বাতাসে দুলছে কৃষকের আমন ধান ক্ষেত, ভাল ফলনের আশা

Share Now..

\ বিশেষ প্রতিনিধি, শৈলকুপা \
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় মাঠে মাঠে এখন আমনের সবুজ সমারোহ। বাতাসে দুলছে কৃষকের আমন ধান ক্ষেত। ফলন ভাল হওয়ায় চোখে মুখে কৃষকের হাসি। মাঠ ভরা ফসল দেখে কৃষকদের চোখে মুখে ফুটে উঠেছে আনন্দের ছোয়া। রাশি রাশি সোনালি ধানে ভরে উঠবে কৃষাণীর শূন্য গোলা। আমন মৌসুমকে ঘিরেই এমন স্বপ্ন দেখছে এ অঞ্চলের চাষিরা। এ মৌসুমে উপজেলায় ২৪৯২৭ হেক্টর জমিতে আমনের চাষ হয়েছে যা লক্ষ্যমাত্রা ছুঁয়েছে।
কৃষি বিভাগের দাবি, অনুকূল আবহাওয়া, কৃষকের নিবিড় পরিচর্যা, যথা সময়ে জমিতে সার ও কীটনাশক প্রয়োগের কারণে এবার আমন চাষের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষক ও কৃষি বিভাগ। ফলে মাঠে দোল খাওয়া সবুজ ধানে নতুন স্বপ্ন দেখছেন কৃষকেরা।
সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা যায়, মাঠের পর মাঠ শুধু আমন ধানের ক্ষেত। সোনালি ধান ঝলমল করছে মাঠের পর মাঠ। কিছুু কিছু কৃষককে ধান ক্ষেতে কাচি হাতে ঘুরতে দেখা যায়। পুরোদমে এখনো ধান কাটা শুরু হয়নি। সবেমাত্র ধান পেকে সোনালী আকার ধারণ করেছে। মাঠে কিছু কিছু জায়গায় ধান কাটা শুরু হলেও কয়েকদিনের মধ্যেই পুরোদমে ধান কাটার জন্য কৃষক প্রস্তুতি নিচ্ছে। বেশীরভাগ জমিতে আমনের চাষ হয়েছে। এছাড়াও হাইব্রীড, উফশী ধানের চাষও লক্ষ্য করা গেছে। এবার আমন ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখছেন কৃষক। প্রাকৃতিক কোন দূর্যোগ দেখা না দিলে ১০/১২ দিনের মধ্যেই কৃষক তাদের কাঙ্খিত আমন ধান কেটে ঘরে তুলতে পারবেন। এবার ধানের ফলন ভাল হয়েছে বলে কুষকরা জানান।
উপজেলার মাঠপাড়া গ্রামের কুষক মিজানুর রহমান বলেন, আমার ৭ বিঘা জমি আছে। গতবার বোরো মৌসুমে ৫ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছিলাম। এবার পুরো ৭ বিঘা জমিতে আমন চাষ করেছি। ধান ভাল হয়েছে, কয়েক দিন পরেই ধান কেটে ঘরে আনবো। আশা করছি প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে ঠিকঠাকমত ধান ঘরে তুলব। এবার ভালো ফলন হয়েছে ও ভালো দাম পেলেই আমরা খুশি।
আরেক ধানচাষি বিজুলিয়া গ্রামের আশরাফুল ইসলাম বলেন, আমি গরিব মানুষ, চার বিঘা জমি বর্গা নিয়ে আমন ধান চাষ করেছি। এই মাঠে সবার চেয়ে আমার জমিতে আমন চাষ ভাল হয়েছে। আশা করি বিঘা প্রতি ২০- ২৫ মণ ফলন পাব। প্রতিদিন ধান ক্ষেতে আসি আর স্বপ্ন দেখি, ধান কেটে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে সুখে দিন কাটাবো।
উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা আবুল হাসনাত জানান, এ উপজেলায় ২৪৯২১ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৪৯২০ হেক্টর । এর মধ্যে হাইব্রিড জাতের ৫ হাজার ১৪০ হেক্টর, উফশী জাতের ১৯৭৮০ হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে। এবছরে হাইব্রীড জাতের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৩৬০ হেক্টর ও উফশী জাতের লক্ষমাত্রা ছিল ১৯৫৬১ হেক্টর। তবে পোকা মাকড়ের আক্রমণ কম থাকায় অন্যবারের চেয়ে এবার আমনের ফলন ভাল হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *