষ্পত্তি এসেছে ঐ একটি ম্যাচ থেকেই। মধ্যাঞ্চল দুটি ড্র নিয়ে টেবিলের দুইয়ে রয়েছে। একই ফল নিয়ে রানের পার্থক্যের কারণে টেবিলের তিনে উত্তরাঞ্চল। প্রথম ম্যাচে হারার কারণে টেবিলের তলানিতে রয়েছে পূর্বাঞ্চল। দ্বিতীয় ম্যাচটি ফাহিমা খাতুনরা ড্র করলেও ঐ হারই তাদের টেবিলের নিচে রেখেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *