১৩ লাখ পরীক্ষার্থীর কোথায় পরীক্ষা হবে, দ্বিধায় অধিদপ্তর
আগামী ১ এপ্রিল থেকে পাঁচটি ধাপে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা আয়োজনের ঘোষণা দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই )। নির্দেশনা অনুযায়ী, শুধু ঢাকা মহানগরীতেই এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু হঠাৎ করেই পরীক্ষা আয়োজন নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়েছে অধিদপ্তর। এই পরীক্ষা শুধু ঢাকা মহানগরীতে হবে নাকি জেলা পর্যায়েও হবে তা নিয়ে এখনো দোলাচলে ডিপিই।
পরীক্ষার আর সাত দিন বাকি । অথচ মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা গতকাল জানিয়েছেন, এখনো পরীক্ষা আয়োজনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। আগামী দু-এক দিনের মধ্যেই বিষয়টি জানা যাবে। তবে অধিদপ্তর বা মন্ত্রণালয় এ বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিক কিছু বলছে না। এদিকে পরীক্ষার দিন, তারিখ ও স্থান নিয়ে বারবার সিদ্ধান্ত পরিবর্তনে দুর্ভোগ বাড়াচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রার্থীরা।
পরীক্ষার তারিখ ও স্থান নিয়ে ইতিমধ্যে একাধিক বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়। সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন জানিয়েছেন—বিষয়টি নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। জেলা পর্যায়ে পরীক্ষা নেওয়া যায় কি না, সেটা নিয়েও নতুন করে ভাবা হচ্ছে। ১৩ লাখের বেশি পরীক্ষার্থীর এই পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। এর আগে আগামী আট এপ্রিল থেকে নিয়োগ পরীক্ষা শুরুর কথা বলা হয়েছিল, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলমের সই করা পরীক্ষার কেন্দ্র নির্বাচনসংক্রান্ত চিঠিতে। এতে বলা হয়েছিল, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ ২০২০-এর লিখিত পরীক্ষা ১, ৮, ১৫ ও ২২ এপ্রিল এবং ১৩ মে বিকাল ৩টায় নিতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, জেলায় পরীক্ষা নেওয়ার অতীত রেকর্ড ভালো না। বিগত সময়ে জেলা পর্যায়ে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস, প্রক্সিসহ নানা অনিয়ম ঘটেছে। জেলা পর্যায়ে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলে সেখানে ভয়াবহ দুর্নীতি হতে পারে। এর প্রমাণ বিগত বছর ও চলতি বছর একাধিক নিয়োগ পরীক্ষায় পাওয়া গেছে। যেহেতু শুধু এমসিকিউ পদ্ধতিতে পরীক্ষা হয়— এ কারণে অসাধুচক্র সহজেই দুনীর্তির সুযোগ পেতে পারে। বিষয়টি আমলে নিয়েই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর শুধু ঢাকায় আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে। শুধু ঢাকায় পরীক্ষায় নেওয়ার দাবিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে কর্মসূচি পালন করছে প্রার্থীরা
অন্যদিকে ঢাকায় পরীক্ষা আয়োজন নিয়েও নানা আপত্তি রয়েছে। এতসংখ্যক পরীক্ষার্থী ঢাকায় আসার ক্ষেত্রে চরম ভোগান্তিতে পড়তে পারে। এ ছাড়া যাদের আত্মীয়স্বজন ঢাকায় নেই, তারা কোথায় থাকবেন। এতসংখ্যক পরীক্ষার্থীকে ঢাকায় এসে হোটেল ভাড়া করতে থাকতে হবে। এতসংখ্যক হোটেলে সিট আছে কি না তা নিয়েও নানা ধরনের প্রশ্ন উঠেছে। এ ছাড়া এই পরীক্ষায় নারী প্রার্থী বেশি। এ কারণে নারী প্রার্থীরা ঢাকায় এসে পরীক্ষায় অংশ নিতে গিয়ে নানা ধরনের ভোগান্তি ও হয়রানির শিকার হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষার তারিখ ও স্থান নির্ধারণ করে দ্রুত বিজ্ঞপ্তি জারির দাবি জানিয়েছে।
প্রাথমিকের ইতিহাসে এটিই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি। সহকারী শিক্ষকের ৩২ হাজার ৫৭৭টি শূন্য পদে নিয়োগের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। ইতিমধ্যে আরো ১০ হাজারেরও বেশি সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য হয়ে পড়েছে। এতে বিদ্যালয়গুলোয় শিক্ষকঘাটতি দেখা দিয়েছে। এ সমস্যার সমাধানে মন্ত্রণালয় আগের বিজ্ঞপ্তির শূন্য পদ ও বিজ্ঞপ্তির পরের শূন্য পদ মিলিয়ে প্রায় ৪৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
Rise to the top – Compete, play, and win! Lucky Cola