বন্যার পানিতে দিশেহারা স্বজনদের জন্য উদ্বিগ্ন তারা

Share Now..

দেশের ক্রীড়াঙ্গনে অনেক তারকার জন্ম সিলেটে। বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে অন্যতম তিন কিংবদন্তি কায়সার হামিদ, জুয়েল রানা, আলফাজ আহমেদরা সিলেট থেকে বেড়ে উঠেছেন। সিলেট-সুনামগঞ্জের বন্যার প্লাবনে শিকার হয়েছেন তারাও।

জাতীয় ফুটবল ও মোহামেডানের সাবেক তারকা ফুটবলার কায়সার হামিদ মাত্র কয়েক দিন আগে ভাইকে হারিয়েছেন। সেই শোক কাটতে না কাটতেই এখন নিজ জেলার দুঃসংবাদ। সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি তার পরিবার-আত্মীয় স্বজনের বিষয়ে বলেন, ‘সিলেটে আমাদের দাদা বাড়ি শহরে। সেখানে এখনো পানি উঠেনি। তবে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে যে কোনো সময় পানি উঠতে পারে। নানীর বাড়িতে অবশ্য বেশ পানি উঠেছে। সেখানে আমাদের অনেক আত্মীয় বেশ কষ্টে আছে।’

কায়সার হামিদের মা দেশের আরেক কিংবদন্তী ক্রীড়াবিদ রাণী হামিদ। তাদের গ্রামের বাড়ি বন্যায় আক্রান্ত।

১৯৯৯ সাফ গেমসে বাংলাদেশকে ফুটবলে স্বর্ণ এনে দিয়েছিলেন আলফাজ আহমেদ। সেই স্বর্ণজয়ী ফুটবলারের জন্ম সিলেটে। শৈশব সিলেটে কাটলেও বাবার চাকরিসূত্রে ঢাকায় থেকেছেন আলফাজ। সিলেটে আলফাজদের এখন নিজস্ব বাড়ি না থাকলেও চাচাদের বাড়ি রয়েছে। অব্যাহত বৃষ্টি ও বন্যায় আলফাজের চাচার বাড়ি পানির মধ্যে, ‘বাটইসারিতে আমার চাচী, চাচাতো ভাই, ফুফাতো ভাই-বোনরা রয়েছে। তারা পানির মধ্যে বন্দিজীবন যাপন করছেন।’

কায়সার-আলফাজ-জুয়েলদের মতো বর্তমান জাতীয় দলেও একাধিক ফুটবলার সিলেট অঞ্চলের। জাতীয় দলে প্রায় নিয়মিত খেলা সাদ উদ্দিন, বিপলু আহমেদ, মাসুক মিয়া জনি, মাহবুবুর রহমান সুফিলের বাড়ি সিলেটে। আগামী পরশু দিন প্রিমিয়ার ফুটবল লিগ শুরু হচ্ছে। লিগের পাশাপাশি তাদের মাথায় ভর করেছে নিজ জেলার বন্যা দুর্গতদের কথা।

মাহবুবুর রহমান সুফিল ও মাসুক মিয়া জনির বাড়ি সিলেটের শ্রীমঙ্গলে। তাদের বাড়ি ও পরিবার নিরাপদ অবস্থানে আছেন বলে জানান, ‘আমাদের বাড়ি অপেক্ষাকৃত উচু জায়গায় হওয়ায় তেমন সমস্যা হয়নি এখনো। সবাই নিরাপদ ও স্বাভাবিক রয়েছে।’ বিপলু আহমেদ ও সাদ উদ্দিনের বাড়ি জেলা শহরে। সেখানে অনেক জায়গায় পানি উঠলেও তাদের বাড়ি এখনো পানির বাইরে রয়েছেন বলে জানান সুফিল ও জনি, ‘ওদের বাড়ির কাছাকাছি পানি থাকলেও এখনো বাড়িতে পানি উঠেনি।’

জনি-বিপলুদের বাড়িতে পানি না উঠলেও তাদের ক্লাবের সতীর্থ গোলরক্ষক হামিদুর রহমানের বাড়িতে পানি উঠেছে,‘আমাদের কিংসের গোলরক্ষক হামিদের বাড়িতে বেশ পানি। সকালে ও বলল প্রায় কোমর পানি ওর বাড়িতে’ বলেন জনি।

হামিদের মতো অনেক ক্রীড়াবিদ-সংগঠকের বাড়িতে পানি উঠেছে। সিলেট জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদিকা মারিয়ম চৌধুরি মাম্মিও বাড়িতে হাটু পানি, ‘খুব কঠিন সময় পার করছি। সরকার ও সবার সহযোগিতায় আশা করি সিলেটবাসী দ্রুত এ থেকে মুক্তি পাবে।’ তার দেয়া তথ্য মতে, সিলেটের অনেক স্থানীয় ক্রীড়াবিদ ও সংগঠক পানিবন্দী সময় কাটাচ্ছেন।

বাংলাদেশ অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুর রকিব মন্টুর বাড়ি সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ। সেই এলাকা এখন পর্যন্ত নিরাপদ বলে জানান, ‘ফেঞ্চুগঞ্জ সিলেটের অন্যতম উঁচু এলাকা। এখন পর্যন্ত ফেঞ্চুগঞ্জের পরিস্থিতি সেই রকম অবনতি হয়নি। তবে ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢল এবং সিলেটে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলেও ফেঞ্চুগঞ্জেও পানি আসতে পারে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *