২২ ঘণ্টা পর গাজী টায়ার কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে: ফায়ার সার্ভিস

Share Now..

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে গাজী টায়ার কারখানায় দেওয়া আগুন ২২ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে এসেছে। সোমবার (২৬ আগস্ট) সাড়ে ৭টার দিকে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়। এর আগে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট ঘটার পর থেকেই আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। 

ফায়ার সার্ভিসের এক বিবৃতিতে বলা হয়, আজ সন্ধ্যা ৭টা ৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে আমাদের প্রতিনিধির পাঠানো খবর অনুযায়ী সন্ধ্যা ৭টার দিকে সেখানে লুটপাটের কোনো ঘটনা ঘটেনি।  এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত প্রায় ১৭৩ জন নিখোঁজের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে নিখোঁজের বিষয়টি নিয়ে অস্পষ্টতা তৈরি হয়েছে। নিখোঁজের বিষয়টি নিশ্চিত করেন ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. রেজাউল করিম (প্রশিক্ষণ পরিকল্পনা ও উন্নয়ন)।

তবে সোমবার বিকালে ফায়ার সার্ভিস মিডিয়া সেল জানিয়েছে, সংস্থাটির পক্ষ থেকে কোনো নিহত বা নিখোঁজ ব্যক্তির তালিকা তৈরি করা হয়নি। ‘স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি তাদের ফোন নম্বর ফায়ার সার্ভিসকে দিয়ে কোনো ভিকটিম পাওয়া গেলে তাদের জানানোর অনুরোধ করেছেন কেবল,’ এক বার্তায় জানায় মিডিয়া সেল।

অভিযোগ রয়েছে, রোববার রাত ৯টার দিকে কারখানাটিতে আগুন দেওয়ার আগে লুটপাট চালায় দুর্বৃত্তরা। একই দাবি করেছেন কারখানার সহকারী মহাব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম।

তিনি বলেন, গতকাল বিকাল থেকে কয়েকশ লোক কারখানার ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। লুটপাট শেষে রাতে একাধিক ভবনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

‘লুটপাট চলাকালে থানাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন দপ্তরে ফোন করা হয়, কিন্তু কোনো সাহায্য পাওয়া যায়নি,’ বলেন এ কর্মকর্তা।

ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম বলেন, ‘ভেতরে থাকা টায়ার উৎপাদনের দাহ্য পদার্থ ও কাঁচামালের কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা কঠিন হয়ে পড়েছে।’

সোমবার সকালে লে. কর্নেল রেজাউল করিম ঘটনাস্থলে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ‘১২টি ইউনিট ঘটনাস্থলে কাজ করছে এবং এখন পর্যন্ত ১৪ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।’

তবে প্রচুর প্লাস্টিক জাতীয় কাঁচামাল ও দাহ্য বস্তু থাকার কারণে আগুন নেভাতে বেগ পেতে হচ্ছে বলে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা জানিয়েছেন।

ঘটনার পর পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা নিয়েও অভিযোগ উঠেছে। কারখানার কর্মকর্তাদের দাবি, হামলার খবর দেয়ার পর পুলিশ কিংবা থানা থেকে কোনো সহায়তা পাওয়া যায়নি।

সাইফুল ইসলাম জানান, পুলিশ না এলেও পরে সেনাবাহিনীর একটি টিম কারখানার গেটে আসে। ‘তবে তারা ১০ মিনিটের বেশি অবস্থান করেননি। আগুন দেয়ার পর ফায়ার সার্ভিস ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আসে।’

ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আগুন লাগার সঠিক কারণ ও ক্ষতির পরিমাণ তদন্তের পর জানা যাবে।

উল্লেখ্য, গাজী গ্রুপের মালিক গোলাম দস্তগীর গাজী আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী এবং নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। গতকাল ভোরে রাজধানীর শান্তিনগর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন তিনি।

এর আগে গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের সময় গাজী গ্রুপের রূপসী ও কর্ণগোপের দুটি কারখানায় হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *