সৌদি আরবে মৃত্যু পথযাত্রী রেমিটেন্স যোদ্ধা ইকবাল বাড়ি ফিরতে চান
আসিফ কাজলঃ
মোহাম্মদ ইকবাল। ভাগ্য বদলাতে ২০১৯ সালে পাড়ি জমান সৌদি আরবে। কাজ পান আল গোলাইমি কোম্পানীতে। দু’বছর বেশ ভালোই কাটছিল ইকবালের জীবন। হঠাৎ তিনি পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। স্ত্রী সন্তান ও মা চিন্তায় পড়ে যান। ৬ মাস পর খোঁজ মেলে ইকবালের। তখন তিনি অচেতন। ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে থাকায় পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছন্ন হয় তার। কাজ আর কোম্পানী হারিয়ে সৌদি আরবে অবৈধ হয়ে যান ইকবাল। প্রথমে রিয়াদের একটি হাসপাতাল ও পরে আল মাজমা জেলার কিং খালেক হাসপাতাল তার স্থায়ী ঠিকানা হয়। সৌদি আরব থেকে পাঠানো ছবিতে দেখা যায় ইকবালের শরীর এখন নানা ধরণের মেশিনে আবৃত্ত। কথা বলতে পারেন না। যোগাযোগ করতে পারেন না বাড়িতে। তার দেখভালের দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশীরাই তার খোঁজ জানান পরিবারের কাছে। ইকবাল হরিণাকুন্ডু উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের মৃত নায়েব আলী ওরফে ভাদু জোয়ারদারের ছেলে। এদিকে সেই ইকবাল আর এই ইকবালের শরীর চেনার মতো নেই। শরীর শুকিয়ে ক্ষীর্ণকায়। হাসপাতালের অসুস্থ জীবন তাকে যেন বিষিয়ে তুলেছে। দেশে ফিরে স্ত্রী, সন্তান ও মায়ের সেবা পেলে হয়তো মানসিক ভাবে সুস্থ হতে পারতেন ইকবাল। সৌদি আরবের কিং খালেক হাসপাতালে কর্মরত কিশোরগঞ্জের সৌরভ হোসেন সোমবার জানান, হাসপাতালে একনাগাড়ে চিকিৎসাধীন থাকায় বিল এসে দাড়িয়েছে সেদেশের টাকায় ৭২ হাজার রিয়ালে। সৌরভের ভাষ্যমতে, হাসপাতালের টাকা পরিশোধ ও তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় হয়তো ইকবালকে দেশে ফেরানো সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে সৌদি আরবের হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যায়ের টাকা পরিশোধ করা তার পরিবারের পক্ষে সম্ভব নয়। কি ভাবে তিনি দেশে ফিরবেন ? নাকি সেখানেই মৃত্যু পেয়ালায় শেষ চুমুক দিয়ে শায়িত হবেন এই নিয়ে তার পরিবার দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। ইকবালকে দেশে আনতে কোন উপায় খুজে পাচ্ছেন না তার স্ত্রী শেফালী খাতুন। সরকারের ভাবে মৃত্যু পথযাত্রী স্বামীকে তিনি দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার দাবী জানান। এদিকে ইকবালের মা শিরিনা খাতুন সন্তানের জন্য কাঁদতে কাঁদতে পাগল প্রায়। তিনি বাকরুদ্ধ। বিদেশের হাসপাতালে ছেলের বাকহীন রুগ্ন অবস্থা দেখে মুর্ছা যাচ্ছেন বারবার। ইকবালের অবুঝ দুই শিশু সন্তান ইভা ও ইয়াছিন সব সময় খুজে ফেরে পিতাকে। পিতার মুখটি দেখতে তারা উদগ্রীব। অসহায় এই পরিবারটি পরিবারের একমাত্র উপর্জনক্ষম ব্যক্তিটির দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সৌদি আরবে বাংলাদেশ দুতাবাস ও সরকারের কাছে দাবী জানিয়েছেন। ইকবালের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ ০১৭২৯-৮৮৮৮৩৬ ও ০১৬২৭৯৩১৯৪৫, সৌদি আরব (+৯৬৬ কোড) ০৫৩৩৪৬৫০৬৬ সৌরভ হোসেন।