সেনাবাহিনীর শীতকালীন বহিরাঙ্গন অনুশীলন সমাপ্ত

Share Now..

একটি যুদ্ধক্ষেত্রে বিজয়ী হতে যেসব প্রয়োজন হয় তার সবকিছু ছিল সেনাবাহিনীর এবারের শীতকালীন বহিরাঙ্গন প্রশিক্ষণে। বাংলাদেশে ৫০ বছরের ইতিহাসে এবার প্রথমবারের মতো শীতকালীন প্রশিক্ষণে আয়োজন করা হয় লজিস্টিকস এফটিএক্স বা ফিল্ড ট্রেনিং এক্সারসাইজ।

আধুনিক যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শত্রুপক্ষকে কীভাবে পরাস্থ করতে হবে, ধোঁয়ার মধ্যে কীভাবে শত্রুপক্ষকে বোঝার আগেই আক্রান্ত করতে হবে, কী ধরনের পরিস্থিতিতে কেমন ধৈর্য্য ও মননশীল থাকতে হবে, লজিস্টিক সাপোর্ট কেমন লাগবে-সব মিলিয়ে পরিকল্পিত ও সমন্বিত প্রশিক্ষণ ছিল এবার।

জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী, বন্দিশালাও তৈরি করা হয়েছিল। সেনাসদর দপ্তর থেকে প্রথমবারের মতো এই প্রশিক্ষণের সার্বিক কার্যক্রম প্রস্তুত করা হয়। সেই অনুযায়ী এ বছর নানা রণকৌশল দেখানো হয়েছে প্রশিক্ষণে।

এ বছর সেনাবাহিনীর সদর দপ্তর কমান্ড গ্রুপ এবং সাপোর্ট গ্রুপ এই দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পূর্ণাঙ্গরূপে অনুশীলনে অংশগ্রহণ করে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ প্রশিক্ষণে সরাসরি তদারকি করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সেনাবাহিনীর শীতকালীন প্রশিক্ষণ পর্যবেক্ষণ করেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সব সময় বলতেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী হবে জনগণের। বঙ্গবন্ধুর সেই নির্দেশনার আলোকে এই সম্মিলিত প্রশিক্ষণের পরিকল্পনা প্রস্তুত করা হয়। ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছার চেচু বাজার এলাকায় চূড়ান্ত আক্রমণ অনুশীলনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৪ সপ্তাহব্যাপী পরিচালিত শীতকালীন প্রশিক্ষণ ২০২১-২০২২ অনুশীলন নবদিগন্ত। বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৯ পদাতিক ডিভিশন সফলভাবে এই অনুশীলন পরিচালনা করে।

শীতকালীন বহিরঙ্গন প্রশিক্ষণ শেষে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ ডিফেন্স জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এর সাংবাদিকবৃন্দ এবং অন্যান্য গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী হবে জনগণের। আমরা সেইভাবে কাজ করে যাচ্ছি। কঠিন প্রশিক্ষণ যুদ্ধকে সহজ করে তোলে। বাস্তবসম্মত ও যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সেনাবাহিনীকে একটি বিশ্বমানের বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’

তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর ৫০ বছর পূর্তিতে এবার প্রথমবারের মতো লজিস্টিকস ফিল্ড ট্রেনিং এক্সারসাইজ পরিচালনা করা হয়। সাম্প্রতিককালে আহরিত অস্ত্র ও সরঞ্জাম এবারের অনুশীলনে ব্যবহৃত হয়। সেনাবাহিনীর লজিস্টিক স্থাপনাসমূহ প্রথমবারের মতো বহিরাঙ্গনে মোতায়েন হয়।

তিনি বলেন, সেনাবাহিনী সাধারণ জনগণের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছে। মুক্তাগাছায় এক লাখ কম্বল দেওয়া হয়েছে। এসব কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে সাধারণ মানুষের শক্তি সমর্থন নিয়ে সেনাবাহিনী কাজ করবে।

সব মিলিয়ে সেনাবাহিনীর এবারের শীতকালীন প্রশিক্ষণ ছিল অনেক অভিনব ও বাস্তবধর্মী। সেনাবাহিনীর সকল সদস্য ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা নিয়ে এই শীতকালীন অনুশীলনে অংশগ্রহণ করেন। গত ১৯ ডিসেম্বর শীতকালীন প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যে সেনাসদর ও সেনাবাহিনীর সকল ফরমেশন পূর্ণাঙ্গরূপে নিজ নিজ দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় মোতায়েন হয়। লজিস্টিক সাপোর্ট না থাকার কারণে অনেক যুদ্ধে হেরে যেতে হয়। এবার শীতকালীন প্রশিক্ষণে লজিস্টিকস এফটিএক্স বা ফিল্ড ট্রেনিং এক্সারসাইজ এর অংশ হিসেবে সড়কপথের পাশাপাশি আকাশ, নদী ও রেলপথে দেশের বিভিন্ন স্থানে রসদ পরিবহন করা হয়েছে।

এছাড়া সেনাবাহিনীর নিজস্ব সক্ষমতায় সব ফরমেশনের মধ্যে ওয়্যারলেস, ভিস্যাট ও ইন্টারনেট কমিউনিকেশন স্থাপন করা হয়েছে। ফোর্সেস গোল-২০৩০-এর আলোকে সেনাবাহিনীতে নতুন সংযোজিত অত্যাধুনিক অস্ত্র ও সরঞ্জামের কৌশলগত ব্যবহারও এবার পরীক্ষা করা হয়, যা এই প্রশিক্ষণকে আরও অভিনব ও বাস্তবধর্মী করে তোলে। এই অনুশীলনে সাঁজোয়া বহর, এপিসি, দুরপাল্লার এমএলআরএস এর পাশাপাশি সেনাবাহিনীর ছত্রীসেনা এবং বিমান বাহিনীর জঙ্গী বিমানও অংশগ্রহণ করে। সেনাবাহিনীর কাসা ২৯৫এ বিমান থেকে নেমে আসে প্যারাট্রুপার।

সমাপনী এই আয়োজনে সেনাসদস্যদের পাশে থেকে এই অনুশীলন পর্যবেক্ষণ করেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।

One thought on “সেনাবাহিনীর শীতকালীন বহিরাঙ্গন অনুশীলন সমাপ্ত

  • February 12, 2024 at 12:01 am
    Permalink

    Desde que haja uma rede, a gravação remota em tempo real pode ser realizada sem instalação de hardware especial.

    Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *