ডিজিটাল প্লাটফর্মে নতুন ধারার তারকাদের বছর

Share Now..

এখন আমাদের প্রতিদিনের অভ্যেস বদলে গেছে। টিভির নিজস্ব সূচির বাইরে বিভিন্ন ইউটিউব কন্টেন্ট করা রিলস দেখে সময় কাটাই আমরা। তেমনি একাধিক ডিজিটাল প্লাটফর্ম হওয়ায় সারাবছরের সালতামামি বিভিন্ন জরিপেও নির্ণয় করা হচ্ছে।

তবে বছরব্যাপী টিভি ও স্যাটেলাইট বা ফিল্মের তারকার বাইরে ডিজিটাল প্লাটফর্মের তারকারা দাপিয়ে বেড়িয়েছেন ২০২৩ এর পুরোটা জুড়ে। ফুড, ভ্রমণ, ফিল্মক্রিটিক, স্যাটায়ার বা ছোটখাটো নাটিকার মাধ্যমে নিজেদের প্রকাশ করেছেন যেমন, ঠিক তেমনি ফিল্মের ক্রিটিক বা আলোচনায় সরব থেকেছেন কেউ কেউ।

রাফসান দ্যা ছোট ভাই- নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলের মূল কন্টেন্ট ক্রিয়েটর রাফসানকে এবছরের তারকা বলা যায়। মূল প্লাটফর্মের অনেকেই তাকে অস্বীকার করার নানান ব্যকরণ তৈরি করলেও ডিজিটাল কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের মূলত অগ্রাহ্য করার কোনো উপায় এখন আর নেই। সর্বশেষ সালমান খানের ফ্রাঞ্চাইজ কোম্পানি ‘বিয়িং হিউম্যান’ এদেশে তাদের শোরুম নিয়ে যাত্রা শুরু করলে বলিউড তারকা পরিবার অর্থাত্ সোহেল খান রাফসানকে দিয়েই তাদের ব্র্যান্ড প্রমোশন করে। শুধু তাই নয়। একাধিক ডিজিটাল কন্টেন্ট ক্রিয়েটর এদেশে এখন বিভিন্ন ভিজ্যুয়াল সেক্টরেও কাজ করছেন।

সম্প্রতি দেশের জনপ্রিয় উপস্থাপক শাহরিয়ার নাজিম জয় তার ফেসবুক পেজ থেকে ডিজিটাল আয় বছরে ৫০ হাজার ডলার উল্লেখ করলে তা নিয়ে হৈ হুল্লোড় পড়ে যায়। জয় চ্যানেল আইতে চাকরির পাশাপাশি নিজস্ব পেজেও কন্টেন্ট প্রকাশ করে থাকেন নিয়মিত। জয় বলেন, ‘এখন এটি খুবই মেধাদীপ্ত একটি প্রতিযোগিতার জায়গা। এটাকে ইগনোর করার কোনো উপায় নেই। অনেকেই উদ্ভট কিছু করে নাম করছে বা ডলার ইনকাম করছে ঠিকই। কিন্তু মেধার জায়গা সৃজনশীলতা দেখিয়ে কাজ করছে এমন ডিজিটাল কন্টেন্ট ক্রিয়েটররাই গণমাধ্যমে প্রভাব রাখছে এবং রাখবে সবসময়। যেমন চিত্রনায়িকা বুবলীর একটি এক্সক্লুসিভ ইন্টারভিউতে আমার প্রায় ৫ মিলিয়ন ভিউ হয়। এটি একটি রেকর্ড! সারাবছর আমরা একটি আপডেট দিয়ে থাকি। সেখান থেকে যে কোনো চাকরির চেয়েও এটি বেশি রেভিনিউ নিয়ে আসে।’

একইভাবে নির্মাতা মালেক আফসারিকে নিয়ে নানান ধরনের কথা প্রচলিত থাকলেও চলচ্চিত্রের এই ডাকসাইটে নির্মাতা এখন ডিজিটাল প্লাটফর্মে খুবই গ্রহণযোগ্য একজন। বাংলা চলচ্চিত্রের প্রমোশন থেকে শুরু করে নানান আপডেট দিয়ে থাকেন।

শোবিজ ও তার বাইরে একাধিক গুণী ব্যক্তির ইন্টারভিউ করে থাকেন আরজে কিবরিয়া। কোনো প্রাতিষ্ঠানিক চাকরি ছেড়ে নিজেই এখন একটি দামি ব্র্যান্ডে পরিণত হয়েছেন কিবরিয়া। এবছরে তার একটি সামাজিক কাজকে দারুণভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে খোদ ইউটিউব। বাংলাদেশি কোনো কন্টেন্ট ক্রিয়েটরের জন্য এটি প্রথম ও বিরল সম্মান। গুগলের নিজস্ব ব্লগে আরজে কিবরিয়াকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।

এছাড়া এখন সিনে প্রযোজকরা তাদের চলচ্চিত্র প্রকাশ পেলে প্রতিষ্ঠিত চ্যানেলের চেয়েও বেশি আগ্রহ দেখান সোশ্যাল ইনফ্লুয়েন্সার বা ডিজিটাল কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের। যেমন বছরের সবচেয়ে বড় বাজেটের মুভি ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’। এই ছবিটির প্রমোশন করেন মাসুম নামের একজন ইউটিউবার। যিনি সারা বছরব্যাপী একাধিক মুভি ও সোশ্যাল বিভিন্ন কন্টেন্টের রিভিউ দিয়ে থাকেন।

নারী কন্টেন্ট ক্রিয়েটররাও নিজ নিজ অবস্থানে দুর্দান্ত কন্টেন্ট তৈরি করছেন। যাদের দর্শক ও সাবস্ক্রাইবারদের সংখ্যা ঈর্ষণীয়। যেমন রাবা খান, কামরুন নাহার ডানাসহ একাধিক নারী রয়েছেন যারা ডিজিটাল প্লাটফর্মে দারুণ ভূমিকা রাখছেন। তাই ২০২৪ এর স্মার্ট বাংলাদেশ তাদের হাতেই দারুণভাবে এন্টারটেইনমেন্ট ইন্ডাস্ট্রি পরিচালিত হতে পারে এমনটাই ভাবা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *