ডয়চে ভেলের বাকস্বাধীনতা অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছেন নাভালনির স্ত্রী
রাশিয়ার সাবেক বিরোধী নেতা আলেক্সি নাভালনির স্ত্রী ইউলিয়া নাভালনায়াকে ২০২৪ সালের বাকস্বাধীনতা অ্যাওয়ার্ড দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ডয়চে ভেলে (ডিডাব্লিউ)। শুক্রবার এই ঘোষণা দেওয়া হয়। ৫ জুন বার্লিনে তার হাতে এই অ্যাওয়ার্ড তুলে দেওয়া হবে।
জার্মানির অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়ান লিন্ডনার সেই দিন প্রশংসাসূচক বক্তব্য রাখবেন।
ডিডাব্লিউর মহাপরিচালক পেটার লিমবুর্গ বলেন, ‘সব ঝুঁকি, ক্রমাগত হুমকি ও ব্যক্তিগত বিধিনিষেধ সত্ত্বেও ইউলিয়া নাভালনায়া একেবারে শুরু থেকেই রাশিয়ায় সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার লড়াইয়ে তার স্বামী আলেক্সি নাভালনির রাজনৈতিক কাজকে সমর্থন করেছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি তার অটল সাহস, দৃঢ় প্রত্যয় ও যে শক্তি নিয়ে তিনি একটি মুক্ত রাশিয়ার জন্য লড়াই করছেন এবং (রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি) ভ্লাদিমির পুতিন যাদের দমন করতে চান তাদের পক্ষে দাঁড়াচ্ছেন তার কাছে মাথানত করছি।’
গতমাসে নাভালনায়াকে জার্মান ফ্রিডম প্রাইজ অব দ্য মিডিয়াও দেওয়া হয়েছিল।
ফেব্রুয়ারিতে নাভালনির মৃত্যুর পর নাভালনায়া সবচেয়ে শক্তিশালী পুতিনবিরোধী কণ্ঠ হয়ে উঠেছেন।
নাভালনায়ার স্বামী নাভালনি ২০১১ সালে দুর্নীতিবিরোধী ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সন্দেহজনক দুর্নীতির তদন্ত ও রুশ এলিটদের কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে এটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন নাভালনি। তার ইউটিউব চ্যানেলে তদন্তের ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এই সংগঠন রাশিয়ার তথাকথিত ‘ঘুষদাতা ও যুদ্ধবাজ’, পুতিনের আস্থাভাজন ও মিত্রদের একটি তালিকা তৈরি করেছে, যারা রুশ প্রেসিডেন্টের পক্ষে রাজনীতি, ব্যবসা ও ব্যাংক খাতকে দুর্নীতিগ্রস্তভাবে প্রভাবিত করে বলে প্রমাণিত হয়েছে।
২০২১ সালে নাভালনির সংগঠনকে নিষিদ্ধ করেছিল রাশিয়া। এর এক বছর পর আন্তর্জাতিকভাবে ফিরে এসেছে এটি। রাশিয়া এই সংগঠনকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে বিবেচনা করে।
নাভালনায়াকে এমন সময় অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হচ্ছে যখন রাশিয়ায় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার হয়েছে।
কয়েকদিন আগে সাংবাদিক কনস্টানটিন গাবভ ও ক্যামেরাম্যান সের্গেই কারেলিনকে আটক করে পুলিশ। কনস্টানটিন গাবভ একসময় ডিডাব্লিউর হয়ে কাজ করেছেন।
কর্তৃপক্ষের দাবি, সন্ত্রাসবাদবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে তাদের ধরা হয়েছে। তারা নাভালনির দুর্নীতিবিরোধী ফাউন্ডেশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ইউটিউব চ্যানেলের জন্য কন্টেন্ট তৈরি করছিলেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
বাক ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় অবদান রাখা ব্যক্তিদের সম্মানিত করতে ২০১৫ সাল থেকে প্রতিবছর বাকস্বাধীনতা অ্যাওয়ার্ড দিয়ে আসছে ডিডাব্লিউ। সৌদি ব্লগার রাইফ বাদাউয়িকে প্রথম এই অ্যাওয়ার্ড দিয়েছিল ডিডাব্লিউ।