খুলনায় গণপরিবহন ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ, চরম ভোগান্তিতে সাধারণ মানুষ
এস আর নিরব
খুলনায় বাস চলাচল বন্ধের পর এবার লঞ্চ চলাচলও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ১০ দফা দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার ঘর্মঘট ডেকেছে বাংলাদেশ লঞ্চ লেবার অ্যাসোসিয়েশন। ফলে সারাদেশ থেকে খুলনা কার্যত বিছিন্ন হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে সাধারণ যাত্রীদের ভোগান্তি সীমাহীন পর্যায়ে পৌঁছেছে।
বাংলাদেশ লঞ্চ লেবার অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন ধর্মঘটের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ১০ দফা দাবিতে তারা যাত্রীবাহী লঞ্চে ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট শুরু করেছেন। ফলে ২টি রুটে ৬টি লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে।
খুলনার বিএনপির গণসমাবেশ আগামীকাল। এর মধ্যে চলছে দুই দিনের ‘পরিবহন ধর্মঘট’। সড়ক ও মহাসড়কে নছিমন, করিমন, ভটভটি, ইজিবাইকসহ সব অবৈধ যান চলাচল বন্ধের দাবিতে এ ধর্মঘটের ডাক দেয় জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ, মাইক্রোবাস মালিক সমিতি। ধর্মঘটের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে খুলনা মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন। ফলে খুলনায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
শুক্রবার (২১ অক্টোবর) সকাল থেকে খুলনার সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। ঢাকা-খুলনা রুটের বাস ঢাকা থেকে যশোর ও গোপালগঞ্জ পর্যন্ত চলছে। সাতক্ষীরামুখী যেসব বাস যশোর হয়ে চলে, সেগুলো চলছে। তবে যেগুলো খুলনা হয়ে চলে, সেগুলো বন্ধ রয়েছে। মূলত খুলনায় কোনো গাড়ি প্রবেশ করতে ও খুলনা থেকে বিভিন্ন রুটে গাড়ি ছেড়ে যাচ্ছে না।
গণপরিবহণ বন্ধ থাকায় অলস সময় পার করছেন পরিবহন সংশ্লিষ্ট শ্রমিক-কর্মচারীরা। তাইতো সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল প্রাঙ্গণে তারা আয়োজন করেছেন প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচের।
এদিকে যানবাহন বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে সমাজসেবা কার্যালয়ের ইউনিয়ন সমাজকর্মী নিয়োগ পরীক্ষা দিতে আসা ব্যক্তিদের ভোগান্তি ছিল সবচেয়ে বেশি। সব রুটের বাস বন্ধ থাকায় সকাল থেকে ইজিবাইক, ভ্যানে করে খুলনায় এসেছেন তারা।
গত বুধবার সকালে খুলনা জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ, মাইক্রোবাস মালিক সমিতির বৈঠকের পর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত অমান্য করে সড়ক ও মহাসড়কে অবৈধভাবে নছিমন, করিমন, মাহেন্দ্র, ইজিবাইক ও বিআরটিসির গাড়ি চলাচল করছে। ২০ অক্টোবরের মধ্যে প্রশাসন যদি সড়কে ওই অবৈধ যান চলাচল ও কাউন্টার বন্ধ না করে, তাহলে পরবর্তী দুই দিন ২১ ও ২২ অক্টোবর মালিক সমিতির সব রুটের গাড়ি বন্ধ থাকবে।
এদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, শনিবার (২২ অক্টোবর) বিএনপির খুলনা বিভাগীয় গণসমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে এ বাস ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে।
তবে মালিক সমিতি বলছে, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি ও মহাসড়কে নসিমন, করিমন, মাহিন্দ্রা, অতুল, ইজিবাইকসহ তিন চাকার অবৈধ যানবাহন চলাচলের প্রতিবাদে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে।
খুলনা মহানগর বিএনপির আহবায়ক শফিকুল আলম মনা অভিযোগ করে বলেন, শনিবার খুলনার সোনালী ব্যাংক চত্বরে বিএনপি বিভাগীয় গণসমাবেশ ডেকেছে। এই গণসমাবেশে নেতাকর্মীদের আসা ঠেকাতে সরকারের নির্দেশে বাস মালিক সমিতি এই ধর্মঘট ডেকেছে।
এসব অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছেন বাস মালিক সমিতির সহ-সভাপতি কাজী এনায়েত হোসেন। তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে বাস বন্ধ করার অভিযোগ সঠিক নয়।
তিনি জানান, তারা মহাসড়কে অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধের দাবিতে এই ধর্মঘট করছেন। এছাড়া সমাবেশকে ঘিরে বাস ভঙচুর হতে পারে বলেও আশংকা ছিল।
Challenge your friends and rise to the top in online gaming Lucky Cola