ভেজাল সুগন্ধি চালে বাজার সয়লাব, দেখার যেন কেউ নেই

Share Now..

কৃত্তিম ফ্লেভার মেশানো ভেজাল সুগন্ধি আতপচালে পাবনার ঈশ্বরদীসহ আশেপাশের হাটবাজার সয়লাব হয়ে গেছে। উন্নতমানের চিনিগুঁড়া (কালোজিরা/গোবিন্দভোগ নামেও পরিচিত) চালের দাম বেশি থাকায় একশ্রেণির অসৎ ব্যবসায়ী অতিমুনাফা অর্জনের জন্য ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত ৯০ জাতের ধানের আতপচালে কেমিকেলযুক্ত ফ্লেভার  মিশিয়ে বাজারজাত করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

সাধারণ ক্রেতারা পোলাউ-বিরিয়ানী-পায়েস রান্নার জন্য এ চাল বাড়ি নিয়ে ধোয়ার পর আর সুগন্ধি থাকছে না। এতে ক্রেতারা প্রতারিত হওয়ার পাশাপাশি কেমিকেলযুক্ত খাবারে স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্ভবনা রয়েছে। এখন হাট-বাজারের পাশাপাশি পাড়া-মহল্লা ও গ্রামে-গ্রামে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় মাইকিং করে সুগন্ধি আতবচালের নামে ফ্লেভার মেশানো চাল ৭৫-৮০ টাকা কেজি দরে ফেরী করে বিক্রি হচ্ছে।

কৃষক, চাল ব্যবসায়ী, চালকল মিলার ও কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অনেক আগে ভারতের মহারাষ্ট্র হতে এ ধরণের চাল আমদানি হতো। বছর পাঁচেক আগে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের কৃষি বিজ্ঞানীরা ছোট ও চিকন ৯০ জাতের ধান উদ্ভাবন করেন। এ ধানের ফলনও বেশি এবং পোকামাকড়ের আক্রমণ হয় না। এতে কিছুটা সুগন্ধিও রয়েছে। চিকন মিনিকেট ও নাজিরশাইল চালের বিকল্প হিসেবে প্রথম দিকের ব্যাপক চাহিদা ছিলো। ইরি-বোরো মৌসুমে চলনবিল ও যশোর অঞ্চলে বিপুল পরিমাণ এজাতের ধানের আবাদ হয়। তবে এখন আমন মৌসুমে কিছু কিছু আবাদ হচ্ছে। 

মিলাররা জানান, ইরি-বোরো মৌসুমের ধান দিয়ে চাল করার সময় চাল ফেটে যাওয়ায় অনেক লোকসান হয়। যে কারণে মিলাররা এ ধান এখন কিনতে চায় না। ফলে ৯০ জাতের ধানের দাম অনেক নেমে গেছে। তবে আমন মৌসুমের চাল তেমন একটা ফাটে না। উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন হাটে বর্তমানে ১ হাজার দুইশত টাকা মণ দরে ৯০ জাতের ধান বিক্রি হচ্ছে।

ঈশ্বরদীর চাতাল মালিক মঞ্জুরুল আলম জানান, দেশীয় বিআর ৩৪ জাতের ধান দিয়ে তৈরি হয় উন্নতমানের আসল চিনিগুঁড়া বা কালোজিরা চাল। পাইকারিতে ৫০ কেজির বস্তার দাম ৬ হাজার পাঁচশত টাকা । আর খুচরা বাজারে এক কেজির দাম ১৪০-১৫০ টাকা। ভারত ও জার্মানির অ্যারোমেটিক সেন্ট তরল অথবা পাউডার ফর্মে ৯০ জাতের চালে মেশানো হচ্ছে। 

তিনি বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের মোকামে সুগন্ধি মেশানো ৫০ কেজি চালের দাম ৩,০০০-৩,৫০০ টাকা। অর্থাৎ এক কেজির দাম ৬০-৭০ টাকা। ঈশ্বরদী, কুষ্টিয়া, বগুড়া ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী কমদামের চালে সুগন্ধি মিশিয়ে বাজারে বেশি দামে বিক্রি করছে।

ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি অফিসার মিতা সরকার বলেন, স্বাভাবিক চালে কেমিকেলযুক্ত সুগন্ধি মেশানো আইনবর্হিভূত। এসব লিকুইড বা পাউডার ফর্মের কৃত্তিম সুগন্ধি ফুড গ্রেডের না হলে মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *