পুলিশের হাতে জ্বীনের বাদশা গ্রেফতার

Share Now..

স্টাফ রিপোটারঃ

ঝিনাইদহে প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা ও স্বর্ণালংকার হাতিয়ে নেওয়া জীনের বাদশা চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার ( ২৬ ফেব্রুয়ারী) সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন জেলা পুলিশ সুপার মুনতাসিরুল ইসলাম।

রেনুকা খাতুন সদর উপজেলার খাজুরা গ্রামের মোঃ সিরাজুল ইসলামের মেয়ে ও প্রবাসী শাহ আলমের স্ত্রী।

শুক্রবার বিকেলে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বিশ্বনাথপুর এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার কৃত প্রতারক চক্রের সক্রিয়রা হলো , গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ থানার বিশ^নাথপুর গ্রামের মিন্টু পোদ্দারের ছেলে মোঃ রায়হান (২৫) ও মোঃ তুহিন (২৩), মোঃ আজল হকের ছেলে মোঃ জিয়াউর (২২), শাকপালা গ্রামের শ্রী নারায়ন দাসের ছেলে মিলন দাস (৩৫)। তারা এর আগের প্রতারনার মাধ্যমে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে বলে অবিভোযোগ আছে বলে জানায় পুলিশ।

ভুক্তভূগি রেনুকা খাতুন জানায়, প্রথমে প্রতারক চক্র মোবাইলে রাতে ফোন করে মা বলে ডেকে জ¦ীনের বাদশা পরিচয় দেয়। তার কোন সন্তান নেই বলে তাকে বাবা বলে ডাকতে বলে। এরপর কোরআন হাদিস সম্পর্কে অনেক কথা বলে। তখন উনাকে বিশ^াস করি। সে বলে আপনি অনেক ভাগ্যবান, আল্লাহ্র তরফ থেকে আপনাকে বড় সম্পদ দান করা হয়েছে। বড়ির পিছনে পুকুরে ৭ কলসি স্বর্ণ রাখা আছে। সেগুলো পেতে হলে হাদিয়া স্বরুপ একটি জায়নামাজের পাটি দিতে হবে। যার দাম ৫৬০ টাকা। এ কথা বলে একটি নগদ একাউন্ট নম্বর দিয়ে টাকা পাঠাতে বলে। তখন সরল বিশ^াসে টাকা পাঠিয়ে দিই।

তিনি আরো জানায়, ওই প্রতারক পুররায় ফোন করে স্বর্ণের কলস ও হাদিয়ার বিষয়ে কাউকে বললে সন্তাদের মুখ দিয়ে রক্ত বমি হয়ে মারা যাবার ভয় দেখায়। এরপর বলে আরাপপুর ডাচবাংলা ব্যাংকের পিছনে একটি স্বর্ণের পুতুল আছে। সেটা নিতে হলে তোকে কিছু স্বর্ণ দিতে হবে। আমার দেওয়া স্বর্ণগুলো পুকুরে থাকা ৭ কলসি মধ্যে রাখা হবে। তখন আমি চার ভরি স্বর্ণ নিয়ে ওখানে রেখে দিয়ে একটা স্বর্ণের পুতুল নিয়ে আসি। তখন আমার বিশ^াস আরো বেড়ে যায়। এরপর বিভিন্ন ছলনা করে আমার থেকে ৪ ভরি স্বর্ণের গহনাসহ মোট ৬ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তার এই ঘটনাগুলো তার স্বামীসহ পরিবারের কাউকেই জানানি তিনি। প্রতারিত হবার পর ভাইয়ের সহযোগীতায় থানায় মামলা করলে পুলিশ তাদের খুজে বের করে।

পুলিশ সুপার মুনতাসিরুল ইসলাম জানান, ঝিনাইদহ শহরের খাজুরা গ্রামের এক নারীকে ৭ কলসি স্বর্ণ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে গত বছরের ৩ ডিসেম্বর থেকে গত ৩ মাস যাবত ওই নারীর কাছ থেকে ৪ ভরি স্বর্ণালংকারসহ ৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। প্রতারণার বিষয়টি টের পেয়ে ওই নারী গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ঝিনাইদহ সদর থানায় মামলা করে। মামলা দায়েরের পর জেলা পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেষ্টিগেশন সেল বিকাশ ও নগদ একাউন্টের সুত্র ধরে প্রতারকদের চিহ্নিত করে। পরে অভিযান চালিয়ে গোবিন্দগঞ্জের দুর্গম এলাকা থেকে রায়হান, তুহিন, জিয়াউর ও মিলন দাসকে গ্রেফতার করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *