শৈলকুপায় পৌর প্রানকেন্দ্রে অবৈধ ইটভাটা, নেই কোন পদক্ষেপ

Share Now..

শৈলকুপা(ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি ঃ ঝিনাইদহের শৈলকুপা পৌরসভার প্রাণ কেন্দ্রে অবৈধ ইট ভাটা গড়ে উঠলেও এর বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয় না বলে অভিযোগ উঠেছে। পৌরসভার কাজী পাড়ায় জনবসতি এলাকায় অবস্থিত অবৈধ আশা ইট ভাটা, এছাড়াও শৈলকুপা পৌরসভার মধ্যে রয়েছে আরো ৫টি ইট ভাটা, এদের অবস্থান উপজেলা শহর থেকে বেশ খানিকটা দুরে। বিগত দিনে পৌরসভার মধ্যে অবস্থিত অন্যান্য ইট ভাটায় অভিযান পরিচালনা হলেও এই আশা ইট ভাটায় কোন অভিযান পরিচালনা হয় না। বার বার ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে এই ইটভাটাটি। মহামান্য হাইকোর্ট দেশের সব অবৈধ ইটভাটা ও ইটভাটার জ্বালানি হিসেবে কাঠের ব্যবহার বন্ধের নির্দেশ দিলেও তা মানছে না এই ভাটা মালিকসহ অন্য ভাটা মালিকরা।
নির্ভরযোগ্যসূত্রে জানা যায়, এবারও এই ইটভাটা মালিক বিভিন্ন দপ্তরে দৌড় ঝাপ শুরু করেছে কিভাবে অভিযান থেকে রক্ষা পাওয়া যায় । একেবারেই পৌরসভার পেটের ভিতর অবস্থিত এই অবৈধ ইটভাটা লাগামহীনভাবে চলছে। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ঝিনাইদহ পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্রে জনাকীর্ণ এলাকায় এই ইট ভাটা অবাধে কিভাবে চলছে ? এ নিয়ে নানা মহলে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তবে ইট ভাটা মালিক বলছে আমরা নিয়মের মধ্যে আছি।
সরেজমিন এই ইট ভাটা ঘুরে দেখা যায়, জ্বালানি হিসেবে ইটভাটায় কাঠের ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকলেও শীত মৌসুমকে সামনে রেখে এই অবৈধ ইট ভাটার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পাহাড়ের মত উচু করে হাজার হাজার মন গাছের খড়ি সাজিয়ে রেখে তা পোড়ানো হচ্ছে। এছাড়াও প্রতিদিন বাজারের মধ্য দিয়ে মাটি টানা ট্রাক্টর চলায় ধুলাবালিতে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। মাটি, খড়ি, ইট বোঝাই করে ট্রাকের পর ট্রাক যাতায়াত করছে ইটভাটায়। আবার বিভিন্ন এলাকা থেকে কৃষি জমির টপ সয়েল কেটে নিয়ে চলে আসছে ভাটায়।
এছাড়াও এলাকার কৃষি জমিতে ও জনবহুল এলাকায় অবস্থান এই আশা ইট ভাটার। সরকারী নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে হাজার হাজার মন কাঠ দিয়ে ইট পুড়িয়ে চলেছে। একেবারেই জনাকীর্ণ আবাসিক এলাকায় আশা নামে ইট ভাটাটির অবস্থান থাকলেও এর বিরুেেদ্ধ কোন কালেও কোন আইনী পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। পৌরসভার মধ্যে অবস্থিত আশা ইটভাটা অবিলম্বে গুড়িয়ে দেয়ার দাবি জানিয়েছে পরিবেশ সচেতন মানুষেরা ।
ইট পোড়ানো নিয়ন্ত্রণ আইন ও বিধিমালা অনুযায়ী, বিশেষ কোন স্থাপনা, রেলপথ, হাসপাতাল ও ক্লিনিক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং লোকালয় থেকে তিন কিলোমিটারের মধ্যে কোনো ইটভাটা নির্মাণ করা যাবে না। তবে কোন নিয়ম মানতে নারাজ ইটভাটা মালিকরা। স্কুল,মাদ্রাসার পাশে ও লোকালয়ে কিভাবে চলছে এসব ইট ভাটা তার কোন উত্তর খুঁজে পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ।
ভাটা সংলগ্ন পৌর এলাকার মালিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মোঃ রেজা বলেন, পৌরসভার মধ্যে অবৈধভাবে ইট ভাটা চলছে। এরমধ্যে আশা ইটভাটার অবস্থান মালিপাড়া মাদ্রাসার সন্নিকটে হওয়ায় খুব সমস্যার মধ্যে আছে এই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাসহ এলাকার মানুষ। এছাড়াও ইট ভাটাটির অবস্থান জনাকীর্ন এলাকায় হওয়ায় নানা সমস্যার মধ্যে আছে সাধারণ মানুষ। বিগত দিনে অন্যান্য ভাটায় অভিযান পরিচালনা হলেও বার বার এই অবৈধ ভাটার বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
আশা ইট ভাটার মালিককে একাধিকবার মোবাইল করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তাই তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌরসভার মধ্যে অবস্থিত এক ইটভাটা মালিক বলেন,কিছুটা অনিয়মের মধ্যেই ইটভাটা চালাচ্ছি যার ফলে মাঝে মধ্যে প্রশাসনের অভিযানের মুখে পড়তে হয় তবে আশা ইটভাটার বিরুদ্ধে কোন কালেও কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আমরা সবাইতো অনিয়মের মধ্যে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। আইন সবার জন্য এক হওয়া দরকার।
এ বিষয়ে পৌর মেয়র কাজী আশরাফুল আজম বলেন, পৌরসভার মধ্যে এভাবে ইট ভাটা চালানোর আইনগত ভিত্তি নেই। প্রশাসনের চোখের সামনে দিনের পর দিন এই ভাটা চলছে। এই ভাটাটির বিরুদ্ধে কেন অভিযান পরিচালনা হয় না তা আমি বলতে পারবো না।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শ্রীরুপ মজুমদার বলেন, পৌরসভার মধ্যে এভাবে ইট ভাটা পরিচালনা করার কোন বৈধ্যতা নেই। নিয়মের মধ্যে না থাকলে আমরা অবৈধ ইট ভাটার বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে অচিরেই আইনগত ব্যবস্থা নিব। কেউ পার পাবে না, আইনের চোখে সবাই সমান।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজিয়া আক্তার চেীধুরী বলেন, অচিরেই অবৈধ ইটভাটায় অভিযান পরিচালনা করা হবে। নিয়মের বাইরে কোন ইট ভাটা চলতে দেওয়া যাবে না।

শৈলকুপা পৌর বাসির দীর্ঘদিনের দাবী এই অবৈধ ইট ভাটার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হোক।
উল্লেখ্য এই অবৈধ ইটভাটাসহ পৌরসভার মধ্যে আরো ৬টি ইটভাটা রয়েছে।

One thought on “শৈলকুপায় পৌর প্রানকেন্দ্রে অবৈধ ইটভাটা, নেই কোন পদক্ষেপ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *