৩৭ বছরের ঝুকিপুর্ন ভবনে চলছে পাঠদান যে কোন সময় দুর্ঘটনার শঙ্কা
স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহঃ
নামেই হরিণাকুন্ডু সরকারী লালন শাহ কলেজ। অথচ চারটি ভবনের ৩টিই ঝুঁকিপূর্ণ। খসে পড়ছে সিলিংয়ের পলেস্তারা। ভবনের দেয়াল ও মেঝে ফেটে চৌচির। ভাঙাচোরা দরজা জানালায় অরক্ষিত জরুরী কাগজপত্র। বর্ষাকালে হাটু পানি মাড়িয়ে যেতে হচ্ছে শ্রেণিকক্ষে। আর এভাবেই চলছে ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু সরকারী লালন শাহ অনার্স কলেজ। শিক্ষক ও শিক্ষর্থীরা জানান, সংস্কার করা না হলে যে কোনো সময় ভবন ধ্বসে ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা। তবুও একাডেমিক ভবনের সংকটে পরিত্যক্ত করা হয়নি ১০ বছর আগের ঝুঁকিপূর্ণ ওইসব পুরানো ভবন। নিরুপায় হয়ে সেখানে চলছে পাঠদান। জানা গেছে, সাধুহাটি-তৈলটুপি সড়কের গা ঘেঁষে ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। ১৯৮৬ সালে জাতীয়করণ করা হয় কলেজটি। এর আগের বছর ১৯৮৫ সালে প্রশাসনিকসহ ওই ৪টি ভবন নির্মাণ করা হয়। দীর্ঘ ৩৭ বছর ধরে ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে পুরানো ভবনগুলো। কলেজের নিজস্ব অর্থায়নে কয়েকবার সংস্কার করা হলেও নতুন ভবন দরকার। ১৯৯৫ সালে ডিগ্রি এবং ২০১০ সালে স্নাতক পর্যায়ে উন্নিত করা হয় কলেজটিকে। বর্তমানে ৬টি বিষয়ে সেখানে স্নাতকের কোর্স চালু রয়েছে। ৪ হাজারের ওপরে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। কর্মরত রয়েছেন ৪৫জন শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী। প্রতিবছর বোর্ড পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করলেও ভবন নির্মানে কোন পদক্ষেপ নেই। কলেজের শিক্ষকরা অবিযোগ করেন, কলেজের সিরাজ শাহ ভবনে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি ক্লাস হয়। এই ভবনের সিলিংয়ের পলেস্তারা খসে পড়ছে। চারিদিকের দেয়াল ও মেঝেতে ফাটল ধরেছে। জানালা দরজা ভেঙ্গে একাকার। মেঝের সিমেন্ট ও খোয়া উঠে মাটিতে ঠেকেছে। দুর্ঘটনার আতংক নিয়ে ক্লাস করে শিক্ষার্থীরা। দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী আল আমিন জানান, তাদের অনেক বন্ধুর মাথায় পলেস্তারা খসে পড়েছে। এর আগে অনেকে আহতও হয়েছেন। সবসময় ভয়ে ভয়ে ক্লাস করার কথা উল্লেখ করেন আল আমিন। হাবিবুল্লাহ নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, কখন যে ভবন ধ্বসে পড়ে এই শঙ্কায় রয়েছি আমরা। তাই ক্লাসে স্যারের কথার চেয়ে নিজেদের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা করতে সবায় সতর্ক থাকি। গত বছর তার মাথার ওপর পলেস্তারা খসে পড়েছিল বলে তিনি জানান। ক্লাস করার সময় প্রায় চুন, সিমেন্ট পড়ে শিক্ষার্থীদের চোখেমুখে ক্ষত সৃষ্টি হয়। কলেজের অধ্যক্ষ রেজাউর রহমান বলেন, আমি মাত্র একমাস হলো এখানে যোগদান করেছি। এখানকার ভবনগুলো দেখে আমি বিস্মিত হয়েছি। একটি ভবনও শিক্ষার্থীর জন্য নিরাপদ নয়। অধ্যক্ষের ব্যবহৃত ভবনের সিলিংয়ের বীম ভেঙে মাথার ওপর পড়ার উপক্রম হয়েছে। আমি ইতোমধ্যে উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি নতুন ভবনের জন্য। কিন্তু এটি সময় সাপেক্ষ। আবার আপাতত সংস্কার করলেও এগুলো পরিত্যক্ত ঘোষনা করা যাবে না। কারণ পরিত্যক্ত হওয়ার পর সেগুলো সংস্কার করার কোনো সুযোগ থাকে না। দ্রুত প্রতিষ্ঠানটিতে নতুন নতুন ভবন নির্মাণ না করা হলে শিক্ষার্থী ধরে রাখা সম্ভব হবে না বলেও তিনি শঙ্কা প্রকাশ করেন।
Your ultimate gaming adventure starts now Lucky Cola