হামাস নেতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে লেবাননে ছড়িয়েছে গাজা সংঘাত
ইসরায়েলি বাহিনী বুধবার থেকে গাজায় বোমা হামলা জোরদার করেছে। লেবাননের রাজধানী বৈরুতে হামাসের ডেপুটি নেতাকে হত্যার পর সংঘাত দেশটিতেও ছড়িয়ে পড়েছে। এরপরই উত্তর ফিলিস্তিনি ছিটমহলের একটি শরণার্থী শিবিরের বেসামরিকদের চলে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে ইসরায়েল।
মঙ্গলবার লেবাননের রাজধানীতে ড্রোন হামলায় সালেহ আল-আরোরি নিহত হওয়ার খবরটি নিশ্চিত বা অস্বীকার কোনোটিই করেনি ইসরায়েল। তবে সামরিক মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, ইসরায়েলি বাহিনী উচ্চ প্রস্তুতির নিয়ে রেখেছে এবং যে কোনও পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত আছে।
এই হত্যাকাণ্ডটি হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার তিনমাসের যুদ্ধ অধিকৃত পশ্চিম তীর, লেবান-ইসরায়েল সীমান্তে থাকা হিজবুল্লাহ বাহিনী এমনকি লোহিত সাগরের শিপিং লেননসহ পুরো অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ার আরও একটি লক্ষণ।
৭ অক্টোবর হামাসের হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল যে বিধ্বংসী অভিযান গাজায় শুরু করেছে তার মধ্যে এ পর্যন্ত হত্যার শিকার হামাসের প্রথম কোনো সিনিয়র রাজনৈতিক নেতা হলেন আরৌরি (৫৭)। তিনি থাকতেন বৈরুতে।
হামাসের পলিটব্যুরোর সদস্য হোসাম বদরান অরৌরির প্রশংসায় বলেছেন, ‘আমরা অপরাধী দখলদারকে (ইসরায়েল) বলি, আমাদের মধ্যে যুদ্ধ খোলা আছে।’
ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে তার বিরুদ্ধে নাগরিকদের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ এনেছিল। তবে হামাসের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, তিনি গাজা যুদ্ধের ফলাফল ও হামাস-নিয়ন্ত্রিত ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি নিয়ে কাতার এবং মিসর পরিচালিত আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন।
বুধবার বিকেলে বৈরুতে ভাষণ দেওয়ার কথা ছিল হিজবুল্লাহ প্রধান সাইয়্যেদ হাসান নাসরাল্লাহর। এর আগে তিনি লেবাননের মাটিতে হত্যাকাণ্ড চালানোর বিরুদ্ধে ইসরায়েলকে সতর্ক করে কঠোর প্রতিক্রিয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন।
হামাসের মিত্র ভারী অস্ত্রে সজ্জিত হিজবুল্লাহ গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে লেবাননের দক্ষিণ সীমান্তে ইসরায়েলের সঙ্গে নিয়মিত গোলাগুলি করছে। লেবাননের ভূখণ্ডে ১০০’র বেশি হিজবুল্লাহ যোদ্ধা ও দুই ডজন বেসামরিক নিহত হয়েছে। পাশাপাশি ইসরায়েলে কমপক্ষে নয়জন ইসরায়েলি সৈন্য নিহত হয়েছে।
আরৌরির হত্যার পর লেবাননে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন বলেছে, এটি সীমান্তের উভয় পাশের মানুষের জন্য বিধ্বংসী পরিণতি হতে পারে। সংস্থাটি যুদ্ধ বৃদ্ধির সম্ভাবনা নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।