স্কুলের শৌচাগার ব্যবহারে দীর্ঘ লাইন, অস্বস্তিতে স্বাস্থ্যহানির শঙ্কা
\ ঝিনাইদহ অফিস \
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ৩০ জন মেয়ে শিক্ষার্থীকে স্কুল ড্রেস পরিহিত লাইনে দাড়িয়ে অপেক্ষা করতে দেখা যাচ্ছে। পাশেই ছেলে শিক্ষার্থীদের আরো একটি ছোটো লাইন। তারা সকলে তাদের বিদ্যালয়ের দুইটি শৌচাগারের সামনে শৌচাগার ব্যবহারের উদ্দেশ্যে এভাবেই লাইনে দাড়িয়ে থাকতে বাধ্য হয় প্রতিদিন। এমন দৃশ্যের অবতরন ঘটে ১০ নং কাষ্টভাঙ্গা ইউনিয়নের মথনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ইউনিয়নের মধ্যে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসাবে পরিচিত। এখানে ৩১৭ জন শিক্ষার্থী নিয়মিত পাঠদান করছে। অথচ দুইটি শৌচাগার ও বাইরে থাকা একটি টিউবয়েল বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীদের জন্য যথেষ্ট নয়। সরকারিভাবে অধিক শিক্ষার্থীর এই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আলাদা ভবনে আধুনিক ওয়াশবøক নির্মাণ করার প্রয়োজন থাকলেও প্রাইমারি শিক্ষা অফিসের দায়িক্তশীল কর্তা ব্যক্তিদের উদাসীনতায় তা আজও সম্ভব হয়নি। ফলে ক্ষুদে শিক্ষার্থীদেরকে স্কুলে আসা দিনগুলোতে চরম বিড়ম্বনা পোহাতে হয়। এছাড়া কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার ইউনিয়নের মাইজদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শৌচাগারের অবস্থা একই রকম। এই বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণের সময় ঐ স্থানে থাকা শৌচাগার ভেঙে ফেলা হয়। শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী শৌচাগার সে সময় তৈরি করা হলেও বর্তমানে সেটি ব্যবহার উপযোগী নয়। ফলে শিক্ষার্থীদের খুব অসুবিধা ও বিড়ম্বনায় পড়তে হয় স্কুলে এসে শৌচাগার ব্যবহারে। উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে দ্রæত স্বাস্থ সম্মত শৌচাগার স্থাপনের দাবী শিক্ষা ও অভিভাবদের। মথনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী তাহিয়া খাতুন ঢাকা পোস্টকে জানান, স্কুলে এসে শৌচাগারে যাওয়ার দরকার হলে প্রায় সময় লাইনে দাড়িয়ে অপেক্ষা করা লাগে। অনেক সময় প্রসাব, পায়খানা আটকে রাখি বাড়ি যেয়ে করবো বলে। এতে আমার অনেক কষ্টও হয়। মথনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) পারভীন সুলতানা ঢাকা পোস্টকে জানান, আমাদের শিক্ষার্থীদের সংখ্যা অনেক। সে অনুযায়ী ভালো শৌচাগার বা ওয়াশরুম না থাকায় বাচ্চাদের অনেক কষ্ট হয়। এতে করে বাচ্চারা অস্বস্তিতে ভোগে। ইতিমধ্যে আমরা আবেদন করেছি। আশা করি কর্তৃপক্ষ ব্যাপারটি গুরুত্বের সাথে দেখবেন। বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত ) শবনম-আরা ঢাকা পোস্টকে জানান, আমার বিদ্যালয়ে ২ শত’র অধিক শিক্ষার্থী। ব্যবহার উপযোগী কোন শৌচাগার না থাকায় চরম বিড়াম্বনা সহ্য করা লাগে। বিদ্যালয়টিতে শৌচাগার অতিব জরুরি। বার বার ব্যাপারটি স্যারদের জানানো হচ্ছে। অথচ কোন সমাধান পাওয়া যাচ্ছে না। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আলমগীর হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, শিশুরা দীর্ঘক্ষণ প্রসাব,পায়খানা আটকিয়ে রাখলে ব্যকটেরিয়া শরীর থেকে বের হতে পারে না। ফলে পরবর্তীতে প্রসাব পায়খানার সময় তীব্র ব্যাথা হতে পারে। এছাড়াও নানা শারীরিক জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে। উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী জেসমিন আরা ঢাকা পোস্টকে বলেন, উপজেলার ১৫০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে এলজিইডি কর্তৃক নির্মিত নতুন ভবন থাকা বিদ্যালয়গুলোতে আমরা ওয়াশবøকের কাজ করে থাকি। ইতিমধ্যে ৩০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ওয়াশবøক হস্তান্তর করেছি। কাজ চলমান রয়েছে ২০টি বিদ্যালয়ে। প্রাইমারি অফিসের তালিকা অনুযায়ী ওয়াশবøকের কাজ করা হয়। ঐ তালিকার বাইরে কাজ করার সুযোগ নেই। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত ) মাহমুদ হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, শৌচাগার সমস্যা জনিত বিদ্যালয়সমূহকে লিখিত আবেদন করতে বলা হয়েছে। ঐসব বিদ্যালয়ে দ্রæত ওয়াশবøক পাওয়ার ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন স্যারদের সাথে কথা বলা হয়েছে।