দেশে ইনসুলিন বাবদ বছরে খরচ ১৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকা
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস বলেছেন, ঢাকা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহর, এ কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) প্রথম জাতীয় সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের প্রথম পর্বে যোগ দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর একটি হোটেলে তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলন চলছে। এ সম্মেলন শেষ হবে আজ। বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামসহ ৩০টি দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান এ সম্মেলনের আয়োজন করেছে।
ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস বলেন, বাংলাদেশে এনসিডি (অসংক্রামক রোগ) একটি নতুন ও চলমান বোঝা। ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, ক্যানসার রোগী উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। সরকার অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের আটটি বিভাগীয় শহরে ক্যানসার হাসপাতাল হচ্ছে। হৃদরোগের চিকিৎসায় গত দুই দশকে দেশে অনেক উন্নতি হয়েছে। উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত সব হাসপাতালে এনসিডি কর্নারে পাঁচটি ওষুধ বিনা মূল্যে দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘সিটি কর্পোরেশন হিসেবে নগর স্বাস্থ্যের দায়িত্ব আমাদের। এনসিডির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমরাও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে সহায়তা করার নিশ্চয়তা দিচ্ছি। নগরবাসীর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ঢাকা সিটিতে পার্ক ও ফুটপাত স্থাপন করা হচ্ছে।’
সম্মেলনের প্রথম পর্বে স্বাস্থ্য অর্থ ইউনিটের মহাপরিচালক মোহাম্মদ শাহাদাত হোসাইন মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের দেশে কোভিডে যে মৃত্যু, অসংক্রামক কোনো কোনো রোগে মৃত্যু তার চেয়ে ১০ থেকে ২০ গুণ বেশি। শুধু ধূমপানের কারণে দেশে প্রতিদিন গড়ে মৃত্যু হচ্ছে সাড়ে ৩০০ মানুষের। ক্যানসার, টিবি, হার্ট ডিজিস সবগুলোই অসংক্রামক রোগ এবং এগুলোর যে মৃত্যুর হার, প্রত্যেকটির ক্ষেত্রে তা কোভিডের তুলনায় পাঁচ গুণ। কিন্তু কেন যেন আমরা শুধু সংক্রমণ রোগের প্রতি বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি।
বিভিন্ন গবেষণার তথ্যের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশে এই মুহূর্তে ৮৪ লাখ মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। সবাইকে পরীক্ষা করলে এ সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। তাদের শুধু ইনসুলিনের জন্য বছরে খরচ হচ্ছে ১৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। শুধু ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে অন্য বিভিন্ন অসংক্রামক রোগ থেকেও রক্ষা পাওয়া যায়।’ গবেষণার বরাত দিয়ে শাহাদাত হোসাইন মাহমুদ আরো বলেন, ‘বাংলাদেশে যত মৃত্যু হয়, তার ৭০ শতাংশই অসংক্রামক রোগে। ২০৪০ সালে এই হার হয়তো ৮০ শতাংশে উঠে যাবে।’
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন, সাবেক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর আরবান হেলথ (আইএসইউএইচ) এর প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক জো আইভি বাফর্ড, বিশ্বস্বাস্হ্য সংস্থার এনসিডি টিম লিডার (বাংলাদেশ) সাধনা ভাগওয়াত, ওয়ার্ড ওরবেস্টি ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক জন উইলডিং, অরবিস ইন্টারন্যাশনালের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. মুনির আহমেদ, ইউনিভার্সাল মেডিক্যাল রিসার্স সেন্টারের রিসার্স প্রধান অধ্যাপক ডা. রেদওনুর রহমান, বিএসএমএমইউর পাবলিক হেলথ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. ফারিহা হোসেন।