জেলার চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত থাকছে ৭৪ হাজার / ঝিনাইদহে কোরবানির জন্য প্রস্তুত দুই লাখের বেশি গবাদি পশু
\ আসিফ কাজল, ঝিনাইদহ থেকে \
ঝিনাইদহে কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে দুই লাখ ১৮ হাজার গবাদিপশু। এবারের কোরবানিতে জেলায় কোন পশু সংকট নেই, বরং চাহিদার থেকে ৭৪ হাজার ৬৯১টি পশু উদ্বৃত্ত রয়েছে। খামারীরা দামও ভাল পাচ্ছেন। আবার ক্রেতাদের কাছেও দাম রয়েছে নাগালের মধ্যে। ফলে এ বছর কোরবানির বাজার বেশ জমে উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) দুপুরে ঝিনাইদহ শহরের গরুর হাট ঘুরে দেখা গেছে ছোট বা মাঝারি সাইজের গরুর চাহিদা সবচে বেশি। মানুষ ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকার মধ্যে গরু কিনতে স্বাচ্ছন্দবোধ করছেন। কুমড়াবাড়িয়া গ্রামের আব্দুর রহমান নামে এক গরু বিক্রেতা জানান, বড় সাইজের গরু সব ঢাকায় চলে গেছে। আর ঝিনাইদহের বিভিন্ন হাটে বাজারে এখন যা বিক্রি হচ্ছে সবই ছোট ও মাঝারি সাইজের গরু। ঝিনাইদহ জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তার দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর ঝিনাইদহ জেলার ৬ উপজেলায় দুই লাখ ১৮ হাজার ৪৩১টি পশু কোরবানির জন্য তৈরী করা হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে ৭৭ হাজার ৯০৭টি ষাড়, ১৫ হাজার ৩০৬টি বলদ, ৮ হাজার ৬৩৫টি গাভী, ৩ হাজার ১১৩টি মহিষ, এক লাখ ৩ হাজার ৩৪টি ছাগল ও ১০ হাজার ৪৩৬টি ভেড়া রয়েছে। প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তার দপ্তরের দেয়া তথ্যমতে কোরবানির পরও সারা জেলায় ৭৪ হাজারের বেশি পশু উদ্বৃত্ত থাকবে। জেলার ২৩ হাজার ১২৬ জন খামারী কোরবানির এই পশু প্রতিপালনে ভূমিকা পালন করেন। জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ সুব্রত কুমার ব্যানার্জী জানান, নিরাপদ গবাদি পশুর মাংস উৎপাদনে বরাবরই ঝিনাইদহ এগিয়ে আছে। এই জেলার ২৩ হাজারেরও বেশি খামারীকে প্রতিনিয়ত পরামর্শ ও চিকিৎসা সহায়তা দিয়ে আসা হচ্ছে। ফলে তারা এ বছর চাহিদার থেকেও ৭৪ হাজার বেশি পশু পালন করেছে। তিনি আরো জানান, ঝিনাইদহে জেলায় কোরবানি পশুর চাহিদা রয়েছে এক লাখ ৪৩ হাজার ৭৪০টি। কিন্তু জেলা কামারীরা দুই লাখ ১৮ হাজার ৪৩১টি পশু প্রস্তুত করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, খামারীরা তাদের খামারে প্রতিপালিত প্রায় ৯০ ভাগ পশু ইতিমধ্যে ঢাকার বাজার ধরার জন্য নিয়ে গেছে। শুনছি তারা দামও ভালো পাচ্ছেন। ঝিনাইদহ শহরের নতুন কোটপাড়ার মহিউদ্দীন নামে এক খামারি জানান, সাধারণত ঝিনাইদহে অন্য জেলা থেকে কোরবানির গরু ছাগল আসে না। এ জন্য তারা নিজেরাই খামারে গরু ও ছাগল প্রস্তুত করেন। তিনি এবার তিনটি বড় গরু ও দুইটি ছাগল পালন করেছেন বলেও জানান। হরিণাকুন্ডুর হাফিজুর রহমান জানান, করোনা কারণে অনেক মানুষ মানুষের ব্যবসা ও চাকরি হারিয়ে পশু পালন শুরু করে বেশ সফলতা পেয়েছেন। তিনিও চারটি পশু কোরবানির বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে গেছেন। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গান্না এলাকার কেপি হাসান জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার ঝিনাইদহ পশুর হাটে ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকার মধ্যে যে সব গরু ছিল সবই বিক্রি হয়ে গেছে। মানুষ এই দামে কোরবানির গরু কেনার সাধ্য দেখছেন।