নির্বাচনের আগে তাইওয়ানের আকাশে চীনা বেলুন নিয়ে হয়রানি
স্বায়ত্তশাসিত তাইওয়ানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আগামী ১৩ জানুয়ারি। নির্বাচন ঘিরে সামরিক পদক্ষেপস্বরূপ দ্বীপের চারপাশে যুদ্ধবিমান, ড্রোন ও নৌজাহাজ মোতায়েন শুরু করেছে চীন। সম্প্রতি দ্বীপের ওপর দিয়ে উড়ে গেছে চীনা বেলুন। ঘটনাকে হয়রানিমূলক বলে মন্তব্য করেছে দ্বীপটির সামরিক বাহিনী।
গণতান্ত্রিক তাইওয়ানের নির্বাচনের আগমুহুর্তে দিনের বিভিন্ন সময়ে দ্বীপের চারপাশে চীনা বেলুনের উপস্থিতি দেখা গেছে। এই পরিস্থিতিকে ‘গ্রে জোনে’ হয়রানি বলে মন্তব্য করেছে তাইওয়ানের সামরিক বাহিনী।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, কিন্তু ডিসেম্বর থেকে রহস্যময় বেলুনগুলোর হয়রানির মাত্রা চীন-তাইওয়ানের মধ্যবর্তী ‘গ্রে জোন’ অতিক্রম করেছে।
আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ‘গ্রে জোন’ কৌশল হলো শান্তি ও যুদ্ধের মধ্যবর্তী অবস্থা, যেখানে দুইটি রাষ্ট্র একে অপরের বিরুদ্ধে বিবাদে জড়ায়। চীন-তাইওয়ানকে আলাদা করেছে তাইওয়ান প্রণালী। এটিই দুই অঞ্চলের গ্রে জোন নামে পরিচিত।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের কয়েক দিন আগে কিছু বেলুন সরাসরি তাইওয়ানের ওপর দিয়ে উড়ে গেছে। অন্তত একটি সামরিক বিমানঘাঁটির চারপাশে বেলুন শনাক্ত করা হয়েছে।
তাইওয়ান পলিসি ইনিশিয়েটিভ ডিরেক্টর র্যান্ড কর্পোরেশনের রেমন্ড কুও বলেছেন, ‘বেইজিং ইঙ্গিত দিচ্ছে, এটি ইচ্ছামত তাইওয়ানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করতে পারে এবং এর সার্বভৌমত্বকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে।’
স্ব-শাসিত তাইওয়ানকে চীন তার ভূখণ্ডের অংশ বলে দাবি করে। বেইজিংয়ের নেতৃত্ব দ্বীপটিকে তার নিয়ন্ত্রণে আনার অঙ্গীকার করেছে।
১৩ জানুয়ারির নির্বাচনে এগিয়ে আছেন লাই চিং অন্য দুজন প্রার্থীর তুলনায় এগিয়ে রয়েছেন। তার ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টি তাইওয়ানকে একটি সার্বভৌম জাতি হিসেবে দাবি করে। বাকি দুজন প্রার্থী নির্বাচনে জয়ী হলে বেইজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এদিকে বেলুনগুলোর উপস্থিতির সময়কে ‘রাজনৈতিক’ বলে মন্তব্য করেছেন কুও। তিনি এএফপিকে বলেছেন, ‘সিসিপি (চীনা কমিউনিস্ট পার্টি) আগামী সপ্তাহের রাষ্ট্রপতি ও আইনসভা নির্বাচনের দৌড়ে তাইওয়ানের জনগণকে হতাশাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে।’
কিন্তু এর সামরিক উদ্দেশ্য তাইওয়ানের প্রতি বৃহত্তর চীনের গ্রে জোন বলপ্রয়োগের কৌশলের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। বেইজিং তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা বাহিনীতে আরেকটি অপারেশনাল চ্যালেঞ্জ যোগ করছে, যা প্রস্তুতি এবং স্থিতিস্থাপকতা নষ্ট করতে পারে বলে মন্তব্য করেন কুও।
প্রাথমিকভাবে বেলুনগুলোকে আবহাওয়া সংক্রান্ত বেলুন বলার পর তাইপেইয়ের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় শনিবার বলেছেন, এগুলো হলো জনগণের মনোবল প্রভাবিত করার যুদ্ধকৌশলের প্রচেষ্টা মাত্র। বিমানগুলো বিমান চলাচলের রুটের জন্য ‘গুরুতর হুমকি’ তৈরি করেছে।
বেলুন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় হস্তক্ষেপের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে এবং তাইওয়ানকে নির্বাচনে কারসাজির চেষ্টার অভিযোগ করে।