যশোর ২৫০ শয্যা হাসাপাতালে নিম্নমানের খাবার সরবরাহে জড়িত দুই কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
এস আর নিরব, যশোরঃ
যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের রোগীদের খাবারের মান নিয়ে বহু আগে থেইে রয়েছে অভিযোগ। মাছ ও মাংস দেওয়ার নিয়ম থাকলেও রোগীরা খুঁজে পেতেন না। আর ডাল ও সবজিতে তো মুখে দিতেই পারতেন না রোগীরা। সম্প্রতি রোগীদের অভিযোগ পেয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার হারুণ অর রশিদ গোপনে তদারকি করে নিম্নমানের খাবার সরবরাহের সত্যতা পেয়েছেন। এই ঘটনায় একজন কর্মচারীকে সতর্ক ও একজনকে অভ্যন্তরীণ বদলি করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাসপাতালে টেন্ডার নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা চলায় টানা ১০ বছর একজন ঠিকাদার খাবার সরবরাহ করে আসছেন। দীর্ঘদিন ধরেই একই ঠিকাদারের কাছে জিম্মি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও রোগীরা। সেই সাথে রোগীদের রান্নার চাল, ডাল, মাছ, মাংস, তেল, মশলা আত্মসাতের ঘটনায় হাসপাতালের দুই কর্মচারীকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে অন্যত্র। হাসপাতালের রোগীদের তিনবেলা খাবারের (পথ্য) জন্য মাথাপিছু বরাদ্দ ১০৯ টাকা। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বলছেন, গত রোববার থেকে হাসপাতালের রোগীদের খাবারের মান কিছুটা উন্নত হয়েছে। আমরা নিয়মিত তদারকি করবো। খাবারের মানের সাথে কোন আপস করা হবে না।
তবে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় গতকাল বুধবার খাবারের মান কিছুটা উন্নত হয়েছে। প্লেট ভর্তি ভাত ও দুই টুকরো মুরগির মাংস, ঘন ডাল, রাতে সবজি সবই যেন কিছুটা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন রোগীরা। তারা বলছেন, মাছের টুকরোও বড় হয়েছে আগের তুলনায়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন, উচ্চ আদালতের মামলার নিষ্পত্তির বিষয়ে রিট করা হয়েছে। এবং আজ প্রতিমন্ত্রীর সাথে হাসপাতালের সভাকক্ষে সভা রয়েছে। বিষয়টি উপস্থাপন করা হবে। খুব শিগগির এই সমস্যা কাটিয়ে নতুন টেন্ডার করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদী।
বরাবরই রোগী ও তার স্বজনরা খাবারের মান নিয়ে প্রশ্ন তুললে হাসপাতালের স্টুয়ার্ড শাহাজাহানের দাবি ছিলো নির্ধারিত পরিমাপেই মান সম্মত খাবার সরবরাহ করা হয়। তবে সোমবার থেকে খাবারের মান ও পরিমাপ বেড়েছে। আগেও যা বরাদ্দ ছিলো এখনোও তাই আছে। কি কারণে বেড়েছে সে প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, আমি তো রাধুনিকে সব কিছু বুঝিয়ে দিতাম এখন সে যদি আত্মসাৎ করে, সেখানে আমার কি করার আছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের তিনজন কর্মচারী বলেন, নিয়ম হলো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীর প্রতিদিনের খাবার বুঝে নেবে। কিন্তু এই হাসপাতালে তা হতো না। কোনো নজরদারি ছিলো না। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তাদের ইচ্ছামাফিক খাবার সরবরাহ করত। তা বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক এসে সকল দিকে নজরদারি বাড়িয়েছেন। যার কারণে বর্তমানে রোগীদের খাবারের মান বৃদ্ধির সাথে সাথে রান্নার মানও বেড়েছে।
এ বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশীদ বলেন, তিন বেলা এই খরচে খাদ্যের মান ও পরিমান ঠিক রাখা একটু কঠিন ব্যাপার। তারপরও আমি ঠিকাদারের সঙ্গে কথা বলেছি। কিছু পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছি। যতটুকু সম্ভব কম লাভ করে রোগীকে ভাল মানের খাবার দেয়া যায়, সে ব্যাপারে আমি তাদের বলেছি এবং তারা করবে বলে আশ্বাস দিয়েছে। এছাড়াও হাসপাতালের দুই কর্মচারীর বিরুদ্ধে রোগীদের অভিযোগ ছিলো তারা খাবার আত্মসাৎ করে। সত্যতাও মিলেছে। এ কারণে একজনকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে, অপরজনকে সতর্ক করা হয়েছে এবং নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
তবে এই সব অভিযোগের বিষয়ে ঠিকাদার শফিকুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।
The ultimate challenge awaits—are you ready to take it on? Lucky Cola