এত সমস্যা শুনেও সবাইকে সহযোগিতা করতে চান পাপন
নতুন ক্রীড়া মন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েই নাজমুল হাসান পাপন দেশের ক্রীড়া ফেডারেশনগুলোকে নিয়ে আলোচনায় বসবেন সেটি আগেই জানিয়েছিলেন। কার কী সমস্যা সেটি শুনবেন। সমাধানের চেষ্টা করবেন। গতকাল দুপুরে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের টাওয়ারের ৫তম তলায় ১০ ফেডারেশন নিয়ে সবার বসার কথা ছিল। কিন্তু একটি ফেডারেশন পরে বসবে। ৯ ফেডারেশন নিয়ে আলোচনায় বসতে গিয়ে উপস্থিত সংবাদমাধ্যমকে সরিয়ে দেওয়া হলো। ফেডারেশনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক অন্য কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্রীড়া সচিব, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব, পরিচালকরা বসলেন।
সংবাদমাধ্যম থাকলে কথা বলতে ফেডারেশনগুলো সংকোচ বোধ করতে পারে। এসব ভাবনায় সংবাদমাধ্যমও সম্মেলন কক্ষ থেকে বেরিয়ে গেলেন। প্রায় দুই ঘণ্টার রুদ্ধদ্বার আলোচনা শুনতে শুনতে ক্রীড়া মন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন হাঁপিয়ে উঠেছিলেন কিনা। ১৪ জানুয়ারি মন্ত্রী হওয়ার পর প্রথম যেদিন ক্রীড়া পরিষদে গিয়েছিলেন সেখানে এই একই কক্ষে ফুল দিয়ে বরণ করতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছিলেন ফেডারেশন কর্তারা।
কার আগে কে ফুল তুলে দেবেন, তা নিয়ে প্রতিযোগিতাই চলল। সেদিনই বিরক্ত হয়ে নিজের কক্ষে চলে গিয়েছিলেন। বিশ্রাম নিয়ে আবার ফিরেছিলেন। গতকালও তাই হয়েছে। ফেডারেশনগুলোর সমস্যার কথা শুনতে শুনতে হাঁপিয়ে ওঠা ক্রীড়া মন্ত্রী খানিকটা দম নিতে নিজের কক্ষে যাচ্ছিলেন। যাওয়ার সময় বলে গেলেন ১০ মিনিট পর আসছি। ফ্রেশ হয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হলেন তিনি।
মন্ত্রীর কাছে ফেডারেশন তাদের চাওয়া পাওয়ার কথা জানিয়েছে। কী আলোচনা হলো? জবাবে ক্রীড়া মন্ত্রী বেশ খোলামেলাভাবে জানালেন তিনি সব ধরনের সহযোগিতা করবেন। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে অর্থ। সবার কাছে অর্থ সংক্রান্ত আলোচনা করে পাপনের কাছে মনে হয়েছে কাজে খুব বড় কিছু না। তাই হয়তো বাজেট নিয়ে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নে পাপন বললেন, ‘টাকা প্রয়োজন। এটা সহজ। অসম্ভব কিছু না। ক্রিকেটের সঙ্গে তুলনা করলে এ বাজেট সামান্য।’
ফেডারেশনের চাওয়া অনুযায়ী যে বাজেট সেটা যোগ করলে পাপনের চোখে আহামরি কিছু না বলে মনে হচ্ছে। পাপন বললেন, ‘ব্যবস্থা করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘প্রয়োজনে বাজেট বাড়ানো হবে। বাজেট বাড়ানোর চেষ্টা করব। সরকারিভাবে পুরোটা করা সম্ভব না হলেও বেসরকারিভাবে চেষ্টা করা হবে।’ একটা কথা খুব কঠোরভাবে উচ্চারণ করেছেন পাপন। ফেডারেশনকে যেসব বাজেট দেওয়া হবে সেগুলোর হিসাব নেওয়া হবে। পাপন বলেন,‘কড়ায়-গন্ডায় হিসাব নেওয়া হবে।’
শুটিং এবং আর্চারি কমপ্লেক্স বানাতে চাই। সেটিও আমলে নিয়েছেন ক্রীড়া মন্ত্রী। এই দুই ফেডারেশন নিজেরা জায়গা ঠিক করে রেখেছে সেটা বিবেচনা করা হচ্ছে। পাপন টাকার হিসাবে টাকা বুঝাননি। টাকার হিসাব হবে পারফরম্যান্স দিয়ে। ফেডারেশন কর্তারা রাষ্ট্রের টাকা ব্যয় করে কী ফলাফর উপহার দিচ্ছে সেটি গুরুত্ব দিয়ে দেখবে।
শুটিং স্পোর্টস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ইন্তেখাবুল হামিদ অপু সভা শেষে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘মন্ত্রী মহোদয় সবার সঙ্গে বসছেন। এটি খুবই ইতিবাচক দিক। বাজেটের বিষয়ে আশা দিয়েছেন পূরণ করবেন।’ শুটিং, আর্চারি, অ্যাথলেটকস, সাঁতার, বাস্কেটবল, ক্যারম, ভারোত্তোলন, মহিলা ক্রীড়া সংস্থা এবং ভলিবল। টেবিল টেনিস মন্ত্রীকে জানিয়ে গেছে তারা আরেক দিন বসতে চায়।
ক্রীড়া মন্ত্রী গতকাল যেসব ফেডারেশনের মধ্যে বসেছেন সেটাই শেষ বসা নয়। প্রয়োজনে কিছু কিছু ফেডারেশনের সঙ্গে দ্বিতীয়বারও বসবেন। ৫৫টি ফেডারেশন এবং অ্যাসোসিয়েশন। পালাক্রমে সবার সঙ্গে বৈঠক করতে চান তিনি। আজ ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে ফুটবল এবং হকির সঙ্গে সবার বসার কথা রয়েছে।