হাথুরুসিংহের বদলি সিমন্স কেমন কোচ?

Share Now..

গর্ডন গ্রিনিজ এসেছিলেন প্রধান কোচ হয়ে। কোর্টনি ওয়ালশ সামলেছেন পেস বোলিং কোচের দায়িত্ব। বাংলাদেশের ক্রিকেটে ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তিদের ছোঁয়া আগেই লেগেছে।

খেলোয়াড়ি জীবনে গ্রিনিজ-ওয়ালশের মতো অত বড় মাপের কেউ ছিলেন না ফিল সিমন্স। তবে কোচিংয়ের পাকা হাতে অনেক ক্যারিবিয়ানকেই পেছনে ফেলেছেন ৬১ পেরোনো সিমন্স। তার অধীনেই ২০১৬ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজে জেতে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা। দুই দফা ওয়েস্ট ইন্ডিজের কোচের দায়িত্ব সামলানো এই সিমন্সই বাংলাদেশ দলের নতুন হেড কোচ। মঙ্গলবার হঠাৎ ডাকা সংবাদ সম্মেলনে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ নিশ্চিত করেছেন- বরখাস্ত হচ্ছেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে, আর তার জায়গা নিচ্ছেন সিমন্স।
২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পর্যন্ত হাথুরুসিংহের সঙ্গে চুক্তি ছিল বিসিবির। কিন্তু বিসিবির দুটো ধারা ভাঙায় চার মাস আগেই তাকে ছাঁটাই করেছে ফারুকের বোর্ড। নতুন কোচ সিমন্স দায়িত্ব পাচ্ছেন পাকিস্তানের মাটিতে হতে যাওয়া চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পর্যন্ত।

সিমন্সকে কোচ হিসেবে পেয়ে খুশি বিসিবি সভাপতি। তিনি বলেছেন, ‘তিনি একজন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান, অনেক দেশের প্রধান কোচ ছিল। ফিল সিমন্স। তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজে দুই টার্মে প্রধান কোচ ছিলেন, এর বাইরে আয়ারল্যান্ড, জিম্বাবুয়ে… হয়তো ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাইরে অত বড় নাম নেই। তবে তিনি একজন কোচ যার ট্র্যাক রেকর্ড ভালো। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটেও অনেক কাজ করেছে, পাকিস্তানে এখনও সে কাজ করছে। সমৃদ্ধ ক্যারিয়ার।’ ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ২৬ টেস্ট ও ১৪৩ ওয়ানডে খেলা সিমন্সের কোচিং অধ্যায় শুরু ২০০২ সালে। শুরুটা জিম্বাবুয়ের হারারে-ভিত্তিক এক একাডেমী দিয়ে। বছর দুয়েক পর জিম্বাবুয়ে জাতীয় দলের প্রধান কোচের পদে জিওফ মার্শের জায়গা নেন তিনি।

ওই সময় জিম্বাবুয়ে জাতীয় দলের একঝাঁক সিনিয়র খেলোয়াড় সরে দাঁড়ালে টেস্ট মর্যাদা হারাতে বসেছিল আফ্রিকার দেশটি। সিমন্সের ছোঁয়ায় সে যাত্রায় বেঁচে যায় জিম্বাবুয়ে। পরে দায়িত্ব নেন আয়ারল্যান্ড জাতীয় দলের প্রধান কোচের। এখানেই কোচিং ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বেশি ও সুন্দর সময় পার করেছেন এই ক্যারিবিয়ান।

২০০৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর আইরিশদের দায়িত্ব নিয়ে ছিলেন ২০১৫ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ পর্যন্ত। তার অধীনে আয়ারল্যান্ড বেশ কয়েকটি শিরোপার জেতার পাশাপাশি খেলেছে আইসিসির সবগুলো বড় টুর্নামেন্টে। যার মধ্যে ২০১১ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আইরিশদের ঐতিহাসিক জয় বিশাল অর্জন হয়ে আছে। এছাড়া ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপেও সিমন্সের আয়ারল্যান্ড চমক দেখিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে। দীর্ঘ ৮ বছরের দায়িত্বকালে আইরিশদের ২২৪ ম্যাচে প্রধান কোচ ছিলেন এই সিমন্স।

২০১৫ সালের মার্চে ডাক আসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে। দেশের কোচ হওয়ার প্রস্তাব ফেরাতে পারেননি সিমন্স। ওয়েস্ট ইন্ডিজে ফিরে পেয়ে যান ক্রিকেট জীবনের সবচেয়ে বড় সাফল্য। ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজ শিরোপা জিতেছিল তার অধীনেই।

প্রধান কোচের দায়িত্বে অনেকদিন ছিলেন, ২০১৭ সালে এসে হয়তো একটু অন্য কিছু করতে চাইলেন তিনি। সেই চিন্তা থেকেই নতুন ভূমিকায় সামনে আসেন সিমন্স। এবার আফগানিস্তান জাতীয় দলে ব্যাটিং কোচ তিনি। অবশ্য কিছুদিন পরই দলটির প্রধান কোচের চেয়ারে বসেন এই ক্যারিবিয়ান।

২০১৯ সালে আবার ওয়েস্ট ইন্ডিজে ফেরেন প্রধান কোচ হয়ে। ২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর ছাড়েন এই দায়িত্ব।

জাতীয় দল ছাড়াও ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে কাজ করেছেন সিমন্স। কানাডার গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট ছাড়াও কাজ করেছেন পাকিস্তান সুপার লিগে। পাপুয়া নিউগিনির ‘বিশেষজ্ঞ কোচ’ হিসেবেও কাজ করেছেন ২০২৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে।

এবার সিমন্স বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ। দিনকয়েক পর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শুরু হতে যাওয়া দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ দিয়েই শুরু হচ্ছে সিমন্সের বাংলাদেশ-অধ্যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *