অনুপ্রবেশকালে ৯ রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠাল বিজিবি

Share Now..

মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় ৯ রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ জেটিঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে টানা তিনদিন ধরে সীমান্তের ওপারে গোলাগুলি বা কোনো বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে না। এতে এপারের মানুষের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। 

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী চৌকিগুলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীদের দখলে যাওয়ায় জান্তা বাহিনীর সদস্যরা মংডুর দিকে পালিয়েছে। আর বিদ্রোহীরা এদিকে দখলে নিয়ে মংডুর দিকে ছুটছে। এতে সীমান্ত থেকে সংঘর্ষ দূরে সরে গেছে বলেই গোলাগুলির শব্দ কমেছে। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত স্বজনদের বরাত দিয় এমন তথ্যই দিচ্ছেন ক্যাম্পে বসবাসকারী রোহিঙ্গারা। 

তারা বলছেন, এখন মূলত মংডু শহরের আশপাশের এলাকায় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে লড়াই হচ্ছে। এ কারণেই সীমান্ত বরাবর গোলাগুলির তীব্রতা অনেকটাই কমে এসেছে।

তারা আরও বলেন, টেকনাফ সীমান্তের উত্তরাংশে হোয়াইক্যং এবং পূর্ব-দক্ষিণাংশে সাবরাং সীমান্ত। গত কয়েকদিন ধরে মিয়ানমারের ওপার থেকে গুলির শব্দ আসছিল। সে সময় হয়তো মংডুর শহরের পাশের বলিবাজার, মেগিচং, কাদিরবিল, নুরুল্লাহপাড়া, মাংগালা, নলবন্ন্যা, ফাদংচা ও হাসুরাতা এলাকা দখলে নিতে বিদ্রোহীরা সে দেশের আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর উপর হামলা চালায়।

টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবদুস সালাম বলেন, ‌‘গত কয়েকদিন আগে মিয়ানমারের ওপারে ব্যাপক গোলাগুলি ও মর্টার শেলের বিকট শব্দে কেঁপে উঠেছিল টেকনাফের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা। কিন্তু গত দুদিন ওপার থেকে কোনো গুলির শব্দ আমরা পাইনি। ফলে অনেকটা শান্তিতে ঘুমাতে পেরেছে স্থানীয়রা।’

শাহপরীর দ্বীপের জালিয়াপাড়ার বাসিন্দা আহমেদ নুর বলেন, ‘গত সোমবার সন্ধ্যা থেকে গতকাল বুধবার পর্যন্ত গোলাগুলি কিংবা ভারী অস্ত্রের বিস্ফোরণের আওয়াজ শোনা যায়নি। তারপরও ভয়েরে মধ্যে থাকি—কখন আবার গোলাগুলি শুরু হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘মিয়ানমারে সংঘাতময় পরিস্থিতির কারণে আমাদের জীবন-জীবিকা নিয়েও সংকটে পড়তে হয়েছে। নাফ নদীতে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে জেলেদের।’

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আদনান চৌধুরী বলেন, ‘সীমান্ত এখন অনেকটা শান্ত। সাধারণ মানুষের মাঝে আতংক কেটেছে। তারপরও অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তে বিজিবি, কোস্ট গার্ড ও পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে।’ 

টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সীমান্ত এলাকায় জান্তা ও বিদ্রোহীদের মধ্যে সংঘাত কমে আসায় গোলাগুলির শব্দও কমেছে। এতে টেকনাফ উপজেলার দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তের লোকজন স্বস্তিতে রয়েছেন। এরই মধ্যে আজ (বৃহস্পতিবার) নৌকায় করে ৯ জন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে তাদের ফেরত পাঠানো হয়েছে। আর একজনও রোহিঙ্গাকে এ দেশে ঢুকতে দেওয়া হবে না।’ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *