জুমার জামাতে কাতার ডিঙিয়ে সামনে যাওয়া প্রসঙ্গে ইসলাম কী বলে?

Share Now..

জুমার দিন গোসল করে দ্রুত মসজিদে যাওয়া, ইমামের কাছাকাছি বসা উত্তম। রাসুল (সা.) বলেছেন,

مَنْ غَسَّلَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَاغْتَسَلَ وَبَكَّرَ وَابْتَكَرَ وَمَشَى وَلَمْ يَرْكَبْ وَدَنَا مِنَ الإِمَامِ فَاسْتَمَعَ وَلَمْ يَلْغُ – كَانَ لَهُ بِكُلِّ خَطْوَةٍ عَمَلُ سَنَةٍ أَجْرُ صِيَامِهَا وَقِيَامِهَا

যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করলো ও করালো, সকাল সকাল যানবাহন ছাড়া পায়ে হেঁটে মসজিদে এসে ইমামের কাছাকাছি বসলো, মনোযোগ দিয়ে খুতবাহ শুনলো এবং অনর্থক কিছু করলো না, সে প্রতি পদে এক বছর রোজা রাখা ও রাত জেগে নামাজ পড়ার সওয়াব লাভ করে। (সুনান তিরমিজি: ৪৯৬)

তাই জুমার দিন ইমামের কাছাকাছি বসার আগ্রহ ও চেষ্টা থাকা উচিত। কিন্তু সেজন্য আগে আগে মসজিদে উপস্থিত হতে হবে। মসজিদে পরে উপস্থিত হয়ে অন্য মুসল্লিদের ডিঙিয়ে তাদেরকে কষ্ট দিয়ে সামনে যাওয়ার চেষ্টা করা অন্যায় ও গুনাহের কাজ।

খুতবা চলা অবস্থায় কেউ যদি কাতার ডিঙিয়ে সামনে যেতে চায়, তাহলে অন্য মুসল্লিদের উচিত তাকে এ কাজ করতে নিষেধ করা ও বসিয়ে দেওয়া। খতিব সাহেবের চোখে পড়লে তিনি নিজেই তাকে বসে যাওয়ার নির্দেষ দিতে পারেন। একবার রাসুল সা. জুমার খুতবা দিচ্ছিলেন। তার চোখে পড়লো এক ব্যক্তি মানুষকে ডিঙিয়ে সামনে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তিনি তাকে বললেন,

اجْلِسْ فَقَدْ آذَيْتَ وَآنَيْتَ

বসে পড়, তুমি দেরি করে এসেছ, মানুষকে কষ্টও দিচ্ছ। (সুনান আবু দাউদ: ১১১৮)

আরেকটি হাদিসে রাসুল সা. জুমার দিন আল্লাহর ক্ষমা পাওয়ার জন্য যে সব আমলের কথা বলেছেন, মসজিদে মানুষকে ডিঙিয়ে সামনে না যাওয়া সেগুলোর একটি। রাসুল সা. বলেন,

مَنِ اغْتَسَلَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ، وَتَطَهَّرَ بِمَا اسْتَطَاعَ مِنْ طُهْرٍ، ثُمَّ ادَّهَنَ أَوْ مَسَّ مِنْ طِيبٍ، ثُمَّ رَاحَ فَلَمْ يُفَرِّقْ بَيْنَ اثْنَيْنِ، فَصَلَّى مَا كُتِبَ لَهُ، ثُمَّ إِذَا خَرَجَ الإِمَامُ أَنْصَتَ، غُفِرَ لَهُ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْجُمُعَةِ الأُخْرَى

যে ব্যাক্তি জুমার দিন গোসল করে এবং যথাসম্ভব উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জন করে, তেল মেখে নেয় অথবা সুগন্ধি ব্যবহার করে, তারপর মসজিদে যায়, মানুষকে ডিঙ্গিয়ে সামনে যাওয়া থেকে বিরত থাকে, তার ভাগ্যে নির্ধারিত পরিমাণ নামাজ আদায় করে, ইমাম যখন খুতবার জন্য বের হন তখন চুপ থাকে, তার এ জুমা এবং পরবর্তী জুমার মধ্যবর্তী সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। (সহিহ বুখারি: ৯১০)

সুতরাং ইমামের কাছাকাছি বসার জন্য মসজিদে দ্রুত উপস্থিত হতে হবে। যদি কোনো কারণে দেরি হয়ে যায়, তাহলে যেখানে জায়গা খালি থাকে সেখানেই বসে পড়ুন। ইমামের কাছাকাছি বসার জন্য অন্যান্যের কষ্ট দিলে সওয়াবের বদলে গুনাহের ভাগীদার হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এ কারণে জুমার দিনের ফজিলত ও ক্ষমা থেকে বঞ্চিত হয়ে যাওয়ারও সম্ভাবনা আছে।

664 thoughts on “জুমার জামাতে কাতার ডিঙিয়ে সামনে যাওয়া প্রসঙ্গে ইসলাম কী বলে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *