মিয়ানমার সীমান্তে ফের গোলাগুলি, ১০ জনের অনুপ্রবেশ 

Share Now..

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের তুমব্রু পয়েন্টের ওপারে মিয়ানমারে ফের গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এদিকে মিয়ানমারের চলমান সংঘাতকে কেন্দ্র করে নাইক্ষ্যংছড়ির সীমান্ত এলাকায় চোরাচালানের পরিমাণ বেড়েছে ব্যাপক হারে। গত ৩ দিন ধরে সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট ও পিলার এলাকা ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে।

এর আগে গত ২ ফেব্রুয়ারি থেকে টানা ৫ দিন সরকারি বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলির পর ঘুমধুম, তুমব্রু ও ঢেকুবুনিয়া সীমান্তের ওপারে বিজিপির ক্যাম্পগুলো দখলে নিয়েছে আরকান আর্মি। দখল হওয়া ক্যাম্পগুলো উদ্ধারে প্রাণপণ চেষ্টা করেছে মিয়ানমার জান্তা বাহিনী। তবুও পিছু হটেনি আরকান আর্মি। 

আর এসব ঘটনায় রকেট লঞ্চার ও মর্টারশেলের আঘাতে ২ বাংলাদেশি নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। তুমুল লড়াইয়ের পর প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন মিয়ানমার সীমান্তরক্ষীর ৩৩০ জন সদস্য। যাদেরকে গত বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের হাতে হস্তান্তর করা হয়। 

গোলাগুলির ঘটনার ১০ দিন বন্ধ থাকার পর সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টায় তুমব্রু রাইট ক্যাম্প থেকে আবারও ভারী অস্ত্রের গোলার আওয়াজ পেয়েছেন তুমব্রু সীমান্তের বাসিন্দারা। যদিও তা মিনিট দশেক স্থায়ী ছিল। 

তুমব্রু বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, তুমব্রু রাইট ক্যাম্প ও ঢেকুবুনিয়ায় গোলাগুলি হয়েছে। এতে তুমব্রু ও হেডম্যান পাড়ার মানুষ আবারও সেই আগের মতো ভয়ে আতঙ্কিত।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, এ গোলাগুলি প্রায় সময় হয়। সোমবারও তাই হয়েছে। তবে জান্তা বাহিনীর বিমান হামলা করবে এ ধরনের কথা রটে গেছে সর্বত্র। ফলে সাধারণ মানুষ ভয় পাচ্ছে।

এদিকে সংঘাতকে কেন্দ্র করে সীমান্তের অন্তত ২০টি পয়েন্ট দিয়ে চোরাচালান বেড়েছে। সরকারি বাহিনী ও আরাকান আর্মির সংঘর্ষের মধ্যে মিয়ানমারে তীব্র খাদ্য সংকট ও পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় ভোজ্য ও জ্বালানি তেল, চাল-বিস্কুটসহ খাদ্যসামগ্রী পাচার হচ্ছে নিয়মিত।

বিশেষ করে সীমান্তের ৫০ নম্বর পিলার থেকে ৪৬ নম্বর পিলার এলাকায় এখন চোরাকারবারের মহোৎসব চলছে। ভোজ্য ও জ্বালানি তেল পাচার হচ্ছে দিনদুপুরে। 

এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দোছড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইমরান বলেন, পূর্ব সীমান্তে চোরাচালান বেড়েছে ১০ গুণ। বিশেষ করে চাল ভোজ্য ও জ্বালানি তেল যাচ্ছে প্রচুর। আসছে গরু, মহিষ, সিগারেটসহ নানা অবৈধ পণ্য। যা বন্ধ না হলে এ সীমান্তে খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে।

তিনি আরও জানান, মিয়ানমার সংঘাতের কারণে সে দেশের লোকজন বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে। তারই ধারাবাহিকতায় ৩ দিন আগে ৮-১০ জন মিয়ানমার মুরুং নাগরিক তার ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কুরিক্ষ্যং মৌজার মেনরোয়া পাড়ায় আশ্রয় নিয়েছে। 

তবে এসব বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ির ১১ বিজিবির অধিনায়কের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তিনি কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *