সৎ মায়ের খাওয়ানো বিষে মৃত্যু, জন্মের পরে পাইনি মায়ের ভালোবাসা

Share Now..

\ নিজস্ব প্রতিনিধি কোটচাঁদপুর \
জন্মের পরে পাইনি মায়ের ভালোবাসা। জন্ম যেন পাপ শিশু মাহমুদার। জন্মের চার ঘন্টা পর মাকে হারিয়েছে। সে থেকে বড় হয়েছে পালিত মায়ের কোলে। দীর্ঘ পাঁচ বছর পর এখন সৎ মায়ের দেয়া বিষ খেয়ে জীবন গেল তার। ৬ মার্চ দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার। মাহমুদা খাতুন (৫) কোটচাঁদপুরের ভোমরাডাঙ্গা গ্রামের শাহীন আলমের একমাত্র মেয়ে। সে ওই গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণীর ছাত্রী ছিলো। ঘটনাটি নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ও ঘৃণার সৃষ্টি হয়েছে কোটচাঁদপুরের মানুষের মনে। প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেসবুকেও)। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের দিকে চুয়াডাঙ্গার ভূলটিয়া গ্রামের জাকের মুন্সির মেয়ে আফরোজা খাতুনের বিয়ে হয় শাহিন আলমের। বিয়ের দুই বছর পর আফরোজার গর্ভে আসেন শিশু মাহমুদা। এরপর প্রসব বেদনা উঠলে আফরোজাকে নেয়া চুযাডাঙ্গার দেলোয়ার ক্লীনিকে। সবার সম্মতিতে সিজার করা হয় তাকে। জন্মগ্রহন করেন শাহিন দম্পতির কোল আলো করে মাহমুদা। ওই সময় মা মেয়ে উভয় সুস্থ্য ছিল। দেখে আনন্দের উচ্ছ¡াস চলছিল ক্লীনিকে। দেখে বাড়ি আসার পর রাত ১১ টার দিকে শাহিন আলমের কাছে ফোন আসে ক্লীনিক থেকে, তাঁর স্ত্রীকে বøাড দিতে হবে। এর কিছুক্ষন পর আবারও ফোন আসে একটা অপারেশনের অনুমতি চেয়ে। এরপর শাহিন আবারও ছুটে যান ক্লীনিকে। ক্লীনিকে যেতেই শুনতে পান তাঁর স্ত্রীর মৃত্যুর খবর। নবচিত্র প্রতিবেদকের কাছে এভাবেই শাহিন আলম বলছিলেন তাঁর মেয়ের জীবনের ঘটনা। তিনি বলেন, পরের দিন স্ত্রীর লাশ দাফন করা হয়। এ সময় শ্বশুর বাড়ির লোকজন মাহমুদাকে অন্যকে দিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। সে সময় আমি তাদের বাধা দিয়ে রক্তে ভেজা কাপড় জড়িয়ে কোলে নিয়ে বাড়ি ফিরে আসি। কোলে তুলে দিই আমার দাদী সখিনার। এরপর আমি বিয়ে না করে বড় করতে থাকি মেয়েটিকে। তিনি আরো বলেন, মেয়ের বয়স যখন দুই বছর সে সময় আমার ভিসা আসে বিদেশে যাবার জন্য। যার চেষ্টা আমি আগে থেকেই করেছিলাম। হঠাৎ করে মেয়ে রেখে পাড়ি দিলাম বিদেশে। সে থেকে যা কিছু করার করতেন দাদী সখিনা খাতুন। এভাবে পার হয় তিন বছর। এরপর গত ২০২৪ সালের প্রথম দিকে মোবাইলে বিয়ে হয় বন্যার সঙ্গে। সে থেকে বন্যা খাতুন উভয় বাড়িতে যাতায়াত শুরু করেন। এরপর গত ৭ জানুয়ারি বিদেশ থেকে বাড়িতে আসি। কয়েক দিন ভালই কাটে তাদের দাম্পত্য জীবন। এর কিছুদিন পর মেয়ে মাহমুদাকে নিয়ে শুরু হয় তাদের মধ্যে কলহ। তবে মেয়েকে সে সহ্য করতে পারতো না, সেটা তার আচারনে আমি বুঝতাম। তবে তাকে যে এভাবে পরিকল্পিত ভাবে আমার কাছ থেকে কেড়ে নিবে আমি বুঝতে পারেনি। আর এভাবে আমাকে কাদিয়ে চলে যাবে সে। ওই ঘটনায় থানায় মামলা করেছেন বলে জানিয়েছেন শাহিন আলম।
এদিকে শিশু মাহমুদার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ঘৃণার সৃষ্টি হয়েছে মানুষের মনে। প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। ৭ মার্চ সন্ধ্যায় মেয়ে হত্যার অভিযোগে স্ত্রীর বিরুদ্ধে কোটচাঁদপুর মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন স্বামী যার মামলা নম্বর ৪। দাবি উঠেছে দ্রæত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *