বিভিন্ন গ্রামে নৌকা ঈগল মুখোমুখি-ঝিনাইদহ ও শৈলকুপায় বাড়িঘরে হামলা ভাংচুর ও লুটপাট আহত ৪০

Share Now..

\ স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ \
ঝিনাইদহের বিভিন্ন গ্রামে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে। ঝিনাইদহ সদর ও শৈলকুপায় শতাধীক বাড়িঘরে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। বাড়িঘরে চালানো হচ্ছে লুটপাট। পরাজিত প্রার্থীদের কর্মী ও সমর্থকরা এই হামলার শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় সন্ধ্যা পর্যন্ত শৈলকুপা ও ঝিনাইদহে ৫০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতদের মধ্যে নারী রয়েছে অন্তত ১০ জন। গতকাল সোমবার সকালে সদর উপজেলার পোড়াহাটি ইউনিয়নের বারইখালী, হীরাডাঙ্গা ও সুরাপাড়া গ্রামে নৌকার সমর্থকদের উপর হামলা চালানো হয়। গ্রামবাসি বলছেন সংসদ নির্বাচনে ঝিনাইদহ-২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী নাসের শাহরিয়ার জাহেদী মহুল নির্বাচিত হওয়ার পর গ্রামে গ্রামে উত্তেজনা দেখা দেয়। এ ঘটনার জের ধরে সদর উপজেলার ওই ৩ টি গ্রামে ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয়। গতকাল সোমবার সকালে পোড়াহাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম হিরনের অনুসারীরা পরাজিত নৌকা প্রতিকের প্রার্থী তাহজীব আলম সিদ্দিকী সমির সমর্থক জেলা যুবলীগের সদস্য ইব্রাহিম খলিল রাজার বাড়ীসহ তার অনুসারীদের বাড়ীতে হামলা চালায়। হামলাকারীরা বারইখালী, হীরাডাঙ্গা ও শুরাপাড়া গ্রামের অন্তত ৫০ টি বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট করে। বাঁধা দেওয়ায় তাদের হামলায় নারীসহ আহত হয় অন্তত ১০ জন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া গোয়ালপাড়া বাজারে ঘোড়ামারা গ্রামের মিলনের দোকান ভাংচুর করা হয়। একই গ্রামের নাছিরকে মারধর করে ঠ্যাং ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে। তার দোকানও লুট করা হয়েছে। পুর্বনারায়নপুর গ্রামের আজম মেম্বরের নেতৃত্বে গোয়ালপাড়া বাজারের তরকারি হাটে এই হামলা হয় বলে আহত নাছির অভিযোগ করেন। এদিকে গতকাল সোমবার বিকালে ঝিনাইদহ শহরের পাগলাকানাই এলাকায় শ্রমিক নেতা সাঈদ, তুৃহিন ও নাজিম মেম্বরসহ ৪/৫ জনকে মারধর করা হয়েছে। আহতরা সবাই নৌকার সমর্থক বলে তারা জানিয়েছেন। শৈলকুপায় নির্বাচনী পরবর্তী সহিংসতায় আহত হয়েছেন ৩০ জন। এ সময় স্বতন্ত্র প্রার্থী নজরুল ইসলাম দুলালের সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা চালানো হয়। আহতরা হলেন, শৈলকুপার বারই হুদা গ্রামের আফান, কোটপাড়ার তামিম, বিরামপুরের রাশেদুল ইসলাম, ঝাউদিয়া গ্রামের মোহাম্মদ, আবাইপুর গ্রামের স্বপন, সারুটিয়া গ্রামের কবির শেখ, কবিরপুরের জয়দেব সাহা, দোহারো গ্রামের স্বপন সাহা ও শিক্ষক পাড়ার বাবুসহ বিভিন্ন গ্রামের ৩০ জন গুরুতর আহন হন। আহত ব্যক্তিরা জানান, স্বতন্ত্র প্রার্থীর ট্রাক মার্কার পক্ষে ভোট করার কারণে নৌকার সমর্থকরা এই হামলা করে। এ ব্যাপারে শৈলকূপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শফিউল ইসলাম চৌধুরী জানান, নির্বাচনের পরে কিছু সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। অনেকেই আহত হয়েছেন বলে শুনেছি। সহিংসতা থামাতে পুলিশ আবাইপুর, বগুড়া, মিনগ্রাম, পাইকপাড়া, শাহাবাড়িয়া ও সারুটিয়াসহ বিভিন্ন গ্রামে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এদিকে ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি শাহীন উদ্দিন বলেন, সদরের ৩ টি গ্রামে কয়েকটি বাড়িঘর ভাংচুর করা হয়েছে। খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে এলাকায় উত্তেজনা থাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া র‌্যাব ও বিজিবি এলাকায় টহল দিচ্ছে। তিনি আরো জানান, ক্ষতিগ্রস্থদের পক্ষ থেকে অভিযোগ দিলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *