৬৪তেও ক্লান্তিহীন সুবর্ণা মুস্তাফা
আজ শনিবার (২ ডিসেম্বর) কিংবদন্তি অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফার জন্মদিন। ৬৪টি বসন্ত পার করলেন ক্লান্তিহীন এই অভিনেত্রী। ‘বয়স শুধু একটি সংখ্যা মাত্র’, উক্তিটি একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত বরেণ্য এই অভিনেত্রী ও সংসদ সদস্যের জন্য পুরোপুরি উপযুক্ত।
১৯৫৯ সালের এ দিনে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার দপদপিয়ায় জন্মগ্রহন করেছিলেন সুবর্ণা মুস্তাফা। তার বাবা প্রখ্যাত অভিনেতা প্রয়াত গোলাম মুস্তাফা।
পর্দার মতোই ব্যক্তিজীবনেও সাদামাটাভাবে চলতে পছন্দ করেন সুবর্ণা। তাইতো দিনটিকে ঘিরে এবারও বিশেষ কোনো আয়োজন নেই তার। ঘরোয়া আয়োজনেই জন্মদিনের শুরুতেই কেক কেটে উদাযাপন করেন তিনি। এসময় অভিনেত্রীর সঙ্গে ছিলেন তার স্বামী নির্মাতা বদরুল আনাম সৌদ।
এ ছাড়া সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন অভিনেত্রী ওয়াহিদা মল্লিক জলি, তাহমিনা সুলতানা মৌ, তানভীন সুইটি, দীপা খন্দকার, বিজরী বরকতুল্লাহ ও ফারজানা চুমকি।
মূলত ছোটবেলা থেকেই বাবার অনুপ্রেরণায় সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহ তৈরি হয় তার। সত্তরের দশকে ঢাকা থিয়েটারে নাট্যকার সেলিম আল দীনের ‘জন্ডিস ও বিবিধ বেলুন’ নাটকের মাধ্যমে সুবর্ণার অভিনয় যাত্রা শুরু হয়। পরবর্তীতে ১৯৮০ সালে সৈয়দ সালাউদ্দিন জাকী পরিচালিত ‘ঘুড্ডি’ সিনেমার মাধ্যমে আসেন চলচ্চিত্র জগতে।
এরপর ১৯৮৩ সালে ‘নতুন বউ’ এবং পরের বছর ‘নয়নের আলো’ ছবি দুটি দিয়ে তিনি খ্যাতির শিখরে ওঠেন। অভিনেত্রী কাজী জহির পরিচালিত ‘নতুন বউ’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন।
সুবর্ণা মুস্তাফা অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমার তালিকায় রয়েছে ‘লাল সবুজের পালা’, ‘নয়নের আলো’, ‘সুরুজ মিঞ্চা’, ‘শঙ্খনীল কারাগার’, ‘রাক্ষস’, ‘কমাণ্ডার’, ‘অপহরণ’, ‘স্ত্রী’, ‘দূরত্ব’ ‘পালাবি কোথায়’ ও ‘গহীন বালুচর’ ‘গণ্ডি’ ইত্যাদি।
১৯৯০ সালে হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস অবলম্বনে বরকত উল্লাহর পরিচালনায় ‘কোথাও কেউ নেই’ নাটকের মাধ্যমে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান সুবর্ণা। এছাড়া ‘আজ রবিবার’ নাটকে মুনা চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকদের হৃদয়ে ঝড় তুলেছিলেন গুণী এই অভিনেত্রী।
দীর্ঘদিন সাংস্কৃতিক অঙ্গনে দৃপ্ত পদচারণার পর সুবর্ণা মুস্তাফা ২০১৯ সালে নাম লেখান রাজনীতিতে। ওই বছরের ফেব্রুয়ারিতে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত মহিলা আসন ঢাকা-২২ থেকে তিনি মনোনয়ন পান এবং পরে তাকে চূড়ান্তভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
ব্যক্তিগত জীবনে অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদির সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন সুবর্ণা। অভিনেতার সঙ্গে দীর্ঘ ২২ বছর সংসার করার পর ২০০৮ সালে বিবাহবিচ্ছেদ হয় এই তারকা দম্পতির। পরবর্তীতে নির্মাতা বদরুল আনাম সৌদকে বিয়ে করেন তিনি।