বসন্তে ঘরের টুকটাক অদলবদল

Share Now..

শীতের পর বসন্ত আসে তবে বসন্তের পর পরই চলে আসে গ্রীষ্মকাল। শীতের পর হঠাৎ ঋতুর মধ্যে যে আমূল পরিবর্তন আসে সেই পরিবর্তনের সাথে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি নিজের পারিপার্শ্বিক পরিবেশেরও পরিবর্তন প্রয়োজন। শীতে মানুষের জীবনযাত্রা আর গরমে মানুষের জীবনযাত্রা কখনোই এক হবে না। শীত ও গ্রীষ্ম বিপরীতধর্মী দুটি ঋতু।  

সেই ঋতুতে প্রতিটা মানুষেরই জীবনযাত্রার মধ্যে  বিপরীত ধর্মী পরিবর্তন আসে। এবছর ঋতু পরিবর্তনের ধরণটাও একটু ভিন্ন। এ বছর ঋতু পরিবর্তনের পাশাপাশি শুরু হতে যাচ্ছে রমজান মাস। পরিবেশেরই পরিবর্তন এবং রমজান মাসকে ঘিরেই ঘরকে অল্পস্বল্প পরিবর্তনের পাশাপাশি নতুনভাবে সাজানো যাক: 

প্রথম প্রস্তুতি
প্রথম প্রস্তুতি হিসেবে শীতকালে ব্যবহৃত হওয়া সকল প্রকার কাঁথা – কম্বল গুলো ভালোমতো ধুয়ে এবং সেগুলোকে ভালোমতো ব্যাগে ভরে ন্যাপথালিন ছড়িয়ে নির্দিষ্ট জায়গায় সংরক্ষণ করে রাখতে হবে। ঘরের জানালা দরজায় ব্যবহৃত হওয়া সকল ভারি পর্দা গুলো খুলে ফেলতে হবে। দেয়াল থেকে অতিরিক্ত শতরঞ্জি খুলে ফেলতে হবে। বিছানায় থেকে অতিরিক্ত বালিশ এবং ভারী চাদর উঠিয়ে পাতলা এবং হালকা রঙের চাদর ব্যবহার করতে হবে। 

আলো বাতাস
ঘরে পর্যাপ্ত আলো বাতাস প্রবেশ করে সেরকম ধরনের পর্দা জানালায় লাগাতে হবে। এই সময় ঘরে একটু হালকা রঙকে প্রাধান্য দিতে হবে। হালকা রঙের সুতি বা নেটের পর্দার নিচে ভারী পর্দা রাখুন। দুপুরবেলা রোদ ও তাপ বাড়তে শুরু করলে দুটো পর্দাই একসঙ্গে টেনে দিন। এতে ঘরে কিছুটা কম আলো প্রবেশ করলেও ঘর ঠাণ্ডা থাকবে। প্রতিটা ঘরের  পর্দার ব্যবহারে ক্ষেত্রে এই বিষয় গুলো খেয়াল রাখুন।

বসার ঘর
বসার ঘর মানুষের মানসিক রুচির পরিচয় দেয়।  সবারই উচিত বসার ঘরকে যতটা সম্ভব মনোরম করে সাজানো। বসার ঘরের পর্দায় সাদা, আকাশী, গোলাপি, কুসুম হলুদ এই রঙ গুলোকে প্রাধান্য দিন। দেয়ালে দড়ির তৈরি রাগ এবং দড়ি তৈরি আয়না লাগাতে পারেন। বর্তমান সময়ে এই দুটো বিষয়ে খুবই জনপ্রিয়। ঘরের যে কোন একটি কর্নার দেশীয় শিল্প দিয়ে সাজাতে পারেন। যেমন- রিক্সা, বেবি ট্যাক্সি, মাটির পুতুল প্রভৃতি জিনিসপত্র। সোফায় হালকা রঙের নানান রকমের কুশন রাখুন। টি -টেবিলে কিছু কাঁচা ফুল রাখতে পারেন। এতে করে ঘরে সুন্দর শোভা ছড়াবে। 

শোবার ঘর
সারাদিনের কর্মব্যস্ততা নানান অবসাদ সবকিছু ভুলে বিশ্রামের এবং আরাম করার জন্য একান্ত আপন জায়গায় শোবার ঘর। তাই শোবার ঘর পরিপাটি থাকা আবশ্যক। সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। শোবার  ঘরে যত কম আসবাব থাকবে ঘর তত হালকা মনে হবে এবং ঘরে থাকতে ঠিক ততটাই স্বাচ্ছন্দ্য লাগবে। শোবার ঘরে যে কোন একটি কর্নারে সুন্দর একটি ল্যাম্পশেড রাখতে পারেন কিংবা ছোটখাটো ঝাড়বাতি রাখতে পারেন। চাইলে ঘরে আসবাবপত্রের স্থানগুলো একটু অদলবদল করা যায়। এতে করে ঘরকে একটু নতুন মনে হবে এবং ঘরের স্থান পরিবর্তন করলে ঘরের আকার ও মাঝেমধ্যে ছোট বড় মনে হয়।

ডাইনিং রুম
ডাইনিং রুম প্রতিটা পরিবারেরই অত্যন্ত  গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। তিন বেলা না হলেও,  একবেলার খাবারটি পরিবারের সকলে একত্রে মিলে উপভোগ করে ডাইনিং রুমে। ডাইনিং রুমের সাজসজ্জার দিকে একটু মনোযোগ দেওয়াটা জরুরী। তাই ডাইনিং রুমের ডাইনিং টেবিলটির অবশ্যই রানার দিয়ে সাজাতে হবে।  টেবিলের মাঝখানে ফলের ঝুড়ি,  ছোট ফুলদানি এবং কাটলারি সেট রাখতে পারেন।  ডাইনিং রুমের দেয়ালে কিছু ফুল ও ফলের ফটো ফ্রেম লাগাতে পারেন। ডাইনিং রুমের প্রতিটা জিনিসই একটু উজ্জ্বল এবং গাঢ় রঙের ব্যবহার করুন। ডাইনিং রুমের যেকোনো একটি স্থানে একটি টি কর্নার তৈরি করতে পারেন। 

রান্নাঘর
প্রতিদিন নারীদের সময় কাটানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানের নামই হলো রান্নাঘর। সেই রান্নাঘরকে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখাটাও অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ।  রান্নাঘরের সৌন্দর্যের পাশাপাশি সবচেয়ে যে বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে সেটি হচ্ছে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা এবং পোকামাকড় থেকে রান্নাঘরকে জীবাণুমুক্ত রাখা। রান্নাঘরের যত তৈজসপত্র রয়েছে সেগুলো নির্দিষ্ট স্থানে কিংবা নির্দিষ্ট কেবিনেটে গুছিয়ে রাখতে হবে।  ছড়ানো ছিটানো রান্নাঘরের রান্না করতে কখনোই আরাম বা শান্তি লাগবে না। 

নিজের ঘরকে যথাসম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন যতটা সম্ভব গুছিয়ে রাখুন এবং সুন্দর করে অন্যকে সাজিয়ে রাখুন কারণ অন্দর একটি শান্তির জায়গা।

ছবি সৌজন্য: রিনিশ ডিআইওয়াই নেস্ট বাই ফাহমিদা নিশি  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *