খেজুরগাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত চুয়াডাঙ্গার চাষিরা

Share Now..

চুয়াডাঙ্গায় চলে এসেছে শীতের আগমনি বার্তা। সকাল ও সন্ধ্যায় হালকা শীত অনুভূত হচ্ছে। সকালে হালকা কুয়াশায় ঢেকে পড়ছে চারদিক। তাই শিশির ফোঁটায় জানান দিচ্ছে শীতের আগমনি বার্তা। শীতের আমেজের শুরুতে চুয়াডাঙ্গার গাছিরা রস সংগ্রহের জন্য গাছ প্রস্তুতের কাজ শুরু করেছে। প্রতিদিন সকালে হালকা শীত উপেক্ষা করে গাছিরা তাদের গাছ কাটার যন্ত্র নিয়ে গাছ পরিচর্যা করতে ব্যস্ত সময় পার করছে।

জানা গেছে, এবার গাছ কাটার যন্ত্রের দাম বেড়েছে। প্রতিদিন গাছিরা ৬০ থেকে ৭০টি গাছ কেটে প্রস্তুত করছে। এতে তারা দৈনিক পারিশ্রমিক পাচ্ছে ৮০০ টাকা। গাছ প্রস্তুত করার পর শুরু করা হবে রস সংগ্রহ। এরপর তৈরি হবে উত্কৃষ্ট মানের গুড় ও পাটালি। এই জেলার গুড় ও পাটালি চুয়াডাঙ্গাসহ সারা দেশের কয়েকটি জেলায় তা সরবরাহ করা হয়। প্রতিবারের মতো এই জেলার গুড় ও পাটালির সুনাম আছে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এবার জেলায় রস সংগ্রহের জন্য ২ লাখ ৭১ হাজার ৯৬০টি গাছ প্রস্তুত করা হচ্ছে। এতে এবার গুড়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন। আর বিক্রয়মূল্য ধরা হয়েছে ৩৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। প্রতিবার এই গাছ প্রস্তুতে কর্মসংস্থান হয়ে প্রায় ৩০ হাজার কৃষকের। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা বেলগাছি গ্রামের কৃষক আরিফ হোসেন জানান, চুয়াডাঙ্গায় শীতের আমেজ শুরু হয়েছে। তাই রস সংগ্রহের জন্য খেজুরগাছ কেটে প্রস্তুত করা হচ্ছে।

অপর কৃষক আজগর আলি বলেন, প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০টি গাছ কেটে প্রস্তুত করছি। দৈনিক পারিশ্রমিক পাচ্ছি ৮০০ টাকা। এতে কিছুই হচ্ছে না। সব জিনিসের মূল্য বৃদ্ধির কারণে চাহিদামতো পারিশ্রমিক মিলছে না। গাছ কাটার যন্ত্রের দাম বেড়েছে। গাছ কাটার পারিশ্রমিক মূল্য আরো বাড়ালে ভালো হতো।

দামুড়হুদা উপজেলার বাঘাডাঙ্গা গ্রামের শাহাদত হোসেন জানান, চলতি মৌসুমে ২০০ গাছ থেকে খেজুরের রস আহরণ করবেন। খেজুরগাছের রস, গুড়-পাটালি বিক্রয় করে খরচ বাদে প্রায় ১ লাখ টাকা লাভের আশা করছি।

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, জেলা জুড়ে খেজুরের রস আহরণের জন্য গাছিরা আগাম খেজুর গাছ প্রস্তুত করছে। সঠিক পদ্ধতিতে, স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে যেন রস-গুড় উত্পাদন করে গাছিরা—এজন্য কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়।

তিনি আরো জানান,  চলতি মৌসুমে ২ লাখ ৭১ হাজার ৯৬০টির মতো খেজুরগাছ থেকে গড়ে আড়াই হাজার থেকে ৩ হাজার মেট্রিক টন গুড় উত্পাদিত হবে। এছাড়া গাছিরা খেজুর রস-গুড়ের বিভিন্ন ধরনের পিঠা ও মিষ্টান্ন তৈরি করে নিকটস্থ বাজারে বিক্রয় করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে থাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *